ঐতিহাসিক অ্যাশেজ সিরিজ দিয়ে ক্রিকেট বিশ্বে বড় দ্বৈরথ তৈরি হয়েছে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের। তাদের মুখোমুখি লড়াই–ও অনেকটা চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের মতো রোমাঞ্চ ছড়ায়। ভারতের মাটিতে হওয়া সর্বশেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপে যখন বিদায়ের অপেক্ষায় ইংলিশরা, তখন অজি অধিনায়ক প্যাট কামিন্স সংবাদ সম্মেলনে ওঠা প্রশ্নের জবাবে রহস্যের হাসি হেসে তাদের অবস্থান জানান দিয়েছিলেন। ঠিক একই পরিস্থিতি দেখা গেল চলমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও।

ফরম্যাট ভিন্ন হওয়ায় সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের বিশ্বকাপ নিয়ে বাড়তি ‍উন্মাদনা ছিল ইংলিশদের। এমনিতেই তারা ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন, তার ওপর দলে থাকা ক্রিকেটাররাও ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে বেশ ফর্ম দেখিয়েছেন। তবে বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়া ম্যাচে স্কটল্যান্ডের কাছে পয়েন্ট হারানোর পর অস্ট্রেলিয়ার কাছে দ্বিতীয় ম্যাচে হেরে তারা এখন বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যাওয়ার শঙ্কায়। অজি পেসার জশ হ্যাজলউডের সামনে সেই প্রসঙ্গ তোলার পর তিনি বেশ মজাই পেলেন। জবাবে বললেন, ‘বিশ্বকাপ থেকে ইংল্যান্ডকে ছিটকে দেওয়ায় আমাদের বড় আগ্রহ।’

ইংল্যান্ড বিশ্বকাপের সুপার এইটে যাবে কিনা সেটি নির্ভর করছে পরবর্তী দুই ম্যাচে নিজেদের জয়ের পাশাপাশি অন্য দলগুলোর ওপরও। তিন ম্যাচ শেষে স্কটল্যান্ডের পয়েন্ট ৩, এক ম্যাচ কম খেলা ইংল্যান্ডের ১। বাকি দুই ম্যাচ জিতলেও ইংলিশদের পয়েন্ট হবে পাঁচ, অর্থাৎ জস বাটলারদের পয়েন্টও হবে স্কটিশদের সমান। তখন দেখা হবে নেট রানরেটের হিসাব। তবে অবিশ্বাস্যভাবে যদি স্কটল্যান্ড বাকি ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে হারাতে পারে, তাহলে ইংলিশদের সামনে আর কোনো সমীকরণ থাকবে না। আবার স্কটিশরা না জিতলেও, অল্প ব্যবধানে হার তাদের রানরেট ভালো রাখতে পারে। আর সে কারণে ব্যবধানটা কম রাখারই ইঙ্গিত দিয়েছেন হ্যাজলউড।

অজি গতিতারকা বলেন, ‘এই টুর্নামেন্টে খেলতে আসা ফেবারিট দলগুলোর মধ্যে একটি ইংল্যান্ড, যাদের বিপক্ষে আমরা টি-টোয়েন্টিতে অনেক সংগ্রাম করেছি। যদিও হয়তো এবার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেই বাধা অতিক্রম করেছি আমরা। এই মুহূর্তে আমাদের সবচেয়ে বড় আগ্রহ তাদেরকে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় করার দিকে, যেমন আগ্রহ অন্য সবারও থাকার কথা। এমনটা (ইংলিশদের বিদায়) দেখা সবচেয়ে মজার হবে। তবে আমরা দল হিসেবে কখনও এমন অবস্থানে ছিলাম না, এ নিয়ে আমাদের মাঝে আলোচনা হোক বা না হোক; মানুষ এভাবেই পরিস্থিতিটা তৈরি করেছে।’

এর আগে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল ১৯৯৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপে। সে সময় ওয়েস্ট ইন্ডিজকে কিছু বাড়তি পয়েন্ট (রানরেট) দেওয়ার লক্ষ্যে অস্ট্রেলিয়া ধীরগতির ব্যাটিং করেছিল। যাতে করে ক্যারিবীয়রাই সুপার সিক্স রাউন্ড খেলতে পারে। এবারও তেমন কিছু করারই ইঙ্গিত দিলেন হ্যাজলউড, ‘যখন আপনি লক্ষ্যের (জয়) কাছাকাছি যাবেন এবং আপনি এর কাছাকাছি থেকে খেলাটা চালিয়ে যাবেন। এখানে কিছু পথ খোলা আছে, বড় ব্যবধানে জিতে আত্মবিশ্বাস অর্জন করা, আমার মতে কাউকে ছিটকে দেওয়ার চেয়ে এটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আবার তাদের (ইংল্যান্ড) সামনেও সুযোগ রয়েছে, সেজন্য আমি মনে করি ম্যাচটি ক্লোজ (কম ব্যবধান) রেখেও শেষ করা যায়।’

উল্লেখ্য, ইতোমধ্যে তিন ম্যাচের সবকটিতে জিতে সুপার এইট নিশ্চিত করে ফেলেছে অস্ট্রেলিয়া। সর্বশেষ ম্যাচে তারা স্কটিশদের মুখোমুখি হবে ১৬ জুন। অন্যদিকে, ইংল্যান্ড বড় জয়ের লক্ষ্যে বাকি দুই ম্যাচে ১৪ জুন ওমান ও ১৫ জুন নামিবিয়ার মুখোমুখি হবে।

এএইচএস