বিশ্বকাপে সবচেয়ে দুর্দান্ত পেস বোলিং লাইনআপ নিয়ে হাজির হয়েছে পাকিস্তান। সেই লাইনআপ যেন জ্বলে উঠল ভারতের মতো প্রতিপক্ষ পেয়ে। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের পেয়ে নিজেদের ক্ষুরধার ফর্মের সবটা উজাড় করলেন পাকিস্তানের বোলারদের সবাই। অভিজ্ঞ মোহাম্মদ আমির থেকে তরুণ নাসিম শাহ, প্রত্যেকেই উপহার দিয়েছেন গতি আর সুইংয়ের বৈচিত্র্য। 

শুধু পেসাররাই না। বল হাতে ভারতের ওপর চাপ বাড়িয়েছেন স্পিনার ইমাদ ওয়াসিমও। বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা থেকে শুরু করে সুর্যকুমার যাদব কিংবা শিভাম দুবে, মোটাদাগে ব্যর্থ সবাই। খেললেন কেবল ঋষভ পান্ত। তার ৪২ রানটাই ভারতের ব্যাটিং বিপর্যয়ের মাঝে বড় প্রাপ্তি। শেষদিকে আর্শদ্বীপ সিং রান করায় ভারতের রান গিয়েছে ১১৯ পর্যন্ত। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এটি তাদের চতুর্থ সর্বনিম্ন স্কোর। আর অলআউট হওয়া ইনিংসে এটি দ্বিতীয়। প্রথম ব্যাট করে বিশ্বকাপে এত কম রানে কখনোই অলআউট হয়নি তারা। 

নাসাউ কাউন্টিতে ভারত অবশ্য আরও বড় কিছু আশা করেছিল নিশ্চিতভাবেই। ১১ ওভারেও তাদের রান ছিল ৮৯। সেখান থেকে ১৬০ বা এর বেশি স্কোরও আশা করেছিল টিম ইন্ডিয়া। সেখান থেকেই লাগাম টেনে ধরল পাকিস্তানের বোলাররা। নাসিম শাহ আর হারিস রউফের তিন উইকেটের পাশাপাশি, মোহাম্মদ আমিরের জোড়া শিকার পাকিস্তানকে ফেরায় ম্যাচে। 

ঋষভ পান্তই ছিলেন বিপজ্জনক। ৩১ বলে ৪২ রান করে ভারতকে রানে রেখেছিলেন তিনিই। ১৫তম ওভারে পরপর দুই বলে পান্ত এবং রবীন্দ্র জাদেজাকে ফেরান আমির। ম্যাচের গতিপথ বদলে যায় সেখানেই। ভারতকে শেষ পর্যন্ত ১১৯ রানে আটকে রাখায় সাহায্য করেছেন হারিস রউফ। হার্দিক পান্ডিয়া এবং জাসপ্রিত বুমরাহকে জোড়া আঘাতে ফিরিয়ে ভারতের লেজ গুটিয়ে দেন তিনি। 

দিনটা পাকিস্তানের হতে পারে সেটা বোঝা গিয়েছিল শুরুতেই। প্রথম ওভারে শাহিন আফ্রিদির ওভারে ৮ রান তোলেন রোহিত শর্মা। এরপরেই নামে বৃষ্টি। খানিক বন্ধের পর শুরু হয় ম্যাচ। শুরুতেই কোহলির উইকেট তুলে নেন নাসিম। বাইরের দিকে বেরিয়ে যাওয়া বলটা কোহলি চেয়েছিলেন পয়েন্টে খেলতে। কিন্তু উসমান খানের হাতে জমা পড়ে ক্যাচ। পরের ওভারেই শাহিনকে আরেকবার উড়িয়ে মারতে গিয়ে ক্যাচ দেন রোহিত শর্মা। 

ভারত এরপর বৈচিত্র্য এনে অক্ষর প্যাটেলকে ওপরে পাঠায়। তিনে থাকা ঋষভ পান্তের সঙ্গে জুটি জমেছিল বেশ। সেখানে ৩০ বলে ৩৯ রানের একটা জুটি পেয়েছিল তারা। অক্ষর প্যাটেল সময়োপযোগী ২০ রান করেছিলেন। তবে তাকে ইনিংস বড় করতে দেননি নাসিম। দুর্দান্ত এক গুডলেন্থের বলে তাকে প্যাভিলিয়নে ফেরান নাসিম। সূর্যকুমার যাদব এসেও ভরসা দিতে পারেননি। টি-টোয়েন্টির নাম্বার ওয়ান ব্যাটার হতাশ করেছেন আবার। 

পান্তের সঙ্গে ৩১ রানের জুটিতে তার অবদান মোটে ৭ রান। হারিস রউফের দিনের প্রথম শিকার এই ব্যাটার। তার সেই উইকেটের পরেই মূলত ধস নামে ভারতের ইনিংসে। মাঝের ওভারে ৪ ওভারে ১৬ রান তুলতেই ৪ উইকেট হারায় ভারত। যার মাঝে ছিল আমিরের পান্ত এবং জাদেজার জোড়া শিকার। এর আগে শিভাম দুবেকে কট এন্ড বোল্ড করেন নাসিম। 

শেষদিকে হারিসের জোড়া উইকেটের সঙ্গে এক রানআউট। ভারতের লজ্জার প্রহর শেষ হয় সেখানেই। 

জেএ