রিশাদ হোসেন, বাংলাদেশের অনেক আক্ষেপ শেষে অপেক্ষার ফসল। বাড়িয়ে বলা হয়ে যেতে পারে হয়তো। কিন্তু এমন একজন লেগস্পিনারের জন্য কোচ, বোর্ড থেকে ভক্ত কে না অধীর অপেক্ষায় থাকেননি। আমেরিকার ডালাসে যখন বল হাতে পারফর্ম করছেন রিশাদ, তখন কমেন্ট্রি বক্সে আতহার আলি খানের সে কি উচ্ছ্বাস। ঘরোয়াতে সেভাবে সুযোগ না পাওয়া সত্ত্বেও জাতীয় দলে তার ওপর আস্থার প্রতিদান দিলেন বিশ্বকাপের অভিষেক ম্যাচেই।

ব্যাট হাতে আগেই নিজের সামর্থ্য দেখিয়ে আসছিলেন রিশাদ, পাশাপাশি লেগস্পিনে প্রয়োজনীয় ব্রেকথ্রুও দিয়েছেন সাম্প্রতিক সিরিজগুলোয়। এবার বিশ্বাসের মর্যাদাও রাখলেন বিশ্বকাপেও। আতহারের সঙ্গে থাকা পাকিস্তানি ধারাভাষ্যকার রমিজ রাজা–ও তার বোলিং দেখে বলে ওঠেন ‘ভেরি স্পেশাল’। 

চলমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হয়েছিল টাইগাররা। প্রথমে ব্যাট করে লঙ্কানরা সংগ্রহ করে ১২৪ রান। যা বাংলাদেশ এক ওভার ও দুই উইকেট হাতে রেখে পেরিয়ে গেছে। এর আগে ব্যাটিংয়ের শুরুটা ভালো করলেও শেষে এসে টাইগার বোলারদের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি লঙ্কানরা। তাতে বড় অবদান ছিল রিশাদের, তার সঙ্গে মিলিয়ে সমান তিনটি উইকেট নেন মুস্তাফিজুর রহমান।

রিশাদ-মুস্তাফিজ মিলেই ধসিয়ে দিয়েছেন লঙ্কানদের ব্যাটিং লাইনআপ

বাঁ–হাতি কাটার মাস্টার বাংলাদেশের বোলিংয়ের মূল ভরসা। তাই নতুন করে তাকে নিয়ে অবাক হওয়ার খুব বেশি কিছু নেই। ৪ ওভারে ৩ উইকেট নিতে মাত্র ১৭ রান দিয়েছেন মুস্তাফিজ। সমান ৪ ওভারে মাত্র ২২ রান খরচায় রিশাদ ৩ উইকেট নেন। মিডল ওভারে লঙ্কানদের রান নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি ক্রমাগত উইকেট নিয়ে তিনি মূলত তাদের মেরুদণ্ড ভেঙে দেন। যার সাফল্য পেয়েছে দল, জয়ের পর তিনিও পেয়েছেন ম্যাচসেরার পুরস্কার। নিজের অনুভূতি জানিয়ে রিশাদ বলেন, ‘আজকের পিচ ভালো, সেটিকে আমি কাজে লাগানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। (হ্যাটট্রিকের সুযোগ) কাজে লাগানোরও আমার স্বাভাবিক প্রচেষ্টা ছিল।’

শ্রীলঙ্কার ইনিংসে ১০০ রানে ৩ উইকেট পড়েছিল, এরপর ১৫তম ওভারে পরপর দুই বলে দুই উইকেট তুলে নেন রিশাদ। সেখানেই বদলে যায় বাংলাদেশের ভাগ্য, পরে সময় যত গড়িয়েছে ততই ভাগ্য ফিরেছে টাইগারদের দিকে। পরে আরও একটি উইকেট তুলে নেন রিশাদ। সাকিব ও মেহেদীর পর তৃতীয় বাংলাদেশি স্পিনার হিসেবে বিশ্বকাপে এক ইনিংসে ৩ উইকেট নিলেন রিশাদ।

এসএইচ/এএইচএস