টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নবম আসর শুরু হচ্ছে আগামীকাল রোববার (২ জুন) থেকে। আইসিসির এই মেগা আসরটিতে অন্যতম ফেবারিট হিসেবেই মাঠে নামবে অস্ট্রেলিয়া। যা সম্ভবত নিজের শেষ আসর হতে চলেছে দলটির তারকা ওপেনার ডেভিড ‍ওয়ার্নারের। চলতি বছরের শুরুতে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ এবং শেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপ দিয়ে ফরম্যাট দুটি থেকে বিদায় নিয়েছিলেন এই বাঁ–হাতি ব্যাটার। এবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দিয়ে পুরো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকেই বিদায়ের ইঙ্গিত দিয়েছেন।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে শুরু হতে যাওয়া সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের এই সর্বোচ্চ আসর হতে চলেছে অজিদের জন্য ইতিহাস গড়ার মঞ্চ। এক বছরে তারা টেস্ট ও ওয়ানডের সর্বোচ্চ শিরোপা জিতেছে। প্যাট কামিন্স, মিচেল মার্শ ও ট্রাভিস হেডের সঙ্গে ৩৭ বছর বয়সী ওয়ার্নারও সেসব কীর্তিতে সঙ্গী ছিলেন। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দিয়ে চার তারকার সামনে লাগাতার আইসিসির সব ফরম্যাটে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মাধ্যমে প্রথম কোনো কীর্তি গড়ার সুযোগ হাতছানি দিচ্ছে।

নিজের শেষ আন্তর্জাতিক ‍টুর্নামেন্টটি নিশ্চয়ই স্মরণীয় কীর্তিতে রাঙাতে চান ওয়ার্নার। ইতোমধ্যে বিশ্বকাপে সাহসী ক্রিকেট খেলার ইঙ্গিতও দিয়ে রেখেছেন তিনি। স্বদেশি সংবাদমাধ্যম সিডনি মর্নিং হেরাল্ডকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ওয়ার্নার বলেন, ‘আমরা সবসময় ভয়হীন–সাহসী ক্রিকেট খেলেছি, আমার মনে হয় সে কারণে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আমরা বেশ সাফল্য পেয়েছি। দলে আমাদের জায়গা নিয়ে আমরা অতটা ভাবি না, শুধু কীভাবে নিজেদের সেরাটা দেওয়া যায় সেই চিন্তা থাকে। আমরা এমন পারফরম্যান্সই করতে চাই, যা দলকে ম্যাচ জেতাতে ভূমিকা রাখবে।’

জানুয়ারিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিডনি টেস্ট দিয়ে দুই ফরম্যাট থেকে বিদায় হয়ে গেছে ওয়ার্নারের। এখন বাকি কেবল টি-টোয়েন্টি, আগামী বছর আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি হবে পাকিস্তানের মাটিতে। যদিও টুর্নামেন্টটি ওয়ানডে নাকি টি-টোয়েন্টি কোন ফর‌ম্যাটে হবে, সেটি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তবে সেখানে ওয়ার্নারকে দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা কম। তিনি নিজেই জানালেন এভাবে, ‘সেখানে (চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি) আমাকে তাদের প্রয়োজন নেই (হাসি)।’

অজি ওপেনার আরও বলেন, ‘সৌভাগ্যবশত, আমাদের দলে অনেক ভালো খেলোয়াড় রয়েছে। একদিন হয়তো অন্য কেউ এগিয়ে এসে পারফর্ম করবে, পরদিন আবার পারফর্ম করবে নতুন কেউ। তাই আমরা শুধু জানি যে টপ অর্ডারের ছয়ে থাকা একজন ব্যাটার যদি ভালো স্ট্রাইকরেটে ৬০ থেকে ৮০ রান করতে পারে, আমরা জানি আমরা সবসময় ভালো স্কোর গড়ব। একইভাবে নতুন বলের ক্ষেত্রেও একই বিষয়, যদি স্টার্কি (মিচেল স্টার্ক) বল সুইং করাতে পারে, আমরা দ্রুত উইকেট পাব এবং তারপর ম্যাচটি স্পিনার ও বাকিরা টেনে নিয়ে যাবে।’

সর্বশেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপে ফাইনালের আগপর্যন্ত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মতো বিবেচনায় সেভাবে ছিল না অস্ট্রেলিয়া। সেমিফাইনালে উড়ন্ত দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারানোয় অজিরা মোমেন্টাম পায় বলে ধারণা ওয়ার্নারের। তবে কোনো অবস্থাতেই অস্ট্রেলিয়াকে হিসাবের বাইরে রাখা উচিৎ নয় বলেও তিনি স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, ‘যদি আপনি আমাদের পারফরম্যান্স দেখেন, প্রথম ম্যাচগুলোতে (ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা) খুব বাজেভাবে হেরেছি। তবুও আমাদের কখনোই গণনার বাইরে রাখতে পারবেন না।’

উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাট হাতে বাজে সময় কাটিয়েছেন ওয়ার্নার। তবে আইপিএলের সেই ফর্ম দূরে রেখেই তিনি বিশ্বকাপে নতুন উদ্যমে নামতে চান। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এখন পর্যন্ত ১০৩টি ম্যাচে ৩৩.৬৮ গড় এবং ১৪২.৬৮ স্ট্রাইকরেটে ৩০৯৯ রান করেছেন ওয়ার্নার। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়া ‘বি’ গ্রুপে সঙ্গী হিসেবে পেয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড, নামিবিয়া, স্কটল্যান্ড ও ওমানকে। প্রথম ম্যাচে মিশেল মার্শের দল ৬ জুন ওমানের বিপক্ষে খেলবে।

এএইচএস