অনেক নাটকীয়তার পর সবার শেষে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য গতকাল রাতে দল ঘোষণা করেছে পাকিস্তান। পিসিবি আর নাটকীয়তা যেন নিত্য সঙ্গী। এবার নতুন করে আরেকটি নাটকের মঞ্চায়ন হতে যাচ্ছে। শাহিন শাহ আফ্রিদিকে সরিয়ে কিছুদিন আগে পাকিস্তানের অধিনায়ক করা হয় বাবর আজমকে। এখন সেই বাবরের সহ-অধিনায়ক হওয়ার জন্য নাকি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে আফ্রিদিকে। কিন্তু সেই প্রস্তাবে তিনি রাজি হননি বলে জানিয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যম।

সূত্রের বরাতে জিও নিউজ বলছে, শাহিন নিশ্চিত করেছেন যে তাকে নির্বাচক কমিটি থেকে সহ-অধিনায়ক হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল এবং এর মানে তিনি বাবরের পর দ্বিতীয় নেতা হবেন পাকিস্তানের। কিন্তু সেটি তিনি অগ্রাহ্য করেছেন। ফলে সহ–অধিনায়কের দায়িত্ব পেতে যাচ্ছেন মোহাম্মদ রিজওয়ান কিংবা শাদাব খান। রিজওয়ানকেই সেই দায়িত্ব দেওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

এর আগে মাত্র এক সিরিজে অধিনায়কের দায়িত্ব পালনের পরই মার্চে সরিয়ে দেওয়া হয় শাহিন আফ্রিদিকে। পরিবর্তে গত ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর নেতৃত্ব ছাড়া বাবর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও পাকিস্তানকে নেতৃত্ব দেবেন বলে ঘোষণা দেয় পিসিবি। কেবল টি-টোয়েন্টিই নয়, ওয়ানডেতেও এই তারকা ব্যাটারের কাঁধেই থাকছে নেতৃত্বের আর্মব্যান্ড। ওই সময় শাহিনকে নিয়ে আরও জলঘোলা আচরণ করে পিসিবি। অধিনায়কত্বের ঘোষণা চূড়ান্ত হওয়ার পরেই শাহিন আফ্রিদির নামে পিসিবি একটি বিবৃতি প্রচার করে। পরে সেটি ভুয়া ছিল বলে জানান এই তারকা পেসার।

যেভাবে অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে, তাতে শাহিন খুশি নন মোটেও। তাকে বিবৃতি দেওয়ার জন্য আহ্বানও জানায়নি পিসিবি। সবটাই তারা করেছে নিজ থেকেই। স্বাভাবিকভাবেই বেশ ক্ষুব্ধ তরুণ এই পেসার। এমন পরিস্থিতিতে শাহিনের সঙ্গে মহসিন নাকভি নেতৃত্বাধীন পিসিবি বৈঠকেও বসে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরুর আগমুহূর্তে তাকে আবারও সহ-অধিনায়কের প্রস্তাব দেওয়াটা কোন বিবেচনায় এসেছে– সেটিও এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এদিকে, গতকাল বিশ্বকাপের দল চূড়ান্ত করার ডেডলাইন শেষ হওয়ার আগমুহূর্তে পিসিবি বৈঠকে বসেছিল। এরপরই তারা পাকিস্তানের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ স্কোয়াড ঘোষণা করে। বাবরের নেতৃত্বাধীন দলটিতে তেমন চমক নেই। অর্থাৎ কাঙ্ক্ষিত ক্রিকেটারদের নিয়েই বিশ্বকাপ খেলতে যাচ্ছে ২০০৯–এর বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। শাহিন শাহ আফ্রিদি, নাসিম শাহ, মোহাম্মদ রিজওয়ান ও ফখর জামানের সঙ্গে অবসর ভেঙে ফেরা মোহাম্মদ আমির ও ইমাদ ওয়াসিমের মতো তারকারা আছেন চূড়ান্ত স্কোয়াডে। এ ছাড়া প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলার ডাক পেয়েছেন সাইম আইয়ুব, উসমান খান, আজম খান ও আব্বাস আফ্রিদি।

আগামী ২ জুন থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নবম আসর শুরু হবে। ২৫ ফেব্রুয়ারি স্কোয়াড চূড়ান্ত করার শেষ দিন। তার আগেরদিনই জরুরি বৈঠকের পর পাকিস্তান স্কোয়াড ঘোষণা করেছে। এর আগে অবশ্য এ নিয়ে কম নাটকীয়তা হয়নি। আগামী ৭ জুন নিজেদের প্রথম ম্যাচে স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে খেলবে বাবরের দল। এরপর ৯ জুন চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত, ১২ জুন কানাডা ও ১৬ জুন আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে গ্রুপপর্বে পাকিস্তানের শেষ ম্যাচ।

এএইচএস