শেষ ২৪ বলে জয়ের জন্য বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ২৬ রান, হাতে ছিল ৫ উইকেট। সাকিব আল হাসান, জাকের আলির ব্যাটাররা তখনও উইকেটে ছিলেন। সেখান থেকে ১৩ রান তুলতেই ৪ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ফলে শেষ ওভারে জয়ের জন্য প্রয়োজন হয় ১২ রান, হাতে মাত্র এক উইকেট। আলি খানের করা ওভারের প্রথম ২ বলে ৫ রান নিলেও তৃতীয় বলে উইকেটের পেছনে ধরা পড়েন রিশাদ হোসেন। তাতে ৬ রানের জয় পায় যুক্তরাষ্ট্র।

এই জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ ঘরে তুললো স্বাগতিকরা। দুইবারের দেখায় টি-টোয়েন্টিতে অপরাজিত থাকল তারা। টানা হারে এই সংস্করণে শততম হারের লজ্জার রেকর্ড স্পর্শ করেছে বাংলাদেশ। ১৬৮ টি-টোয়েন্টি খেলে ৬৪ জয়ের বিপরীতে টাইগারদের হার ১০০ ম্যাচে।

বৃহস্পতিবার (২৩ মে) টেক্সাসের হিউস্টনে প্রেইরি ভিউ ক্রিকেট কমপ্লেক্সে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৪৪ রান করে যুক্তরাষ্ট্র। জবাবে খেলতে নেমে ১৯ ওভার ৩ বলে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৩৮ রানের বেশি করতে পারেনি বাংলাদেশ।

ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা মোটেও ভালো করতে পারেনি বাংলাদেশ। গত ম্যাচে আক্রমণাত্মক খেলা সৌম্য সরকার আজ প্রথম ওভারেই সাজঘরে ফিরেছেন। ইনিংসে তার খেলা প্রথম বলটা ছিল খানিটকটা খাটো লেংথে। সেটা বোলারের মাথার ওপর দিয়ে খেলতে গিয়ে টাইমিং করতে পারেননি। বোলারের হাতে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ডাক খেয়ে সাজঘরে ফিরেছেন।

লিটন দাসের পরিবর্তে সিরিজে প্রথমবার খেলতে নামা তানজিদ তামিম ভালো শুরুর আভাস দিয়েছিলেন। তবে উইকেটে থিতু হয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি। সাজঘরে ফিরেছেন ১৫ বলে ১৯ রান করে।

৩০ রানে দুই ওপেনারকে হারানোর পর দলের হাল ধরেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও তাওহিদ হৃদয়। দুজনেই প্রয়োজনীয় রানের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রান তুলছিলেন। তবে হঠাৎ ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউটের শিকার হন শান্ত। ৩৪ বলে ৩৬ রান করে অধিনায়ক সাজঘরে ফিরলে ভাঙে ৪৮ রানের তৃতীয় উইকেট জুটি।

এরপরই ধ্বস নামে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপে। শান্ত ফেরার পর আর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তাওহিদ হৃদয়ও। তার ব্যাট থেকে এসেছে ২১ বলে ২৫ রান। গত ম্যাচে লোয়ার মিডল অর্ডার ভালো ব্যাটিং করলেও আজ ব্যর্থ হয়েছে। ইনফর্ম মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও জাকের আলি ফিরেছেন দুই অঙ্ক ছোঁয়ার আগেই।

ব্যাটারদের এমন আসা-যাওয়ার মাঝে সাকিব কিছুটা ব্যতিক্রম ছিলেন। তবে তিনি ২৩ বলে ৩০ রানের বেশি করতে পারেননি। শেষদিকে রিশাদ হোসেন-তানজিম সাকিবরাও দ্রুত ফিরেছেন। ফলে ছোট লক্ষ্য তাড়ায়ও জয়ের দেখা পায়নি টাইগাররা।

এর আগে নতুন বলে আজও সুবিধা করতে পারেননি বাংলাদেশের বোলাররা। শরিফুল ইসলাম-তানজিম সাকিবদের বিপক্ষে সহজেই রান তুলেছেন দুই ওপেনার স্টেভেন টেইলর ও মুনাক প্যাটেল। দুজনের ব্যাটে প্রথম পাওয়ার প্লেতে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৪২ রান তুলে স্বাগতিকরা।

আক্রমণে এসেই বাংলাদেশকে ব্রেকথ্রু এনে দেন রিশাদ হোসেন। এই লেগ স্পিনার নিজের প্রথম ওভার করতে এসেই শিকার করেন জোড়া উইকেট। ইনিংসের ৭ম ওভারের চতুর্থ বলে রিশাদকে লং অনের উপর দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে তানজিদ তামিমের হাতে ধরা পড়েন। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ২৮ বলে ৩১ রান।

পরের বলেই আন্দ্রে গুয়েসকেও ফিরিয়েছেন রিশাদ। এবার অফ স্টাম্পের বাইরে গুড লেংথে রেখেছিলেন রিশাদ, সেখানে ডিফেন্স করতে গিয়ে ব্যাটের বাইরের কানায় লেগে বল চলে যায় উইকেট কিপারের হাতে। গোল্ডেন ডাক খেয়েছেন এই টপ অর্ডার ব্যাটার।

এরপর কোরি অ্যান্ডারসনও দ্রুত ফিরেছেন। ১০ বএল ১১ রান করে শরিফুলের বলে বোল্ড হয়েছেন তিনি। ব্যর্থ হয়েছেন গত ম্যাচে দুর্দান্ত খেলা হারম্রিত সিংও। তবে অ্যারন জোনস দলকে লড়াই করার পুঁজি এনে দেন। তিনি ৩৪ বলে করেছেন ৩৫ রান।

এইচজেএস