আইপিএলে দুই বার চ্যাম্পিয়ন হলেও, কোনো আসরের লিগপর্বেই এমন দাপুটে অবস্থান ছিল না কলকাতা নাইট রাইডার্সের। ১৪ ম্যাচের ৯টিতে জিতে এবার তারা সবার আগে প্লে–অফে পা রেখেছিল, আরেকটি ম্যাচ ভেসে যায় বৃষ্টিতে। প্রথম কোয়ালিফায়ারে অবশ্য তাদের আজকের প্রতিপক্ষও ছিল শক্তিশালী সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। অথচ লিগপর্বে রানবন্যা বইয়ে দেওয়া দলটিকেই কি না একপ্রকার উড়িয়ে দিয়ে ফাইনালে উঠেছে কলকাতা। হায়দরাবাদের দেওয়া ১৬০ রানের লক্ষ্য তারা মাত্র ২ উইকেটেই পেরিয়ে গেছে।

আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে আজকের (মঙ্গলবার) ম্যাচটিকে নিজের পুরোনো ক্যালিবার দেখানোর সুযোগ হিসেবে বেছে নিয়েছেন মিচেল স্টার্ক (৩৪ রানে ৩ উইকেট)। অথচ আইপিএল ইতিহাসের সবচেয়ে দামী এই অস্ট্রেলিয়ান গতিতারকা চলমান সপ্তদশ আইপিএলের শুরু থেকেই বেশ খরুচে বোলিং করে আসছিলেন। তার সঙ্গে মিলে হায়দরাবাদের মেরুদণ্ড আগেই ভেঙে দেন বরুণ চক্রবর্তী। যদিও অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের শেষের ঝড়ে চ্যালেঞ্জিং স্কোর দাঁড় করায় দলটি। এর আগে হায়দরাবাদের হয়ে সর্বোচ্চ রাহুল ত্রিপাঠি ৫৫ ও হেইনরিখ ক্লাসেন ৩২ রান করেন।

হায়দরাবাদের বিধ্বংসী ওপেনার ট্রাভিস হেডকে দ্বিতীয় বলেই ফিরিয়েছেন স্টার্ক। এরপর অজি পেসার আরও দুই উইকেট নিয়েছেন। মিতব্যয়ী বোলিংয়ে বরুণ ২টি এবং হারশিত রানা নেন ১ উইকেট। এদিকে, ম্যাচ হারলেও সুযোগ শেষ হয়ে যায়নি কামিন্সদের। প্রথম এলিমিনেটরে জয়ী দলের সঙ্গে তারা দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার খেলবে, সেখানে বিজয়ী দল ফাইনালে (২৬ মে) কলকাতার মুখোমুখি হবে।

হায়দরাবাদের দেওয়া ১৬০ রানের লক্ষ্য তাড়ায় কলকাতা ঝোড়ো শুরু পায়। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে তারা তোলে ৬৩ রান। যদিও এর ভেতর তারা ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজের উইকেট হারায়। বিদায়ের আগে এই আফগান তারকা ১৪ বলে ২৩ রান করে কলকাতাকে এগিয়ে দিয়ে যান। এরপর ২৩ রানের ব্যবধানে ফেরেন সুনীল নারিনও (১৬ বলে ২১)। তবে এরপর আর শাহরুখ খানের দলটিকে পেছনে তাকাতে হয়নি। তৃতীয় উইকেটে অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ার ও ভেঙ্কটেশ আইয়ার মিলে ৪৪ বলে অবিচ্ছিন্ন ৯৭ রানের জুটি গড়েন। তাতেই সহজ জয় তুলে নেয় কলকাতা।

জয়ের পথে কলকাতার দুই আইয়ারই ব্যক্তিগত ফিফটি তুলে নিয়েছেন। ৪ ছক্কা ও ৫ চারে ২৮ বলে ৫১ রানে অপরাজিত ছিলেন ভেঙ্কটেশ। অন্য প্রান্তে শ্রেয়াসও ৪ ছক্কা ও ৫ চারে ২৪ বলে ৫৮ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন। ফলে ১৩.৪ ওভারেই ৮ উইকেট হাতে রেখেই মেরুন শিবির জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায়। হায়দরাবাদ অধিনায়ক কামিন্স ও টি নাতারাজন একটি করে উইকেট নিয়েছেন।

এর আগে মাত্র ১৩ রানেই দুই ওপেনারকে হারানো হায়দরাবাদকে বিপর্যয় থেকে টেনে তোলেন রাহুল। তার মাঝে ৩৪ রানেই পড়ে তৃতীয় উইকেট। আরেক প্রান্তে চলতি আইপিএলে অনিয়মিত ব্যাটার রাহুল নিজের ঝোড়ো ব্যাটিং ধরে রাখেন। যা অবশ্য হায়দরাবাদের পুরো ইনিংসেই দেখা মিলেছে। উইকেট হারালেও তারা রানের গতি সচল রাখে। ৩৫ বলে ৫৫ রান করে ফেরেন রাহুল ত্রিপাঠি। এ ছাড়া ২১ বলে ৩২ রান করেন হাইনরিখ ক্লাসেন। নয়ে নেমে অধিনায়ক প্যাট কামিন্স ২৪ বলে করেন ৩০ রান।

এএইচএস