আগামী ২ জুন থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও ক্যারিবিয়ান দ্বিপপুঞ্জে বসছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ততম সংস্করণে বিশ্বসেরা হওয়ার এই লড়াইয়ে ইতোমধ্যেই জায়গা নিশ্চিত করেছে ২০ দল। এই মেগা আসরে অংশ নেওয়া দলগুলোর সম্ভাবনা নিয়ে ধারবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করছে ঢাকা পোস্ট। আজ দ্বিতীয় পর্বে থাকছে নেদারল্যান্ডসের বিশ্বকাপ স্কোয়াড নিয়ে কাটা-ছেঁড়া।

ক্রিকেটের বিশ্বায়নের লক্ষ্যে প্রথমবারের মতো ২০ দল নিয়ে কোনো ইভেন্ট আয়োজন করছে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থার এমন সিদ্ধান্তে আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পূর্ণ সদস্যদের সঙ্গে বিশ্বকাপের মূল পর্বে খেলার সুযোগ করে নিয়েছে ৮টি সহযোগী দেশ।

সহযোগী দেশগুলোর মধ্যে ৭টি দল এসেছে কোয়ালিফায়ার খেলে। একমাত্র নেদারল্যান্ডস জায়গা পেয়েছে তাদের গত আসরের পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে। বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের মতো দলকে টপকে সেরা আটে থেকে সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শেষ করেছিল নেদারল্যান্ডস। ফলে এবারের আসরে সরাসরি খেলছে তারা।

বাংলায় একটা প্রবাদ আছে—ছোট মরিচের ঝাল বেশি। বিশ্বকাপের সেই ছোট মরিচ নেদারল্যান্ডস! আইসিসি ইভেন্টে বরাবরই দুর্দান্ত ডাচরা। যেন এই সময়টার জন্যই তাদের যত অপেক্ষা। ইতিহাস বলছে, বড় ইভেন্টে বড় দলকে হারানোটা তাদের রক্তে মিশে গেছে! সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। ২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূল পর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারায় তারা। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে ১৩ রানের জয়টা অনেকের কাছেই অঘটন ছিল। তবে পরের ম্যাচেই জিম্বাবুয়েকে হারিয়ে ধারাবাহিকতার প্রমাণ দেয় তারা। শেষ পর্যন্ত গ্রুপ-২ থেকে ৬ দলের মধ্যে চতুর্থ স্থানে থেকে আসর শেষ করে ডাচরা।

এবার দল বাড়ায় পরিবর্তন এসেছে বিশ্বকাপের ফরম্যাটেও। চার গ্রুপে ভাগ হয়ে লড়বে দলগুলো। প্রত্যেক গ্রুপে আছে ৫টি করে দল। যেখান থেকে গ্রুপের সেরা দুই দল কোয়ালিফাই করবে পরের রাউন্ডে।

এবার ‘ডি’ গ্রুপে পড়েছে নেদারল্যান্ডস। যেখানে তাদের সঙ্গী বাংলাদেশ, দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা ও নেপাল। ডালাসে আগামী ৪ জুন নেপালের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করবে ডাচরা। এরপর ৮ মে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলবে তারা। দুই ফরম্যাটের সর্বশেষ বিশ্বকাপে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে জিতেছিল ডাচরা। এবারও তাই বাড়তি নজর থাকবে এই ম্যাচে। এরপর ১৩ মে বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলবে তারা। আর ১৭ মে আসরে নিজেদের শেষ ম্যাচে প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা।

ডাচদের হয়ে ইনিংস ওপেন করতে দেখা যাবে ম্যাক্স ও'ডাউডকে। দলকে ভালো শুরু এনে দেওয়ার দায়িত্বটা এই অভিজ্ঞ ওপেনারের কাঁধেই থাকবে। ডাউডের সঙ্গী হিসেবে নতুন বল মোকাবেলা করবেন বিক্রমজিত সিং। ২০ বছর বয়সী এই তরুণ নিজের দিনে বিপজ্জ্বনক হয়ে ওঠতে পারেন।

তিন নম্বরের গুরুত্বপূর্ণ পজিশনে খেলবেন স্কট এডওয়ার্ডস। ওপেনারদের ব্যর্থতার দিনে দলকে ভালো ভীত গড়ে দেওয়ার দায়িত্বটা তার ওপর পড়বে। অভিজ্ঞ এই ব্যাটার দলটার ব্যাটিং লাইনআপে বড় তারকা। একই সঙ্গে নেতৃত্বভারও থাকছে তার কাঁধে। টপ অর্ডারের আরেক ব্যাটার ওয়েসলি বারোসি। তিনি মূলত ব্যাকআপ হিসেবে থাকবেন। তার একাদশে খেলার সম্ভাবনা খুবই কম।

নেদারল্যান্ডসের বড় শক্তির জায়গা দলে অলরাউন্ডারের আধিক্য। ১৫ জনের স্কোয়াডে ৪ জনই স্বীকৃত অলরাউন্ডার। সিব্র্যান্ড এঙ্গেলব্রাখট-বাস ডি লিডিরা জেনুইন অলরাউন্ডার। তাই এই দুইজন অধিনায়কের কাজটা সহজ করে দেবেন। ডি লিডিকে নিয়ে বাড়তি পরিকল্পনা থাকবে প্রতিপক্ষেরও। কারণ এডওয়ার্ডসের ট্রাম্প কার্ড হতে পারেন ২৪ বছর বয়সী এই পেস বোলিং অলরাউন্ডার। আর এঙ্গেলব্রাখট দলটার ভারসাম্য এনে দেবেন। ডাচদের এই অলরাউন্ড তালিকায় বাকি চার নাম- তেজা নিদামানুরু ও টিম প্রিঞ্জল।

ডাচদের স্পিন বিভাগে আছেন আরিয়ান দত্ত ও ডেনিয়েল ডোরামের মতো তরুণরা। আরিয়ান হবেন এই বিভাগের নেতা। হাত ঘুরাতে পারেন প্রিঞ্জল, তেজা, এঙ্গেলব্রেখটরাও। তাই স্পিনে বেশ কিছু বিকল্প থাকছে এডওয়ার্ডসের হাতে।

পেস বিভাগের নেতৃত্বে থাকবেন পল ফন মিকেরেন। এই ডানহাতি পেসার সঙ্গী হিসেবে পাচ্ছেন লোগান ফন বিক, ফ্রেড ক্লাসেন, ভিভ কিংমা ও ডে লিডিকে।

নেদারল্যান্ডসের বিশ্বকাপ স্কোয়াড-

স্কট এডওয়ার্ডস (অধিনায়ক), আরিয়ান দত্ত, বাস ডি লিডি, ড্যানিয়েল ডোরাম, ফ্রেড ক্লাসেন, লোগান ফন ভিক, ম্যাক্স ও'ডাউড, মাইকেল লেভিট, পল ভন মিকারেন, সায়ব্র্যান্ড এঙ্গেলব্রাখট, তেজা নিদামানারু, টিম প্রিঞ্জল, বিক্রম সিং, ভিভ কিংমা, ওয়েসলি বারেসি।

এইচজেএস