বাঁচা–মরার ম্যাচে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর কাছে হেরে আইপিএল থেকে ছিটকে গেছে চেন্নাই সুপার কিংস। যদিও ম্যাচ হারলেও, তাদের সামনে প্লে–অফে যাওয়ার সুযোগ ছিল। এজন্য বেঙ্গালুরুর চেয়ে হারের ব্যবধান রাখতে হতো ১৭ রানের, কিন্তু সেটি তো হয়ইনি, উল্টো ২৭ রানে হার নিয়ে আসর শেষ করেছে পাঁচবারের আইপিএল চ্যাম্পিয়নরা। পরবর্তীতে ম্যাচ শেষে মুস্তাফিজুর রহমানকে না পাওয়া নিয়ে আক্ষেপ ঝরেছে চেন্নাই অধিনায়ক রুতুরাজ গায়কোয়াড়ের কণ্ঠে।

গতকাল (শনিবার) ঘরের মাঠ চিন্নাস্বামীতে চেন্নাইয়ের বিপক্ষে আগে ব্যাট করে ৫ উইকেটে ২১৮ রানের বড় পুঁজি গড়েছিল আরসিবি। দলের হয়ে ৩৯ বলে ৫৪ রানের ইনিংস খেলেন ফ্যাফ ডু প্লেসি। জয়-পরাজয় ছাপিয়ে প্লে-অফে যাওয়ার লড়াইয়ে সুবিধাজনক অবস্থানেই ছিল চেন্নাই। বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে জিততে বড় টার্গেট হলেও ২০১ রান করলেই প্লে-অফ নিশ্চিত হয়ে যেত ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের। সে লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৭ উইকেটে ১৯১ রানেই থেমেছে ধোনিরা। অর্থাৎ ১০ রান স্বল্পতায় কপাল পুড়েছে তাদের।  

এমন হারের পর স্বাভাবিক দলের প্রধান দুই তারকা মুস্তাফিজ ও মাথিশা পাথিরানার জন্য আক্ষেপ হওয়ার কথা ছিল চেন্নাইয়ের। সেটাই হয়েছে শেষ পর্যন্ত। বাংলাদেশের হয়ে ব্যস্ততার কারণে গত ২ মে দেশে ফিরে আসেন ফিজ। কয়েকদিন বিশ্রাম নিয়ে তিনি খেলেছিলেন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শেষ দুই টি–টোয়েন্টিতে। এরপর দলের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে সিরিজ খেলতে আগেভাগেই উড়াল দিয়েছেন। গতকালের ম্যাচে তাকে মিস করার কথা জানিয়ে চেন্নাই অধিনায়ক বলেন, ‘আমরা ফিজকে (মোস্তাফিজুর রহমান) মিস করেছি।’

মুস্তাফিজ থাকলে চেন্নাইয়ের প্রথম ইনিংসে ভালো ভূমিকা রাখতে পারতেন। বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে এবারের আইপিএলে প্রথম দেখায় ফিজ চার উইকেট নিয়ে দলকে জিতিয়েছিলেন দাপটের সঙ্গে। দেশে ফেরার চেন্নাইয়ের জার্সিতে ৯টি ম্যাচ খেলেছেন মুস্তাফিজ। ৯ ম্যাচে ২২.৭১ গড় আর ৯.২৬ ইকোনমিতে ১৪ উইকেট নিয়েছেন। যা চেন্নাইয়ের টুর্নামেন্ট শেষ হওয়ার পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট। তার চেয়ে ফ্র্যাঞ্চাজিটির হয়ে বেশি উইকেট পেয়েছেন কেবল তুষার দেশপান্ডে। ১৪ ম্যাচ খেলে চেন্নাইয়ের দেশীয় এই পেসার ১৭ উইকেট নিয়েছেন।

এদিকে, মুস্তাফিজের পর চোটের অস্বস্তি নিয়ে দেশে ফিরে যান লঙ্কান পেসার পাথিরানাও। এভাবে বেশ কয়েকজন ক্রিকেটারকে না পাওয়াটা চেন্নাইয়ের প্লে–অফে ওঠার কাজ কার্যত কঠিন করে তুলেছিল। এ নিয়ে গায়কোয়াড় বলেন, ‘চোটের কারণে আমরা ডেভন কনওয়েকে পুরো টুর্নামেন্টেই পাইনি। যা বড় পার্থক্য গড়ে দিয়েছে। এভাবে চ্যালেঞ্জ এসেছে একেবারে শুরুর ম্যাচ থেকে। পাথিরানাও ইনজুরি পড়ে, একইভাবে মুস্তাফিজকেও মিস করেছি। যখন দলে এত ইনজুরি থাকে, স্কোয়াডে ভারসাম্য আনাটা কঠিন হয়ে যায়, তবে ক্রিকেটে এসব হয়েই থাকে।’

আইপিএল থেকে বিদায়ের আগে চেন্নাই ১৪ ম্যাচের মধ্যে ৭টিতে জিতেছে। পঞ্চম স্থানে থেকে বিদায় হয়েছে তাদের, বিপরীতে শেষ দল হিসেবে চারে থেকে প্লে-অফ নিশ্চিত করেছে কোহলি–ডু প্লেসিদের বেঙ্গালুরু। এ নিয়ে গত আইপিএলের দুই ফাইনালিস্টই বিদায় নিলো লিগ পর্ব থেকে। শেষবার রানার্সআপ হওয়া গুজরাট টাইটান্স পয়েন্ট টেবিলের আটে থেকে এবার বিদায় নিয়েছে। শেষ দুই ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়া শুভমান গিলের দলটি জিতেছে পাঁচটিতে।

এএইচএস