দুই মাস মাঠের বাইরে, এরপর আইপিএলে ফিরেই একের পর এক রানের ইনিংস, তবুও স্ট্রাইকরেট নিয়ে সমালোচনা— সব ছাপিয়ে নিজস্ব মেজাজেই এগিয়ে চলেছেন বিরাট কোহলি। চলতি আসরের সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক গতকাল (শনিবার) নিজের দলকে প্লে-অফেও তুলেছেন। আর এদিন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর এই তারকা একটি রেকর্ডও গড়েছেন। ঘরের মাঠ চিন্নাস্বামীতে তিন হাজার রানের মাইলফলক পূর্ণ করেছেন কোহলি।

চেন্নাই সুপার কিংসের বিপক্ষে কালকের ম্যাচটি ছিল বেঙ্গালুরুর জন্য বাঁচা–মরার লড়াই। শুধু জিতলেই হতো না, ব্যবধান রাখতে হতো ন্যূনতম ১৭ রানের। সেই সমীকরণ তো মিলিয়েছেই, আরও বড় ব্যবধানেই (২৭ রান) জিতে বেঙ্গালুরু চেন্নাইকে কাঁদিয়ে প্লে-অফে পা রেখেছে। আইপিএলে লিগ পর্বের শেষ ম্যাচ খেলতে নেমে ২৯ বলে ৪৭ রানের ইনিংস খেলেছেন কোহলি। হাফসেঞ্চুরি হাতছাড়া হলেও প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে আইপিএলে তিনি মাইলফলক স্পর্শ করেন।

প্রথম ক্রিকেটার হিসাবে আইপিএলের কোনো একক ভেন্যুতে ৩০০০ রান পূর্ণ করার নজির গড়লেন কোহলি। এই মাইলফলক স্পর্শ করতে কোহলি খেলেছেন ৮৯টি ম্যাচ। বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামীতে কালকের ম্যাচ শেষে তার রান দাঁড়াল ৩০০৫–এ। এই তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের সাবেক অধিনায়ক রোহিত শর্মা। মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়েতে তিনি ৮০ ম্যাচে ২২৯৫ রান করেছেন। এই তালিকায় তার পরের অবস্থান এবি ডি ভিলিয়ার্স (বেঙ্গালুরুতে ৬১ ম্যাচে ১৯৬০ রান), ডেভিড ওয়ার্নার (হায়দরাবাদে ৩২ ম্যাচে ১৬২৩ রান) ও ক্রিস গেইল (বেঙ্গালুরুতে ৪৫ ম্যাচে ১৫৬১ রান)।

কোহলি যেভাবে চলতি আসরে দুর্দান্ত ব্যাট করে চলেছেন, তার এই নজির গড়া ছিল সময়েরই ব্যাপার। চেন্নাইয়ের পেসার তুষার দেশপান্ডেকে ৯৮ মিটার দূরত্বের ছক্কায় কেমন ফর্মে আছেন তিনি সেটাই যেন বুঝিয়ে দিলেন। যা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে ভারতের জন্য বেশ স্বস্তির বিষয়। কোহলি নিজেও যে বিশ্বকাপের জন্য মুখিয়ে আছেন সেটাই জানালেন ম্যাচ শেষে, ‘বলতে পারি, আগের মতোই ক্ষুধার্ত আমি। (ভালো করার) ক্ষুধা না থাকলে আপনারা আমাকে টুর্নামেন্টে দেখতে পাবেন না। আমার যদি এই মানসিকতা না থাকে, তাহলে খেলতে পারব না… একবার দলীয় আবহ তৈরি হয়ে গেলে এটা দারুণ একটি যাত্রা। গত ওয়ানডে বিশ্বকাপেও আমাদের সময়টা দারুণ কেটেছিল। আমরা সত্যিই বিশ্বকাপ উপভোগ করেছি।’

এমন ফর্ম বিশ্বকাপেও টেনে নিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত সাবেক ভারতীয় অধিনায়কের কণ্ঠে, ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে, আমরা শিরোপা জিততে পারিনি। কিন্তু দল হিসেবে আমরা দারুণ একটি সময় কাটিয়েছি। আমাদের খেলা মানুষের পছন্দ হয়েছিল। আমি নিশ্চিত, এবারও খুব ভালো একটি টুর্নামেন্ট কাটবে আমাদের।’

এবারের আইপিএলে ১৪টি ম্যাচ খেলে কোহলির রান দাঁড়াল ৭০৮। কমলা টুপির দৌড়ে তিনি রয়েছেন সবার ওপরে। একটি সেঞ্চুরি এবং পাঁচটি হাফসেঞ্চুরি এসেছে তার ব্যাট থেকে। ৬৪.৩৬ গড় এবং ১৫৫.৬০ স্ট্রাইকরেটে ব্যাট করেছেন। এ ছাড়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও এখন পর্যন্ত কোহলির পারফরম্যান্স দুর্দান্ত। ২৭ ম্যাচে তার রান ১ হাজার ১৪১। ব্যাটিং গড় ৮১.৫০, স্ট্রাইক রেট ১৩১.৩০। ফিফটি করেছেন ১৪টি।

এএইচএস