নাজমুল হোসেন শান্তকে অধিনায়ক এবং তাসকিন আহমেদকে সহ-অধিনায়ক করে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য দল ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। সেই দলে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের বাদ পড়া নিয়ে ব্যাপক আলোচনা–সমালোচনা চলছে। একইসঙ্গে প্রশ্ন উঠেছে অফফর্মে থাকা লিটন দাসের দলে অন্তর্ভুক্তি নিয়ে। বিষয়টি দল ঘোষণার সময় ব্যাখ্যা করেছেন বিসিবির প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চলমান টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম তিন ম্যাচে এ ওপেনার ৪৩ বল খেলে করেছেন ৩৬ রান। বিশ্বকাপের আগে লিটন দাসের এমন পারফরম্যান্স উদ্বেগের জন্ম দিচ্ছে। হতশ্রী পারফরম্যান্সের কারণে চতুর্থ ও পঞ্চম টি-টোয়েন্টির একাদশ থেকে বাদ পড়েন লিটন। তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে লিটন তিনবার স্কুপ শট খেলতে গিয়ে বোল্ড হয়ে ফিরেছেন শেষ পর্যন্ত। ২০২৪ সাল জুড়েই তিনি ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছেন। তবে তার হাতে বাড়তি অপশন হিসেবে আছে উইকেটকিপিং। সে বিষয়টাই তাকে দলে নেওয়ার অন্যতম কারণ হিসেবে দেখিয়েছেন বিসিবির নির্বাচক।

এ নিয়ে গাজী আশরাফ লিপু বলেন, ‘লিটনকে তৃতীয় (মূলত চতুর্থ) ম্যাচে বাদ দেওয়ার কারণ সেটি ছিল সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচ। সেজন্য ওই বিশেষ ম্যাচের জন্য আমাদের এ সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল। লিটন কেবল ওপেনারই নয়, তার বিষয়টা তুললে উইকেটকিপিং সামর্থ্যের কথাও চলে আসে। আমাদের দুটো উইকেটকিপার নিয়ে যেতেই হবে। ওপেনিংয়ে হয়তো তার পরিবর্তে রিপ্লেস করতে পারছি।’

লিটনকে ফর্মে ফেরাতে কাজ চলছে বলেও জানান লিপু। তবে তার বিকল্প হিসেবে আলোচনায় এসেছিল এনামুল হক বিজয়ের নামও, ‘এক্ষেত্রে আবার আমরা এনামুল হক বিজয়কে নিয়েও আলোচনা করেছিলাম। তবে ফর্মহীন থাকার পরও আমাদের লিটনের ওপর আস্থা রাখতে হয়েছে। কারণ তাকে নিয়ে কাজ করা হচ্ছে এবং দুটো ম্যাচ যে তিনি খেলেননি সে সময়ও তার আস্থার জায়গা কিভাবে পুনরুদ্ধার করা যায়, সেই চেষ্টা করে যাচ্ছেন কোচিং স্টাফরা। কতটুকু উন্নতি হয়েছে সেটা তো বলা যায় না। তবে বল বাছাই ও শট খেলার দিক থেকে তাকে আরও দৃঢ় করার জন্য কোচরা কাজ করছেন।’

এদিকে, জিম্বাবুয়ে সিরিজের শুরু থেকেই লিটন দলে থাকলেও, উইকেটকিপিংয়ে তার বিকল্প খুঁজতে চেয়েছিল বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্ট। সে কারণে পুরো সিরিজে উইকেটের পেছনে দায়িত্ব সামলেছেন জাকের আলী অনিক। তবে এই ভূমিকায় তার পারফরম্যান্স হয়তো আশা জাগাতে পারেনি বিসিবিকে। বেশ কয়েকটি ক্যাচ হাতছাড়া হয়েছে তার হাত থেকে, এমনকি বল ক্যারি করতেও জাকেরকে নড়বড়ে দেখা গেছে। মনে হচ্ছিল বল ঠিক গ্লাভসে থাকছে না। আর এ কারণেই লিটনের হাতেই কিপিংয়ের দায়িত্ব ছাড়তে হচ্ছে জাকেরকে!

উল্লেখ্য, জিম্বাবুয়ে সিরিজ থেকে ইতিবাচক কিছু খুঁজতে হলে তাকাতে হবে স্পিনারদের দিকে। কারণ ব্যাটসম্যানরা সেভাবে স্ট্রাইকরেটে সফলতা দেখাতে পারেননি। লিটনের মতো ধারাবাহিক ফর্মহীনতায় সময় পার করছেন টাইগার অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তও। দুজনের সিরিজই রানের জন্য সংগ্রাম করে কেটেছে। তার মধ্যেই সবচেয়ে সফল ব্যাটসম্যান সিরিজ-সর্বোচ্চ ১৬০ রান করা তানজিদ তামিম। অথচ এই সিরিজে তিনি ছিলেন বাংলাদেশ দলের তৃতীয় ওপেনার হিসেবে! এ ছাড়া মিডল অর্ডারে খেলা তাওহীদ হৃদয় করেছেন ১৪০ রান। এই দুজন বাদে সব ম্যাচ মিলিয়ে কেউই একশ’র বেশি রানও করতে পারেননি!

এএইচএস