আগের ওভারে ৮ রান দিয়ে ১ উইকেট নিয়ে কাজটা খানিক সহজ করে রেখেছিলেন শাহিন আফ্রিদি। উইকেটও ছিল মূল্যবান। ৭৭ রান করা অ্যান্ডি বালবার্নিকে ফেরান এই পেসার। পরের কাজটা ছিল আব্বাস আফ্রিদির। কিন্তু কার্টিস ক্যাম্ফারের সামনে ১১ রান যেন বড় ইস্যু ছিল না। ১ বল বাকি থাকতেই পাকিস্তানকে হারিয়ে ঐতিহাসিক এক জয় তুলে নেয় আয়ারল্যান্ড।

বিশ্বকাপের প্রস্তুতির শুরুতেই বড় ধাক্কা হজম করতে হলো পাকিস্তানকে। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচেই হারের মুখ দেখেছে বাবর আজমের দল। অধিনায়ক বাবরের ওয়ানডে মেজাজের ব্যাটিং আরও একবার পড়েছে প্রশ্নের মুখে। আইরিশদের বিপক্ষে ১৮২ রান তোলার দিনেও হারতে হলো ২০০৯ এর টি-টোয়েন্টি চ্যাম্পিয়নদের।

অ্যান্ডি বালবার্নির ৭৭ রানের সঙ্গে হ্যারি টেক্টরের কার্যকরী ৩৬ রান আইরিশদের রেখেছিল জয়ের কক্ষপথে। দরকার ছিল ভালো ফিনিশিং। ক্যাম্ফারের ৭ বলে ১৫ রানের ক্যামিও শেষ পর্যন্ত সেই কাজও সহজ করে দেয়। পাকিস্তানের বিপক্ষে আয়ারল্যান্ডের জয় ৫ উইকেটে। 

ডাবলিনের ক্যাসেল অ্যারেনায় টস জিতে আগে পাকিস্তানকে ব্যাট করতে পাঠান আইরিশ অধিনায়ক পল স্টার্লিং। বেশ কিছুদিন ধরেই পাকিস্তানের ওপেনিং জুটি নিয়ে প্রশ্ন ছিল। তবে আজও সেই সাইম আইয়ুব এবং মোহাম্মদ রিজওয়ান জুটিই শুরু করেছে পাকিস্তানের ইনিংস। তাতে অবশ্য খুব একটা রান ওঠেনি। ৪ বলে ১ রান করেই বিদায় নেন রিজওয়ান। 

এরপরেই ক্রিজে বাবর আজম এবং সাইম আইয়ুবের জুটি। দুজনের জুটিতে রান খারাপ ওঠেনি। রান এসেছে ওভারপ্রতি ৯ করে। তবে এতে সাইমের কৃতিত্বই বেশি। আউট হওয়ার আগে ১৫৫ এর বেশি স্ট্রাইকরেটে ২৯ বলে তুলেছেন ৪৫ রান। পাকিস্তানকে বড় স্কোরের ভিত দিয়েছে সেই ইনিংসটিই। ৯২ রানে তার আউট হওয়ার পর বাবর তুলে নেন ক্যারিয়ারের ৩৪তম টি-টোয়েন্টি ফিফটি। তবে এমন ইনিংসেও সমালোচনা এড়ানো যায়নি। ৪৩ বলে ৫৭ রানের ইনিংসটি পাকিস্তানের রানের চাকাই বরং খানিক ধীর করে রেখেছিল। 

যদিও এসময় পাকিস্তানের হয়ে রান করতে পারেননি কেউই। ১৮ বলে ২০ রানের আরেকটি ধীরগতির ইনিংস খেলেন ফখর জামান। আর আজম খান এবং শাদাব খান দুজনেই ফিরেছেন ডাক মেরে। শেষদিকে ইফতিখান ৩ চার এবং ৩ ছক্কায় ১৫ বলে ৩৭ রান করে দলের রানের চাকা ঘোরান। আর তাকে সঙ্গ দেন শাহিন আফ্রিনি। তার ৮ বলের ইনিংসে এসেছে ২০ রান। তাতেই পাকিস্তান পেয়ে যায় ১৮২ রানের বড় পুঁজি। 

ব্যাট হাতে আইরিশদের সূচনাও খুব একটা ভাল হয়নি। দলীয় ১৪ রানে নাসিম শাহের বলে পল স্টার্লিং আর ২৭ রানে আব্বাস আফ্রিদির বলে আউট হন লকরান টাকার। দুজনেই ক্যাচ আউটের শিকার। এরপরেই টেক্টরকে নিয়ে দারুণ এক জুটি গড়েন ম্যাচসেরা বালবার্নি। পার হয় দলীয় শতরান। হ্যারি টেক্টর ফিরে যান ১৩তম ওভারে। স্কোরবোর্ডে তখন ১০৪ রান। 

আয়ারল্যান্ডের জন্য জয় তখনো দূরের বাতিঘর। এসময় ১২ বলে ২৪ রানের দ্রুতগতির এক ইনিংস উপহার দেন জর্জ ডকরেল। ছোট এই ক্যামিওটাই ম্যাচ নিয়ে আসে হাতের মুঠোয়। দলীয় ১৪৩ রানে ডকরেল ফিরে গেলেও বিপদ হয়নি। বালবার্নি ফিফটির পরেও ধরে রেখেছিলেন রান তোলার গতি। 

১৯তম ওভারে থামে তার ৫৫ বলে ৭৭ রানের ইনিংস। কিন্তু ততক্ষণে ঠিকই জয়ের কাছাকাছি চলে যায় আয়ারল্যান্ড। আর শেষ ওভারে দুই চার মেরে দলকে জয় এনে দেন কার্টিস ক্যাম্ফার।

জেএ/এসকেডি