দুয়ারে কড়া নাড়ছে আরেকটি বিশ্বকাপ। তবে ফরম্যাট ভিন্ন, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ এবার মাঠে গড়াবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ‍যুক্তরাষ্ট্রে। তার আগে ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের অজানা স্মৃতি প্রকাশ করেছেন আফগানিস্তানের তারকা অলরাউন্ডার রশিদ খান। যেখানে তিনি চোট নিয়েও খেলেছিলেন, ফলে তার ফিটনেস ছিল কেবল ৪০ শতাংশ। এছাড়া রোমাঞ্চকর ম্যাচে পাকিস্তানকে হারিয়ে রশিদ নাকি সারা রাত উদযাপন করেছিলেন!

বর্তমানে গুজরাট টাইটান্সের হয়ে আইপিএলে ব্যস্ত এই আফগান তারকা সাক্ষাৎকার দিয়েছেন ইএসপিএন ক্রিকইনফো–কে। ওয়েবসাইটটি তাদের ‘দ্য ক্রিকেট মান্থলি’তে ওই সাক্ষাৎকার প্রকাশ করেছে। সেখানে রশিদ জানান, বিশ্বকাপের আগে ডাক্তার তাকে অস্ত্রোপচার করাতে বলেছিলেন, কিন্তু তিনি টুর্নামেন্টে তার দেশের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য ওই সময়ে অপারেশন করাননি। ফলে টুর্নামেন্টের আগে এবং ম্যাচের মাঝেও ইনজেকশন নিয়েছিলেন তিনি।

পিঠের ব্যাথা ও কম ফিটনেস নিয়ে পুরো বিশ্বকাপ খেলার কথা জানান এই ২৫ বছর বয়সী অলরাউন্ডার, ‘আমি ফিজিওকে বলেছিলাম আমি ঠিকমতো হাঁটতে পারছি না। তিনি আমার দিকে কঠিন দৃষ্টিতে তাকিয়েছিলেন। আমি খেলাটিকে চালিয়ে যাওয়ার জন্য ব্যথানাশক ইনজেকশন ব্যবহার করেছিলাম, কিন্তু বিশ্বকাপের শেষ তিনটি ম্যাচে আমি আক্ষরিক অর্থেই ৪০ শতাংশ ফিটনেস নিয়ে খেলেছি।’

সর্বশেষ বিশ্বকাপে বড় চমকের নাম ছিল আফগানিস্তান। ইংল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের মতো দলকে হারিয়ে তারা সেমিফাইনালের দৌড়েও ছিল শক্ত অবস্থানে। যদিও শেষ পর্যন্ত সেটি আর সম্ভব হয়নি। পাকিস্তানকে হারানো ম্যাচ নিয়ে বেশি খুশি ছিলেন রশিদ, ‘পাকিস্তানকে হারিয়ে সারা রাত উদযাপন করেছি এবং প্রচুর নেচেছি। যা দেখে আমাদের ফিজিও আমাকে মনে করিয়ে দিচ্ছিল যে আমার সাবধান হওয়া দরকার। পুরো আফগানিস্তান স্কোয়াড আমাকে নাচতে এবং উদযাপন করতে দেখে অবাক হয়েছিল; তারা আমাকে এই ধরনের মেজাজে কখনও দেখেনি। সেই আনন্দটা অন্যরকম ছিল কারণ সেই উপলক্ষ্য ছিল পুরো দেশে।’

চোটের সমস্যা নিয়ে পুরো টুর্নামেন্ট খেললেও, রশিদের অভিজ্ঞতা ছিল বিভীষিকাময়। তিনি বলেন, ‘আমি ঘুমাতে পারতাম না। আমি মাঝে মাঝে ভোর চার বা পাঁচটায় ঘুমাতাম। ঘুমের ট্যাবলেট এবং ব্যথানাশক ওষুধ খেয়ে ঘুমাতে হত। কখনও কখনও আমি আমার পা ঠিকভাবে তুলতে পারছিলাম না। আমি রুমেই সব খাবার খেতে শুরু করি। শেষ ম্যাচের সময় কোচ আমাকে বলেছিল আমার খেলার দরকার নেই, কিন্তু আমি বলেছিলাম যে আমি ব্যথানাশক খেয়ে খেলব। শরীর গরম হওয়ার পর আমি অস্বস্তি বোধ করছিলাম না, কিন্তু খেলার পর এমন অবস্থাও হয়েছে যে আমি নড়াচড়া করতে পারিনি।’

পরবর্তীতে বিশ্বকাপ শেষে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন রশিদ। প্রথম এই অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি আতঙ্কিতও ছিলেন বলে জানান, ‘ডাক্তার আমাকে বললেন ‘‘এটি আপনার প্রথম এমআরআই এবং এটি বিশ্বকাপের পরে আপনার দ্বিতীয় এমআরআই, তাই আপনি দেখতে পাচ্ছেন যে ডিস্কটি কত বড় হয়ে গেছে।’’ সত্যি কথা বলতে আমি নার্ভাস ছিলাম। এটা আমার ক্যারিয়ারে প্রথম কোনো অস্ত্রোপচার হতে যাচ্ছিল। ডাক্তার জানিয়েছিলেন যে একটি ব্যর্থ অস্ত্রোপচার আমার খেলার ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে পারে, যা আমাকে টেনশনে ফেলে দেয়।’

এএইচএস