রেকর্ড গড়ার পর রাজা, ‘এমন পারফরম্যান্স দরকার ছিল’
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের (ডিপিএল) একেবারে শেষ দিনে এসে গতকাল রেকর্ড গড়া বোলিং করেছেন পেসার রেজাউর রহমান রাজা। শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের বিপক্ষে ৬ ওভার ৩ বল করে ২৩ রান খরচায় ৮ উইকেট তুলে নেন রাজা। যা লিস্ট-এ ক্রিকেটে বাংলাদেশি কোনো বোলারের সেরা বোলিং ফিগার। এর আগে এই রেকর্ডটি ছিল ইয়াসিন আরাফাত মিশুর। ২০১৮ সালের ডিপিএলে আবাহনীর বিপক্ষে ৪০ রান দিয়ে নেন ৮ উইকেট।
রাজার এমন রাজকীয় দিনে অসহায় ছিলেন সাকিব আল হাসান থেকে শুরু করে নুরুল হাসান সোহানরা। রীতিমত শেখ জামালকে দিশেহারা করে দেন প্রাইম ব্যাংকের পেসার রাজা। ফলে ৭১ রানেই গুটিয়ে যায় সাকিবের দল, আর ১৯৯ রানের বিশাল জয় নিয়ে ডিপিএল শেষ করল প্রাইম ব্যাংক। সিলেটের এই পেসার এবারের ডিপিএলে ৬ ম্যাচ খেলে সংগ্রহ করেছেন ১৩ উইকেট।
বিজ্ঞাপন
নিজের এমন রাজকীয় বোলিং নিয়ে ঢাকা পোস্টের ক্রীড়া প্রতিবেদক সাকিব শাওনকে নিজের অনুভূতি জানিয়েছেন রাজা। জাতীয় দলের প্রসঙ্গ ছাড়াও উঠে এসেছে অন্যান্য বিষয়ও। পাঠকদের উদ্দেশে তার চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো-
ঢাকা পোস্ট: ৮ উইকেট পেলে। দেশের লিস্ট-এ ক্রিকেটে রেকর্ড গড়লেন। সবার আগে জানতে চাইবো, অনুভূতি কেমন?
রাজা: আলহামদুলিল্লাহ, পারফরম্যান্স করলে তো ভালো লাগা কাজ করে আলাদাভাবেই। মাঝখানে প্রায় মাস খানেকের মতো ইনজুরিতে ছিলাম। ফিরে এসে এমন একটা পারফরম্যান্স আমার জন্য দরকার ছিল। এর ফলে সামনে ভালো করতে আরও কনফিডেন্স জোগাবে।
আরও পড়ুন
ঢাকা পোস্ট: ইনজুরির কথা বললেন। এই সময়ে কেমন সাপোর্ট পেয়েছেন আশপাশের সবার কাছে? নিজে কীভাবে শক্ত ছিলেন?
রাজা: আসলে একটা খেলোয়াড় যখন ইনজুরিতে পড়ে তখন সবথেকে বড় সাপোর্টটা আসে নিজের মানসিকতা থেকে। নিজে যদি শক্ত থাকা যায় তাহলে অনেক ভালো, তাহলে সহজ হয়। আর পরিবারের সাপোর্ট, প্রাইম ব্যাংকে ছিলাম কোচ-খেলোয়াড় বা টিম ম্যানেজমেন্টের সবাই অনেক সাপোর্ট করেছে। আমি বলব নিজের মানসিকতা গুরুত্বপূর্ণ।
ঢাকা পোস্ট: আপনি নিজে ভেবেছিলেন কি না এমন পারফরম্যান্স করতে পারবেন? এক ম্যাচে ৮ উইকেট, রেকর্ড গড়ে ফেলা...
রাজা: আসলে ৮ উইকেট এক ম্যাচে তো কঠিন। বলেকয়ে কেউ তো উইকেট নিতে পারে না। আমার ফোকাসটা ছিল আমি আমার ক্রাইটেরিয়া অনুযায়ী বোলিংটা করব। সেখান থেকে দলের প্রয়োজনে যখন যা প্রয়োজন সেটা মেটানোর চেষ্টা। চেষ্টা করেছি, হয়েছে– আলহামদুলিল্লাহ বলব।
ঢাকা পোস্ট: সবার অভিনন্দন পেয়েছেন নিশ্চয়ই।
রাজা: হ্যাঁ অনেক, সবাই অভিনন্দন জানিয়েছি। শুভেচ্ছা দিয়েছে, আরো ভালো করতে উদ্বুদ্ধ করেছে আমাকে।
ঢাকা পোস্ট: জাতীয় দলে অভিষেক না হলেও, একটা সময় দলের সঙ্গে ছিলেন। এখন নেই, তবে নতুন নির্বাচকদের সঙ্গে আলাপ হয়েছে কি না?
রাজা: না ওরকমভাবে কথা হয়নি, তবে হান্নান ভাইয়ের সঙ্গে দেখা হয়েছে কথা হয়েছে।
ঢাকা পোস্ট: জাতীয় দল থেকে অভিষেক না হয়েই বাদ পড়েছিলেন, কেমন ছিল সেই সময়টা?
রাজা: জাতীয় দলে খেলব দেখেই তো সেই স্বপ্ন নিয়ে এগোচ্ছি। যাতে বাংলাদেশ দলে খেলতে পারি। আমি আমার দুর্বলতাগুলো নিয়ে কাজ করছি, যে ভুলগুলোর কারণে বাদ পড়েছি জাতীয় দল থেকে সেগুলো শোধরানোর চেষ্টা করতেছি। জাতীয় দল থেকে বাদ পড়ে হতাশা কাজ করেনি, তবে একটু মন খারাপ ছিল। নির্বাচকরা মনে করেছিলেন, হয়তো আমি আরো পাকাপোক্ত হয়ে যাতে দলে যাই। ওনারা মনে করছেন, আমার মন খারাপের কিছু নেই, কাজে ফোকাস রাখছি সবসময়।
ঢাকা পোস্ট: দেশসেরা কোচ বলা হয়ে থাকে মোহাম্মদ সালাউদ্দিনকে তার অধীনেই ছিলেন, নতুন করে কি শিখলেন?
রাজা: স্যার আসলে খেলোয়াড়দের খুব ভালো মোটিভেট করতে পারেন, কনফিডেন্স দেন। নিজেকে আলাদা কনফিডেন্স দিয়ে থাকেন। নিজে কেমন, কোন ধরণের বোলার বা ব্যাটার সেই অনুযায়ী কাজ করতে বলেন। সবথেকে বড় কথা যার যে ভুল রয়েছে সেগুলো নিয়ে স্যার কাজ করান যাতে ভবিষ্যৎ আর ভুল না হয়। সেটা নিয়ে আলাদাভাবে কাজ করান।
ঢাকা পোস্ট: অ্যালান ডোনাল্ড চলে যাওয়ার পরে নতুন বোলিং কোচ এসেছেন আন্দ্রে আডামস, কথা হয়েছে তার সাথে?
রাজা: না এখনো পর্যন্ত কোনো কথা হয়নি, ইনশাআল্লাহ ভবিষ্যতে হবে আশাবাদী।
এসএইচ/জেএ /এফআই