এই তো কিছুদিন আগেও অস্ট্রেলিয়ার টি-টোয়েন্টি দলে অভিজ্ঞ ক্রিকেটার স্টিভেন স্মিথকে দেখে প্রশ্ন তুলেছিলেন অনেকেই। তবে শেষ পর্যন্ত বিশ্বকাপ দলে তিনি থাকবেন কি না সেই বিস্ময়ও দেখা দিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দলে নেই স্মিথ। একইসঙ্গে সাম্প্রতিক সময়ে আলোচিত জ্যাক ফ্রেজার-ম্যাকগার্কও অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপ দলে জায়গা পাননি। আজ (বুধবার) চমক জাগানিয়া এই দল ঘোষণা করেছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ)।

অজিদের ১৫ সদস্যের দলে আছেন বিশেষজ্ঞ স্পিনার অ্যাশটন অ্যাগার। ক্যামেরন গ্রিনও অতিরিক্ত অলরাউন্ডার হিসেবে বিশ্বকাপ দলে জায়গা পেয়েছেন। যথারীতি মিচেল মার্শকেই অধিনায়ক রেখেছে অস্ট্রেলিয়া, যিনি গত এক বছর সাময়িক অধিনায়ক ছিলেন টি-টোয়েন্টি দলটির। বিশ্বকাপ দলে পেসার হিসেবে প্যাট কামিন্স, জশ হ্যাজলউড ও মিচেল স্টার্কের থাকা এক প্রকার নিশ্চিতই ছিল। তাদের সঙ্গে চতুর্থ পেসার হিসেবে সুযোগ পেয়েছেন নাথান এলিস।

এছাড়া উইকেটরক্ষক ব্যাটার জশ ইংলিসও ধরবেন বিশ্বকাপের বিমান। তবে তিনি হয়তো থাকবেন ব্যাক-আপ উইকেটরক্ষক হিসেবে। কারণ এই পজিশনে অস্ট্রেলিয়ার প্রধান চয়েজ ম্যাথু ওয়েড। নির্বাচকরা আস্থা রেখেছেন সর্বশেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপে দুর্দান্ত পারফর্ম করা ট্রাভিস হেড, ডেভিড ওয়ার্নার ও মার্শের ওপর। তিনজনই ওপেনিং করার নজির রয়েছে। তবে ওয়ার্নার-হেড ওপেন করলে, ওয়ানডাউনে খেলবেন অধিনায়ক মার্শ। এছাড়া মিডল অর্ডার ব্যাটার হিসেবে আছেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, মার্কাস স্টয়নিস, টিম ডেভিড ও ওয়েড। তারা একাদশেও থাকবেন পছন্দের শীর্ষে।

অজিদের হয়ে ঘরোয়া টুর্নামেন্ট দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের পর চলতি আইপিএলেও দ্যুতি ছড়াচ্ছেন ম্যাকগার্ক। ছয় ইনিংসে তার ব্যাটিং ছিল বিস্ময় জাগানিয়া। ২৩৩.৩৩ স্ট্রাইকরেট নিয়ে ছয় ইনিংসের তিনটিতেই ফিফটি করেছেন ম্যাকগার্ক। যেখানে দুটি ছিল মাত্র ১৫ বলে ফিফটি। সে কারণে অজিদের সাবেক বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্কও তাকে বিশ্বকাপ দলে রাখতে আহবান জানিয়েছিলেন। অথচ তরুণ এই প্রতিভাকে বিশ্বকাপ দলেই রাখল না অজিরা। এর আগে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ওয়ানডেতে অভিষেক হয়েছিল ম্যাকগার্কের।

অভিজ্ঞ ক্রিকেটার হলেও স্মিথের বাদ পড়া কিছুটা অনুমেয় ছিল। অনেক দিন ধরেই তিনি জাতীয় দলের টি-টোয়েন্টিতে ‘অটোমেটিক চয়েজ’ নন। সর্বশেষ নিউজিল্যান্ড সফরে সুযোগ দেওয়া হলেও ব্যাট হাতে ব্যর্থ হয়েছেন স্মিথ। ওপেনিংয়ে সুযোগ পেয়ে দুই ইনিংসে করেছেন ১১ ও ৪ রান। আর সর্বশেষ ১৮ ইনিংসে তার ফিফটি মাত্র একটি। সেটিও গত নভেম্বরে ভারতের দ্বিতীয় সারির দলের বিপক্ষে। গত এক যুগে এই প্রথমবার বিশ্বকাপ মিস করতে যাচ্ছেন স্মিথ।

দুর্ভাগাদের তালিকায় আছে আরেকটি নাম। তিনি হচ্ছে ম্যাথু শর্ট, সর্বশেষ বিগ ব্যাশের দুটি মৌসুমেই তিনি ছিলেন দারুণ ধারাবাহিক। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে টি-টোয়েন্টি এবং ওয়ানডেতে অভিষেক হয়েছিল এই স্পিন অলরাউন্ডারের। বিশেষত সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে তার পারফরম্যান্স বিশ্বকাপ দলে জায়গা পাওয়াটা স্বাভাবিক হিসেবে ধরা দিত। একইসঙ্গে তরুণ প্রতিভা স্পেন্সার জনসন, অ্যারন হার্ডি, জাভিয়ের বার্টলেটরাও জায়গা পাননি এই দলে।

তবে এই দলে জায়গা না মিললেও, তরুণ প্রতিভাদের ওপর চোখ রাখা হবে বলে জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধান নির্বাচক জর্জ বেইলি, ‘প্রাথমিক দলে সুযোগ না পাওয়া কয়েকজন খেলোয়াড়ের ওপর নজর রাখা হবে। মনে রাখবেন, যদি আমরা দলে পরিবর্তন আনতে চাই, আইসিসির নিয়ম মেনে আমাদের সেটা করার সুযোগ আছে। তবে যে ১৫ জন দলে জায়গা পেয়েছে, অনেক বেশি সম্ভাবনা রয়েছে তাদের সফল হওয়ার।’

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরু হবে আগামী ১ জুন। যেখানে ‘বি’ গ্রুপে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, নামিবিয়া, স্কটল্যান্ড ও ওমান খেলবে। নিজেদের প্রথম ম্যাচে ৫ জুন ওমানের মুখোমুখি হবে মার্শের অস্ট্রেলিয়া।

অস্ট্রেলিয়ার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ স্কোয়াড : 

মিচেল মার্শ (অধিনায়ক), ডেভিড ওয়ার্নার, ট্রাভিস হেড, জশ ইংলিস, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, মার্কাস স্টয়নিস, অ্যাডাম জাম্পা, অ্যাস্টন অ্যাগার, ম্যাথু ওয়েড, ক্যামেরন গ্রিন, টিম ডেভিড, মিচেল স্টার্ক, নাথান এলিস, জশ হ্যাজলউড ও প্যাট কামিন্স।

এএইচএস