কোনো ম্যাচ না হেরেই ডিপিএলের চ্যাম্পিয়ন আবাহনী
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) এবার পুরো টুর্নামেন্টজুড়েই একপেশে দাপট ছিল আবাহনীর। তবুও বাংলাদেশের ‘ছায়া’ জাতীয় দলটি শিরোপা নিশ্চিতের আগমুহূর্তে দুর্ভাবনায় পড়েছিল। কারণ স্কোয়াডে থাকা ১০ ক্রিকেটারই যে জিম্বাবুয়ে সিরিজের দলে ডাক পেয়েছেন। সে কারণে দলের সব খেলোয়াড়কে পাচ্ছিল না আবাহনী। তবুও চ্যাম্পিয়ন হতে তাদের বেগ পেতে হয়নি। সাকিব আল হাসানদের শেখ জামাল ধানমন্ডিকে ৪ উইকেটে হারিয়ে ডিপিএলে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে আবাহনী।
আজ (মঙ্গলবার) বিকেএসপির চার নম্বর মাঠে মুখোমুখি হয় শেখ জামাল ধানমন্ডি ও আবাহনী। যেখানে আগে ব্যাট করতে নেমে ৯ উইকেটে ২৬৭ রান তোলে সাকিবের শেখ জামাল। এই ম্যাচ দিয়ে প্রায় এক মাস পর মাঠে নেমেছেন সাবেক এই টাইগার অধিনায়ক। ব্যাট-বলে অলরাউন্ড পারফর্ম করলেও, সাকিবরা হেরে গেছেন। ১ বল এবং ৪ উইকেট হাতে রেখেই অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন আবাহনী। চলতি আসরে তারা টানা ১৪ ম্যাচের সবকটিতেই জিতেছে। অথচ এখনও দুই ম্যাচ বাকি মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতদের।
বিজ্ঞাপন
ম্যাচটি শেষদিকে রোমাঞ্চ ছড়িয়েছে। শেষ ওভারে আবাহনীর দরকার ছিল ৯ রান, আর শেখ জামালের ৪ উইকেট। ক্রিজে অধিনায়ক সৈকত থাকায় ভরসা ছিল আবাহনীর, তবুও তারা শঙ্কায় পড়ে যায় প্রথম চার বলে মাত্র দুই রান আসায়। পঞ্চম বলে ছক্কা হাঁকান সৈকত। বল সীমানা পার হতেই উৎসবে মেতে ওঠে আবাহনী শিবির। তাতে আরও একবার ডিপিএল চ্যাম্পিয়নশিপ নিশ্চিত করল তারা। এ নিয়ে আবাহনী ডিপিএলের ২৩তম শিরোপা ঘরে তুলেছে। লিস্ট-এ মর্যাদা পাওয়ার পর যা তাদের পঞ্চম শিরোপা।
এদিন আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৫ রানেই তিন উইকেট হারিয়ে বসে শেখ জামাল। সৈকত আলীকে সঙ্গে সেই বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠেন সাকিব। আগেই জানা গিয়েছিল জিম্বাবুয়ে সিরিজের প্রথম তিন ম্যাচে তিনি থাকছেন না, বিরতি শেষে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরে তিনি আজ প্রিমিয়ার লিগে খেলতে নামেন। সাকিব-সৈকত জুটি শেখ জামালকে ৭২ রান এনে দেয়। সেই জুটি ভাঙেন রাকিবুল হাসান। তার বলে তাকেই ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সৈকত (৪১)। এরপর সাকিবও ফেরেন হাফসেঞ্চুরির আগে। ৫৬ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় এই বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার ৪৯ রান করেন।
এরপর ৬৪ বলে ৪১ রান করে রান আউট হন শেখ জামাল অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান। ফলে তাদের বড় রানের আশা ক্ষীণ হয়ে আসে। তবে শেষদিকে দলটিকে আবারও জাগিয়ে তোলেন জিয়াউর রহমান। তিনি রীতিমতো ঝড়ো ইনিংসে প্রায় তিনশ রানের দিকে শেখ জামালকে নিয়ে যান। যদিও শেষ পর্যন্ত আর সেটি হয়নি। ইনিংসের দুই বল বাকি থাকতেই আউট হয়ে যান জিয়া। ৫৮ বল ৬টি চার ও ৮টি ছক্কায় তিনি ৮৫ রান করেন। বিপরীতে আবাহনীর হয়ে তিনটি করে উইকেট নেন তানজিম হাসান সাকিব ও রাকিবুল হাসান।
জবাবে ২৬৮ রানের লক্ষ্য তাড়ায় নেমে শুরুতে হোঁচট খায় টুর্নামেন্ট টপার আবাহনী। ১১ বলে ৬ রান করে সাকিবের বলে আউট সাব্বির হোসেন। এরপর সেট হয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি নাঈম শেখ, ৪২ বলে তিনি ২১ রান করেন। তিন নম্বরে নামা এনামুল হক বিজয় ও আফিফ হোসেনের জুটিতে আবাহনী সেই বিপর্যয় দারুণভাবে সামলে ওঠে। দুজন মিলে গড়েন ১০৩ রানের জুটি। তাদের বিদায়ের পর ম্যাচ কিছুটা কঠিন হয়ে যায় আবাহনীর জন্য।
৮০ বলে ৬৭ রান করে সাইফ হাসানের বলে এলবিডব্লিউ হন বিজয়। ৮ চার ও ২ ছক্কায় ৮৮ বলে ৮৩ রান করে তাইবুরের শিকার হন আফিফ। তাদের বিদায়ের পর ঠাণ্ডা মাথায় এক প্রান্ত আগলে থাকেন সৈকত। শেষ ওভারে প্রয়োজনীয় ৯ রানের সবগুলোই তিনি নিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত ৪টি ছক্কায় ৫৪ বলে ৫৩ রানে অপরাজিত ছিলেন সৈকত। আর তাতেই আবাহনীর জয় নিশ্চিত হয়ে যায়।
শেখ জামালের শফিকুল ইসলাম সর্বোচ্চ দুই উইকেট নিয়েছেন। এছাড়া একটি করে উইকেট শিকার করেন সাকিব, সাইফ, তাইবুর রহমান ও রিপন মন্ডল।
এএইচএস