চলমান ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের (ডিপিএল) সুপার সিক্স পর্বে গত বৃহস্পতিবার মুখোমুখি হয়েছিল মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব ও প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব। কিন্তু দিন চারেক আগে হয়ে যাওয়া এই ম্যাচ নিয়ে এখনও চলছে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা।

নারী আম্পায়ার সাথিরা জাকির জেসির উপস্থিতিতে ম্যাচটি খেলতে ‘আপত্তি’ জানিয়েছিল প্রাইম ব্যাংক এবং মোহামেডান—এমন একটি খবর দেশের কিছু গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। যা নিয়ে পরে বিভিন্ন রকমের তীর্যক মন্তব্য শুনতে হয়েছে দেশের ক্রিকেটের বড় দুই ক্লাবকে। অবশ্য বিষয়টি নিয়ে এরই মধ্যে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন দুই ক্লাবের কর্মকর্তারা।

তাদের দাবি— কেউই নারী আম্পায়ার নিয়ে কোনো আপত্তি তুলেননি। তারা জেসির অভিজ্ঞতা নিয়ে সংশয়ে ছিলেন। পরে ঘটনার আদ্যোপান্ত জানান বিসিবির আম্পায়ার্স কমিটির চেয়ারম্যান ইফতেখার রহমান মিঠু। এবার বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করলেন বিসিবির পরিচালক ও আবাহনীর কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন। 

সুজনের মতে বড় ম্যাচে অভিজ্ঞ আম্পায়ার নির্বাচন করা প্রয়োজন অবশ্যই। তিনি বলেন, ‘বড় খেলায় আমি সবসময় মনে করি আপনাকে এমন একজন আম্পায়ার দেওয়া উচিত যার অভিজ্ঞতা আছে, মাঠের প্রেশারটা কিন্তু অনেক বড়। যদিও আজকালকার ক্রিকেটে সেই বিগত আবাহনী-মোহামেডানের সেই প্রেশার নাই। তারপরও বড় দল খেলছে, জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা খেলছে। আপনাকে এমন একজন আম্পায়ার দিতে হবে যার প্রতি খেলোয়াড়দের রেসপেক্টটা থাকে।’

আলোচিত ম্যাচটিতে শুরুতে বিতর্ক ছিল মুশফিককে আউট দেওয়া নিয়ে।

সাবেক নারী ক্রিকেটার জেসি ভালো আম্পায়ার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করলেও এখনও প্রিমিয়ার লিগের বড় ম্যাচের অভিজ্ঞতা হয়নি বলে দাবি সুজনের। বলেন, ‘যিনি আম্পায়ারিং করেছেন, সে খুব ভালো আম্পায়ার। বাংলাদেশের হয়ে ভবিষ্যতে খুব ভালো করবে। সে জাতীয় দলের সাবেক খেলোয়াড়। সবমিলিয়ে তার একটা ব্রাকগ্রাউন্ড আছে ক্রিকেটে অবশ্যই। কিন্তু আম্পায়ার হিসেবে তার অভিজ্ঞতাটা আমার মনে হয় না প্রিমিয়ার লিগের এত বড় ম্যাচে করার মতো।‘

তিনি আরও যোগ করেন, যদি আমার মত দিই, আমার মতে প্রিমিয়ার লিগের এত বড় একটা প্রেশার ম্যাচে আমার মনে হয় যে আরেকটু বিচক্ষণ হতে হবে আম্পায়ার কারা করছে দেখতে হবে। আমাদের দেশে এতো অভিজ্ঞ আম্পায়ার থাকতে কেন জেসিকে প্রয়োজন হলো আম্পায়ারিং দেওয়ার ওই ম্যাচটাতে আমি জানি না।

এর আগে জেসির অভিজ্ঞতার ঘাটতির বিষয়টি উড়িয়ে দেন আম্পায়ার্স কমিটির চেয়ারম্যান ইফতেখার রহমান মিঠু। তিনি বলেন, ‘ম্যাচে কেন একটা অনভিজ্ঞ আম্পায়ার দিয়েছি? জেসি কিন্তু অনভিজ্ঞ আম্পায়ার না। জেসি প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় শ্রেণি করে, সর্বশষে ইমার্জিং এশিয়া কাপ, তারপর ভারতে সিনিয়র প্লেয়ারদের যে টুর্নামেন্ট সেসব করে, সর্বশেষ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে করেই কিন্তু আমরা তাকে দিয়েছি।’

সাথিরা জাকির জেসিকে এমন ম্যাচে আম্পায়ারিং দেওয়া নিয়েও ব্যাখ্যাও দিয়েছেন তিনি, ‘আর আমরা এসব গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে দিচ্ছি, সামনে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আছে। আমরা আমাদের নারী আম্পায়ারদের তৈরি করতে চাই, যাতে বিশ্বকাপে আইসিসি এদেরও কিছু ম্যাচ দেয়। তারাও (আইসিসি) দেখছে, ওরা কোথায়, কী করছে। এখন আমি যদি এদের লিস্ট ‘এ’ ম্যাচে আম্পায়ারিং না করাই বাংলাদেশে, তাহলে হবে না। সেই ভিত্তিতে আমরা…। মেয়ে বলেন, ছেলে বলেন নতুন প্রজন্মে পাইপলাইন তৈরি করার চেষ্টা করছি।’

এসএইচ/এফআই