ব্যাট হাতে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ মাঠে নামলেই যেন চার ছক্কার বন্যা বইছে আইপিএলের মাঠে। চলতি আসরেই দুই দফায় আইপিএলের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়েছে এই দলটি। প্রথমবার ২৭৭ করেছিল ট্রাভিস হেড-হেনরিখ ক্লাসেনরা। এরপর সেটাকেই তারা টপকে করেছে ২৮৭ রান। সবশেষ গতকালের ম্যাচে করেছে পাওয়ারপ্লেতে টি-টোয়েন্টি ইতিহাসের সর্বোচ্চ স্কোর। 

এবারের আইপিএলে বেশকিছু রেকর্ড নিজেদের করে নিয়েছে হায়দরাবাদ। হেনরিখ ক্লাসেন, ট্রাভিস হেড, এইডেন মার্করামদের মতো প্রতিষ্ঠিত বিদেশিরা তো আছেনই, সঙ্গে ভারতের অভিষেক শর্মা, নিতীশ রেড্ডি, শাহবাজ আহমেদ বা আব্দুস সামাদরাও আছেন দুর্দান্ত ছন্দে। কিন্তু এতকিছুর মাঝে আড়ালে আছেন হায়দরাবাদের ব্যাটিং কোচ হেমাঙ্গ বাদানি।

এবারের আইপিএলে হায়দরাবাদের এমন বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের জন্য অনেকটা কৃতিত্ব এই সাবেক ভারতীয় ব্যাটারের। ব্যাটিং কোচ হিসেবে বাদানি দেখভাল করছেন ২০১৬ আসরের চ্যাম্পিয়নদের। গেলবার ব্রায়ান লারা কোচ হয়ে যা পারেননি, খানিকটা অপরিচিত বাদানি খুব সহজেই তা করে দেখিয়েছেন।

খেলোয়াড় হেমাঙ্গ বাদানি

 হেমাঙ্গ বাদানির আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ার খুব একটা লম্বা নয়। টেস্ট খেলেছেন চারটি। আর ওয়ানডে মোটে ৪০টি। মিডল অর্ডারের স্বীকৃত ব্যাটার হলেও অভিষেক হয়েছিল ওপেনার হিসেবেই। চার টেস্টের ক্ষুদ্র ক্যারিয়ারে খুব বড় কিছু করা হয়নি। ৭ ইনিংসে ৯৪ রানে শেষ হয়েছে বাদানির টেস্ট ক্যারিয়ার। 

ওয়ানডেতে অবশ্য বাদানির ক্যারিয়ার নেহায়েত মন্দ না। ৪০ ম্যাচে ৩৬ বার ব্যাট করার সুযোগ পেয়েছেন। তাতে করেছেন ৮৬৭ রান। করেছেন ১ সেঞ্চুরি এবং ৪ ফিফটি। সেঞ্চুরিটাও করেছেন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। চার ফিফফটির ৩টিই ছিল সেই সময়ের শক্তিশালী জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। অপর ফিফটি করেছিলেন অজিদের বিপক্ষেই। 

কোচ হিসেবে বেশ সফল বলা চলে বাদানিকে

ক্রিকেট ক্যারিয়ার খুব একটা লম্বা হয়নি। ২০০০ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডে দিয়ে শুরু। ২০০৪ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলেছেন শেষ ম্যাচ। ২০০৭ সালে বিতর্কিত ইন্ডিয়ান ক্রিকেট লিগ (আইসিএল) এর দল চেন্নাই সুপারস্টার্সের হয়ে নাম লেখান। 

২০০৯ সালে আইসিএল থেকে সরে আসেন। চেন্নাই সুপার কিংসে চুক্তি করেছিলেন। তবে সেখানে কোনো ম্যাচ খেলা হয়নি। ২০১৩ সালে খেলোয়াড়ি জীবন শেষ করেন বাদানি। এরপর তামিলনাড়ু প্রিমিয়ার লিগে কোচ হিসেবে যাত্রা শুরু করেন তিনি। চারবার জিতেছেন এই আসরের শিরোপা। আইএল টি-টোয়েন্টিতে ছিলেন দুবাই ক্যাপিটালসের হয়ে। সেই দায়িত্বে আছেন এখনও। 

তবে সবচেয়ে বেশি আলো পেয়েছেন সানরাইজার্স হায়দরাবাদের কোচ হিসেবে। যদিও শুরুতে নিয়োগ পেয়েছিলেন ফিল্ডিং কোচ হিসেবে। লঙ্কা প্রিমিয়ার লিগে জাফনা কিংসের হয়েও শিরোপা পেয়েছেন। এসএ টি-টোয়েন্টিতে সানরাইজার্স ইস্টার্ন কেপের হয়েও পেয়েছেন শিরোপা। সবখানে শিরোপার স্বাদ পাওয়া এই কোচ এবার হয়ত অপেক্ষা করছেন আইপিএল শিরোপার জন্য।   

জেএ