একটি পুরনো মামলায় পৃথ্বী শ'র বিরুদ্ধে পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে মুম্বইয়ের এক আদালত। আইপিএলের মাঝেই দিল্লি ক্যাপিটালসের এই ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, অভিনেত্রী স্বপ্না গিল পৃথ্বীর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করেছিলেন সেই মামলাতেই পুলিশকে আবার তদন্ত শুরু করার নির্দেশ দিয়েছে মুম্বইয়ের মেট্রোপলিটন আদালত। বিচারক নির্দেশ দিয়েছেন, ১৯ জুনের মধ্যে তদন্ত শেষ করে রিপোর্ট জমা দিতে হবে। পৃথ্বীর বিরুদ্ধে প্রথমে এফআইআর না করায় পুলিশের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করারও আবেদন করেছিলেন স্বপ্না। সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছে আদালত।

গত বছর ১৫ ফেব্রুয়ারি রাতে সান্তাক্রুজ়ের এক বিলাসবহুল রেস্তরাঁয় কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে নৈশভোজে গিয়েছিলেন ভারতীয় ক্রিকেটার পৃথ্বী। সেখানে বেশ কিছু ভক্ত তার সঙ্গে সেলফির আবদার করেন। তাদের মধ্যে কয়েক জনের আবদার মেটান পৃথ্বী। একের পর এক আবদার আসতে থাকায় কিছুটা বিরক্ত হয়ে সেলফি তুলতে অস্বীকার করেন তিনি। রেস্তরাঁর ম্যানেজার সেই ভক্তদের বাইরে বের করে দিলে রাগের চোটে বেসবল ব্যাট দিয়ে পৃথ্বীর গাড়ির কাচ ভেঙে দেন তারা। এরপর এই ক্রিকেটারের এক বন্ধু থানায় অভিযোগ জানায়। সেখানেই উঠে আসে ভোজপুরী অভিনেত্রী স্বপ্নার নাম। তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

অন্যদিকে, পৃথ্বী’র বিরুদ্ধে ‘নির্যাতন’-এর অভিযোগ করেন স্বপ্না। আদালতে তিনি দাবি করেন, ‘'আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা সত্যি নয়। বরং পৃথ্বীই আমার বুকে ও হাতে মেরেছেন।' পুলিশি হেফাজতের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর প্রথমে ১৪ দিনের বিচার বিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয় ভোজপুরী অভিনেত্রীকে। পৃথ্বীকে শারীরিক ভাবে হেনস্থার ঘটনায় আরও তিন জনকে ১৪ দিন বিচার বিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দেন মেট্রোপলিটন আদালতের বিচারক।

প্রথমে তাদের জামিনের যে আবেদন করা হয়, তাতে কিছু অসঙ্গতি থাকায় খারিজ করে দেন বিচারক। পরে আবার জামিনের জন্য আবেদন করেন স্বপ্নার আইনজীবী। তার মক্কেলের বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন তিনি। দু’পক্ষের আইনজীবীদের শুনানি শেষে জামিন মঞ্জুর করেন বিচারক। জামিন পান অভিনেত্রী।

তার পরেই পৃথ্বীর বিরুদ্ধে ১০ ধারায় মামলা দায়ের করেন তিনি। তার মধ্যে শ্লীলতাহানি ও মারধরের অভিযোগও ছিল। সেই সব অভিযোগ অসত্য বলে জানায় মুম্বই পুলিশ। তদন্তের পরে রিপোর্ট জমা দেয় তারা। বিমানবন্দর থানার পুলিশের রিপোর্টে বলা হয়, স্বপ্নার অভিযোগ অনুযায়ী পৃথ্বীর বিরুদ্ধে তদন্ত করে কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। যে রেস্তরাঁয় এই ঘটনা ঘটেছিল সেখানকার কর্মীদের বয়ান রেকর্ড করেছে পুলিশ।

কর্মীরা জানিয়েছেন, ঘটনার দিন পৃথ্বী শুধুমাত্র স্বপ্না ও তার বন্ধুদের ছবি তুলতে নিষেধ করেছিলেন। কোনও রকম খারাপ কথা বলেননি। উল্টে স্বপ্না ও তার বন্ধু শোবিত ঠাকুর অনেক খারাপ কথা বলেন পৃথ্বীকে। এমনকি তাকে হুমকিও দেন বলে জানিয়েছেন কর্মীরা। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থলে উপস্থিত রেস্তরাঁ কর্মীদের বয়ান থেকে স্পষ্ট যে পৃথ্বী নির্দোষ। যদিও সেই মামলায় পুলিশকে আবার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।

এইচজেএস