প্রথমবারের মতো আইপিএলে খেলতে নেমে একের পর এক গতির রেকর্ড গড়ছেন লখনৌ সুপার জায়ান্টসের পেসার মায়াঙ্ক যাদব। নিজের অভিষেক ম্যাচেই পাঞ্জাব কিংসের বিপক্ষে ঘণ্টায় ১৫৫.৮ কিলোমিটার গতিতে বল করেছিলেন। যা চলতি আসরের সর্বোচ্চ গতির রেকর্ড। নিজের গড়া সেই রেকর্ড মায়াঙ্ক নিজেই ভেঙে দিয়েছেন। গতকাল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে তার একটি ডেলিভারি ছিল ১৫৬.৭ কিলোমিটার গতির।

ফলে ২১ বছর বয়সী পেসার আসরের সর্বোচ্চ গতির রেকর্ডেফের  নতুন করে নাম তুললেন। কেবল আইপিএলের সপ্তদশ আসরই নয়, মায়াঙ্ক ঢুকে গেছেন আইপিএলের সর্বোচ্চ রেকর্ডধারী বোলারদের তালিকায়ও। লখনৌর তরুণ এই পেসারের আগে কেবল তিনজন গতিমান বোলারের নাম রয়েছে। যেখানে সবার শীর্ষে আছেন সাবেক অস্ট্রেলিয়ান পেসার শন টেইট।

এখন পর্যন্ত আইপিএলে কেবল দুটি ম্যাচ খেলেছেন মায়াঙ্ক। তবে মাঠের ক্ষণিক এই উপস্থিতিতেই তিনি নিজের কার্যকারীতা জানান দিয়েছেন। নিজের অভিষেক ম্যাচে কেবল গতির রেকর্ডই গড়েননি, ২৭ রান খরচায় তিনটি উইকেটও শিকার করেন মায়াঙ্ক। এরপর গতকাল বেঙ্গালুরুর বিপক্ষেও সমান তিন উইকেট নিয়েছেন, বিনিময়ে খরচ করেছেন মাত্র ১৪ রান। ফলে টানা দুই ম্যাচেই ম্যাচসেরা পুরস্কার উঠেছে তরুণ এই পেসারের হাতে।

আইপিএলে নিজের প্রথম দুই ম্যাচেই টানা ম্যাচসেরা হওয়ার কীর্তি গড়লেন মায়াঙ্ক। তবে এটিকে কেবলই শুরু বলে উল্লেখ করেছেন গতির ঝড় তোলা এই তরুণ, ‘দুটি ম্যাচেই ম্যাচসেরা হতে পেরে আসলেই অনেক খুশি, তবে তারচেয়েও বেশি আনন্দ দুই ম্যাচেই দল জেতায়। আমার লক্ষ্য যত বেশি সম্ভব নিজের দেশের জন্য ভালো কিছু করা। এটি মাত্র শুরু এবং আমার পুরো মনোযোগ প্রধান সেই লক্ষ্যের দিকে।’

বেঙ্গালুরুর অজি ব্যাটার ক্যামেরন গ্রিনের উইকেটটি সবচেয়ে পছন্দের বলে জানিয়েছেন মায়াঙ্ক। বলের গতি বুঝতে না পেরে আউটসাইড এজ হয়ে বোল্ড হয়েছেন গ্রিন, স্টাম্প উড়িয়ে দিয়ে পরবর্তীতে সেই বল এক বাউন্স খেয়ে আচড়ে পড়ে সীমানা দড়ির ওপারে। এমন গতিময় বলের অভ্যাস কীভাবে তৈরি করেছেন, সেটিও জানিয়েছেন লখনৌর এই পেসার। মায়াঙ্ক বলেন, ‘ধারাবাহিকভাবে এমন গতিতে বল করার জন্য কয়েকটি বিষয় মেনে চলতে হয়– ডায়েট (পরিমিত খাবার), ঘুম ও প্রশিক্ষণ। দ্রুতগতির বল করতে হলে প্রতিদিনই এই তিনটি বিষয় অনুসরণ করতে হয়। ডায়েট এবং রিকভারির দিকে (যেমন বরফ দিয়ে গোসল) আমি বেশ মনোযোগী।’

আইপিএলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ গতিতে বল করার রেকর্ড রয়েছে শন টেইটের। সাবেক এই অজি স্পিডস্টার ২০১১ আইপিএলে ১৫৭.৭১ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টার একটি ডেলিভারি করেন। সেটাই এখন পর্যন্ত ভারতীয় এই ফ্র্যাঞ্চাইজির ইতিহাসে সবচেয়ে দ্রুতগতির বল। দ্রুতগতির বোলারের তালিকায় দুই নম্বরে আছেন নিউজিল্যান্ডের লকি ফার্গুসন। ২০২২ আইপিএলে ফার্গুসন ১৫৭.৩ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টার একটি ডেলিভারি করেছিলেন। এছাড়া ভারতীয়দের মধ্যে আইপিএলে সবচেয়ে জোরে বল করার রেকর্ড রয়েছে উমরান মালিকের। তিনি ২০২২ আইপিএলে ১৫৭ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টার একটি ডেলিভারি করেন। যা নিয়ে সবমিলিয়ে তার অবস্থান তিনে। এরপরই নাম তুলেছেন মায়াঙ্ক।

আইপিএল ইতিহাসের দ্রুততম ডেলিভারি :

১. শন টেইট- ১৫৭.৭১ কিলোমিটার (২০১১)
২. লকি ফার্গুসন- ১৫৭.৩ কিলোমিটার (২০২২)
৩. উমরান মালিক- ১৫৭ কিলোমিটার (২০২২)
৪. মায়াঙ্ক যাদব- ১৫৬.৭ কিলোমিটার (২০২৪)
৫. এনরিখ নরকিয়া- ১৫৬.২২ কিলোমিটার (২০২০)
৬. উমরান মালিক- ১৫৬ কিলোমিটার (২০২২)
৭. মায়াঙ্ক যাদব- ১৫৫.৮ কিলোমিটার (২০২৪)

এএইচএস