ক্রাইস্টচার্চের উত্তাপ ছড়ানো ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার জয়
নিউজিল্যান্ডের বাউন্সি পিচে রানের বন্যা হবে, সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের টেস্ট সিরিজের পুরোটা সময় দেখা গেল বোলারদের আধিপত্য। আগের টেস্ট অস্ট্রেলিয়া জিতেছিল হেসেখেলে। তবে ক্রাইস্টচার্চে দেখা গেল টেস্ট ক্রিকেটের মাহাত্ম্য। ২৭৯ রানের মাঝারি সংগ্রহের পিছনে ছুটতে গিয়ে অস্ট্রেলিয়া হয়েছে নাজেহাল।
তবে শেষ পর্যন্ত নায়ক হয়ে রইলেন অ্যালেক্স ক্যারি। সেঞ্চুরির খুব কাছে ৯৮ রান পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটার। কিন্তু, যে জয় অস্ট্রেলিয়া পেয়েছে তার কাছে সেঞ্চুরি না পাওয়ার আক্ষেপ খুব একটা বড় হওয়ার কথা না। এই ম্যাচেও ক্যারির অপরপাশে সঙ্গ দিয়েছেন প্যাট কামিন্স। ঠিক যেমনটা বিশ্বকাপে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের ইনিংসে দিয়েছিলেন।
বিজ্ঞাপন
ক্রাইস্টচার্চ টেস্ট জিততে অস্ট্রেলিয়ার দরকার ছিল আরও ২০২ রান এবং নিউজিল্যান্ডের প্রয়োজন ৬ উইকেট। এমন অবস্থা থেকেই দিনের সেরা খেলা শুরু হয়। স্কোরবোর্ডে যখন এই অবস্থা, কিউইদেরই এগিয়ে রাখছিলেন অনেকেই। তবে ইতিহাস পক্ষে ছিল অস্ট্রেলিয়ার। ১৯৯৩ সালের নভেম্বর থেকে এই টেস্টের আগ পর্যন্ত খেলা ৩২ ম্যাচের ২৪টিতেই হেরে গেছে নিউজিল্যান্ড। জয় পেয়েছে মাত্র একটি। সেটাও ২০১১ সালের ডিসেম্বরে।
আগের দিনের সঙ্গে মাত্র ৩ রান যোগ করতেই ট্রাভিস হেডের উইকেট হারায় অজিরা। স্বাগতিক কিউইরা স্বপ্ন দেখতে থাকে ভাল কিছুর। কিন্তু অ্যালেক্স ক্যারি আর মিচেল মার্শ খেললেন দুর্দান্ত এক পার্টনারশিপ। দুজনেই ছিলেন ধীরগতির। কিন্তু, বাজে বল পেলে সীমানাছাড়া করতে ভুল করেননি। আবার বল আকাশে তুলতেও চাননি।
ঠিক ঠিক ২৭ ওভার পর ব্রেকথ্রু পায় নিউজিল্যান্ড। সাজঘরে ফেরেন ৮০ রান করা মিচেল মার্চ। পরের বলেই বেন সিয়ার্স তুলে নেন মিচেল স্টার্ককে। ২২০ রানে জোড়া উইকেট শিকারের পর কিছুটা হলেও আত্মবিশ্বাস ছিল কিউইদের মাঝে। তবে কামিন্স এসে ভেস্তে দিলেন সব পরিকল্পনা।
৪৪ বলে কামিন্সের ৩২ রান ছিল পুরো অজিদের জয়ের বড় সহায়ক। অপরপ্রান্তে থাকা ক্যারিও শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিল ৯৮ রানে। আগের দিনে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং বিপর্যয় সামাল দিয়ে দলকের জয়ের ভিত গড়ে দিয়েছিলেন। ম্যাচ শেষে সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারটাও তাই গিয়েছে তারই হাতে।
এর আগে অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংস শেষে ৯৪ রানের লিড পায়। মার্নাস ল্যাবুশেনের ৯০ রান তাদের এগিয়ে দেয় অনেকটাই। তবে দ্বিতীয় ইনিংসে দারুণভাবে কামব্যাকের চেষ্টা চালায় কিউইরা। সফলও হয় তাতে। টম ল্যাথাম, কেন উইলিয়ামসন, রাচীন রবীন্দ্র এবং ড্যারেল মিচেলের অর্ধশতকের সুবাদে ৩৭২ রান স্কোরবোর্ডে জমা করে কিউইরা।
ন্যাথান লায়নের তিন উইকেট এবং প্যাট কামিন্সের চার উইকেটে ৪০০ এর আগেই থামতে হয় কিউইদের। অস্ট্রেলিয়ার সামনে টার্গেট দাঁড়ায় ২৭৯। সেই পথটাও কিছুটা কঠিন হয়ে উঠেছিল শুরুর বিপর্যয়ে। শেষ পর্যন্ত অবশ্য মিচেল মার্শ এবং অ্যালেক্স ক্যারির সুবাদে জয় পায় অজিরা।
এই ম্যাচে জয়ের পরেও বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে তিনেই থাকতে হচ্ছে অস্ট্রেলিয়াকে। স্লো ওভার রেটের কারণে ১০ পয়েন্ট হারিয়ে বিপাকে আছে তারা। আর পাঁচ ম্যাচে ৩ জয় নিয়ে তালিকায় দুইয়ে থাকছে নিউজিল্যান্ড।
জেএ