ক্রিকেট ক্যারিয়ারের চূড়ান্ত সীমানায় দাঁড়িয়ে আছেন মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। দেশের ক্রিকেটের বড় দুই তারকার রয়েছে আত্মীয়তার সম্পর্কও। দুজন এবার বিপিএলে ফরচুন বরিশালের হয়েও একসঙ্গে খেলেছেন। আর সেই সুবাদেই নিশ্চিত করেছেন নিজেদের প্রথম বিপিএল শিরোপা। দেশের পঞ্চপাণ্ডব ক্রিকেটারদের মধ্যে কেবল মুশফিক-রিয়াদের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আক্ষেপ ছিল। আজ সেই খরা তারা ঘুচিয়ে নিয়েছেন।

বিপিএলের সবচেয়ে সফল দল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে হারিয়ে দশম আসরের শিরোপা উৎসবে মেতেছে বরিশাল। যা তাদেরও প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কীর্তি। তিনবার ফাইনাল খেললেও তাদের সর্বোচ্চ সাফল্য পাওয়া হচ্ছিল না। তামিমের হাত ধরে প্রথমবার ফরচুনরা সেই খরা ঘুচিয়েছে। টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৫৪ রান তোলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। যা বরিশাল ৬ বল এবং ৬ উইকেট হাতে রেখেই পেরিয়েছে।

দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৬ রান এসেছে কাইল মেয়ার্সের ব্যাট থেকে। তাছাড়া ৩৯ রান করেছেন অধিনায়ক তামিম। কুমিল্লার হয়ে দুটি করে উইকেট শিকার করেছেন মুস্তাফিজুর রহমান ও মঈন আলি। জিততে না পারলেও, মাথায় আঘাত সেরে ফেরা ফিজের ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স টাইগার ভক্তদের জন্য স্বস্তির বিষয়!

এর আগে বিপিএলের মঞ্চে রিয়াদ-মুশফিক দুজনেই ছিলেন বেশ দুর্ভাগা। দশ মৌসুমে আটবার দলবদল করেও ঘরোয়া ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় এই শিরোপা জেতা হয়নি দুই টাইগার তারকার। এর মাঝে বেশ কয়েকবার অধিনায়কও হয়েছেন তারা। মুশফিকের তুলনায় অবশ্য মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দলবদল ঘটেছে কম। ছয়বার দল বদলেছেন তিনি। 

পঞ্চপাণ্ডবের মাঝে মাশরাফি বিন মর্তুজা, সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল শিরোপা পেলেও মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ কখনোই আগে বিপিএলের শিরোপা পাননি। দুই ভায়রা–ভাইয়ের এমন শিরোপাখরা এবার ঘুচিয়েছে বরিশাল। কাগজে-কলমে এবার বেশ শক্তিশালী দল গড়েছিল ফরচুন বরিশাল। অভিজ্ঞ ও তরুণদের মিশেল যেমন ছিল, তেমনি ছিল দেশি-বিদেশিদের দারুণ সমন্বয়।

২০১২ সালে বিপিএলের অভিষেক আসরে দুরন্ত রাজশাহীতে ছিলেন মুশফিকুর রহিম। এরপর ২০১৩ এবং ২০১৫ সালে ছিলেন সিলেটে। সিলেট রয়্যালস এবং সিলেট সুপার সিক্সার্স নামে খেলেও নিজের ভাগ্য বদল করা হয়নি মুশফিকের। এরপর ২০১৬ সালের বরিশাল বুলসে এসেছেন। এসময় পর্যন্ত শিরোপা পেয়েছিল ঢাকা এবং কুমিল্লা ফ্র্যাঞ্চাইজি। 

২০১৭ সালে মুশফিক আবার ফিরে যান রাজশাহীতে। ২০১৯ সালে পা রাখেন চট্টগ্রাম ভাইকিংসের ডেরায়। ২০১৯-২০ বিপিএল এবং ২০২২ বিপিএলে মুশফিক ছিলেন খুলনা টাইগার্সের অংশ। ২০২৩ সালে আবার ফিরে যান সিলেটে। সেবারই শিরোপার সবচেয়ে কাছে গিয়েছেন মুশি। যদিও ফাইনালে কুমিল্লার কাছে হারতে হয়েছে তাকে। মাঝে ২০২০-২১ সালে বঙ্গবন্ধু টি-২০ কাপে ছিলেন বেক্সিমকো ঢাকায়। সেখানেও ব্যর্থ হয়েছিলেন মুশফিক। 

অন্যদিকে মাহমুদউল্লাহ ২০১২ এবং ২০১৩ মৌসুম খেলেছেন চিটাগাং কিংসের জার্সিতে। এরপর ২০১৫ বিপিএল বরিশাল বুলসে কাটিয়ে তিন মৌসুমের জন্য চলে যান খুলনায়। ২০১৯-২০ মৌসুমে আবার এসেছিলেন চট্টগ্রামে। এরপর ২০২২ সালে মিনিস্টার গ্রুপ ঢাকায়। সবশেষ দুই আসর আবার খেলছেন ফরচুন বরিশালের হয়ে।

এএইচএস