জেওফ্রি বয়কট আর নাসের হুসেইন। দুইজন দুই প্রজন্মের প্রতিনিধি। ইংলিশ ক্রিকেটে নতুন দুটো যুগের শুরু করেছিলেন এই দুজন। বয়কট ইংল্যান্ডকে টেস্ট ক্রিকেটে সময়ের সেরা দল করে তুলেছিলেন। অন্যদিকে নাসের হুসেইন এমন সময়ে ইংলিশ ক্রিকেটের হাল ধরেছিলেন, যখন ক্রিকেটের আদি পিতারা হারাতে বসেছিল তাদের গৌরবময় দিন। 

সেই জেওফ্রি বয়কট এবং নাসের হুসেইন এবার দাঁড়িয়ে বিপরীতমুখী অবস্থানে। বয়কট নিজে খেলেছেন সনাতনী ধারার ক্রিকেট। ইংলিশ ক্রিকেটের বর্তমান বাজবল ঘরানার সঙ্গে একেবারেই বিপরীত অবস্থান তার। অন্যদিকে নাসের সমর্থন করছেন আধুনিক ধারার এই বাজবলকে। 

ঘটনার সূত্রপাত ভারতের বিপক্ষে রাঁচি টেস্ট হারের পর। গত ৭ সিরিজে ইংলিশদের প্রথম হার এসেছে এবারেই। এরমাঝে হারতে হয়েছে টানা তিন ম্যাচ। স্বাভাবিকভাবেই বিষয়টি পছন্দ হয়নি বয়কটের। ক্ষ্যাপাটে এই ক্রিকেটার সরাসরিই বলেছেন, আক্রমণাত্মক মানসিকতা থাকা বাঞ্ছনীয়। কিন্তু তাতে যদি নিজেদের পক্ষে ফল না আসে, তা হলে সেই ঘরানার ক্রিকেট থেকে সরে আসাই বুদ্ধিমানের কাজ।

ইংলিশ ক্রিকেটের সর্বকালের সেরা এই ওপেনারের সঙ্গে অবশ্য একমত নন বর্তমান অধিনায়ক বেন স্টোকস। সরাসরিই বলেছেন এমন কথা তার বোধগম্য হচ্ছে না, ‘সাবেকদের কেউ কেউ আসলে কোন বিষয়টাকে আগ্রাসন বলে বোঝাতে চাইছেন, সেটা আমার মাথায় ঢুকছে না। প্রত্যেকটি দল নিজের সেরা শক্তি নিয়ে মাঠে নেমে কাঙ্ক্ষিত ফল অর্জন করতে চায়। যখন আমরা এমন ঘরানার ক্রিকেট খেলে সফল হয়েছি, সকলেই বলেছেন দল দুর্দান্ত খেলছে। আজ সিরিজ় হারতেই তারা ভিন্ন এক সুরে কথা বলছেন! আমি সত্যিই বিস্মিত।’’

রাঁচি টেস্টের আগে মোটাদাগে ব্যর্থ ছিলেন জো এউট। এবারে শতরান করার পরেও জো রুট জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে তিনি বাজবল ক্রিকেটই খেলে যাবেন। এমনকি সেঞ্চুরি রিভার্স সুইপে করতে চেয়েছেন, এমন কথাও বলেছেন তিনি। তাতেও চটেছেন বয়কট। বলেছেন, ‘’রুট যখন আদর্শ টেস্ট মেজাজে ব্যাট করেছে, দারুণ সব শতরান করেছে। তা হলে ও কেন সেই রাস্তা থেকে আবার সরে যেতে চাইছে?’ 

তবে বয়কটের এসব মন্তব্যকে পাত্তা দিচ্ছেন না আরেক সাবেক গ্রেট নাসের হুসেইন। এখনো আক্রমণাত্মক ধারার বাজবল খেলা দেখতেই স্বস্তি তার, ‘ভারতের কাছে হারে কোনও লজ্জা নেই। কিন্তু বাজবলকে ছুড়ে ফেলে দেওয়ার সময় এখনও আসেনি। গত ১৮ মাসে এই নতুন ক্রিকেট সকলকে দারুণ আনন্দ দিয়েছে। স্টোকস-ম্যাকালাম জুটির এটা প্রথম সিরিজ হার হলেও ভবিষ্যতের জন্য এখনও চমক অপেক্ষা করছে।’

জেএ