পাকিস্তান সুপার লিগের (পিএসএল) গত দুই আসরের চ্যাম্পিয়ন লাহোর কালান্দার্স এবার যাচ্ছেতাই পরিস্থিতিতে পড়েছে। চলমান নবম আসরে শাহিন আফ্রিদির দলটি এখন পর্যন্ত জয়ের মুখ দেখেনি। গতকাল মুলতান সুলতান্সের কাছে লাহোর ৬০ রানে হেরেছে। ম্যাচটিতে প্রথম কোনো স্পিনার হিসেবে ৬ উইকেট শিকারের ইতিহাস গড়েছেন মুলতানের উসামা মির। অন্যদিকে, টানা ষষ্ঠ হার টুর্নামেন্টটি থেকে প্রায় ছিটকে দিয়েছে শাহিনদের!

লাহোরে গতকালের ম্যাচটি ছিল আয়োজকদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ‌। এই ম্যাচের আগে পরপর পাঁচটি ম্যাচে কালান্দার্সকে হারতে হয়েছিল। ফলে এই ম্যাচে তারা জয়ের খরা কাটাতে মরিয়া ছিল। তবে মুলতান সুলতান্সের হয়ে এদিন বল হাতে অন্য চিন্তা-ভাবনা ছিল উসামা মিরের। তার দুরন্ত বোলিং স্পেল পার্থক্য গড়ে দিল দুই দলের। যদিও তাদের জয়ের প্রথম ভিতটা গড়ে দিয়েছিলেন ব্যাটসম্যানরা। চলতি পিএসএলের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ ২১৪ রান নেয় মুলতান।

তাদের হয়ে মাত্র ৫৫ বল খেলে ৯৬ রান করেন উসমান খান। তার ইনিংসটি সাজানো ছিল ১১ চার এবং দুই ছয়ে। শেষদিকে ঝোড়ো ব্যাটিং করে তাকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন ১৮ বলে ৪০ রান করা ইফতিখার আহমেদ। এর আগে ওপেনিংয়ে রেজা হেনড্রিকস ২৭ বলে ৪০ রান করেন। তাদের দেওয়া ২১৫ রানের লক্ষ্য তাড়ায় লাহোর মাত্র ১৫৪ রানে গুটিয়ে যায়। যা চলতি আসরে ষষ্ঠ ম্যাচ শেষে তাদের শতভাগ হার। সমান ম্যাচে পাঁচ জয়ে শীর্ষে আছে মোহাম্মদ রিজওয়ানের মুলতান।

শাহিনদের অল্পতে গুটিয়ে দেওয়ার পেছনে মূল অবদান ছিল লেগস্পিনার উসামার। পিএসএলের ইতিহাসে প্রথম কোনো স্পিনার হিসেবে তিনি ৬ উইকেট শিকারের নজির গড়লেন। যদিও তিনি ছিলেন বেশ খরুচে, ইতিহাস গড়ার ম্যাচে তিনি দিয়েছেন ৪০ রান। তবে সবমিলিয়ে এটি পিএসএলের চতুর্থ সেরা বোলিং ফিগার। এর আগে পিএসএলে তিনজন বোলার ৬ উইকেট পেয়েছেন, যাদের সবাই ছিলেন পেসার। তারা হচ্ছেন— রবি বোপারা (১৬/৬, ২০১৬), ফাহিম আশরাফ (১৯/৬, ২০১৯) ও উমর গুল (২৪/৬, ২০১৮)।

মায়ের সঙ্গে উসামা মির

উসামার ইতিহাস গড়ার ম্যাচটি মাঠে বসে দেখেছেন তার মা। ম্যাচ শেষে ছেলে-মায়ের জড়িয়ে ধরার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ভাইরাল হয়ে যায়। এমন স্মরণীয় মুহূর্তের অনুভূতি জানিয়ে উসামা বলেন, ‘প্রথমবারের মতো মা আমার কোনো ম্যাচ দেখতে মাঠে এসেছিলেন। আমি নার্ভাস ছিলাম, কিন্তু তিনি আমার জন্য দোয়া করেছেন এবং আমি ৬ উইকেট পেলাম। মায়ের দোয়ায় আমি ক্যারিয়ারের সেরা বোলি ফিগার অর্জন করতে পেরেছি।’

এএইচএস