শেষ হয়েছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ বিপিএলের দশম আসরের লিগ পর্বের খেলা। প্রথম পর্বের খেলা শেষে প্লে-অফের টিকিট কেটেছে রংপুর রাইডার্স, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স, ফরচুন বুরিশাল এবং চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। উড়ন্ত সূচনার পর খেই হারিয়েছে খুলনা টাইগার্স। আবার টানা ১১ হারে বিপিএল ইতিহাসে লজ্জার রেকর্ড গড়েছে সিলেট স্ট্রাইকার্স। 

একমাসের লম্বা এই বিপিএলে আলোচিত পারফর্মার নেহায়েত কম না। যদিও এবার উঠতি তারকার দেখা মেলেনি সেই অর্থে। বরং তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসান, তাওহিদ হৃদয়দের মত পরিচিত তারকারাই পারফরম্যান্সে আলো ছড়িয়েছেন।

তারমাঝেও চট্টগ্রামের তানজিদ তামিম কিংবা কুমিল্লার জাকের আলী অনিকের ব্যাটিং মন কেড়েছে। আবার দল ব্যর্থ হলেও বল হাতে দুর্দান্ত ছিলেন ঢাকার শরিফুল ইসলাম। টুর্নামেন্টের সেরার দৌড়ে যদিও শরিফুল নেই। তবে ব্যাটিং তালিকার শীর্ষে থাকা তিনজন আছেন বিবেচনায়।  

সাকিব এবং তামিম দুজনেই আছেন সেরার তালিকায়

সাকিব আল হাসান 

সাকিবের জন্য এবারের আসরটা বলা চলে মিশ্র। চোখের সমস্যার কারণে টুর্নামেন্টের শুরুর দিকে দুই ম্যাচে ব্যাটই করেননি। আবার তিন ম্যাচে ছিলেন সুপার ফ্লপ। কিন্তু এরপরেই যেন ছন্দে বাংলাদেশের এই অলরাউন্ডার। ব্যাট হাতে রানের ফুলঝুড়ি ছিটিয়েছেন। তাতে ভক্তদের মাঝেও এসেছে স্বস্তি। এখন পর্যন্ত সাকিবকেই এবারের বিপিএলের সেরা তারকা বললে অত্যুক্তি হয়না। 

সাকিব অবশ্য বিপিএলের টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কারটা অনেকটা নিজের ব্যক্তিগত সম্পদ করে নিয়েছেন। এখন পর্যন্ত চারবার জিতেছেন টুর্নামেন্ট সেরার খেতাব। এবারও আছেন সেই দৌড়ে। এখন পর্যন্ত ১১ ম্যাচে করেছেন ২৪৯ রান। ২৭.৬৭ গড় আর ১৬৮ বেশি স্ট্রাইকরেট তার নামের পাশে। 

অন্যদিকে বল হাতেও সফল সাকিব। ১১ ম্যাচে নিয়েছেন ১৭ উইকেট। প্রতি উইকেটের জন্য খরচ করেছেন ১৫.৫৩ রান। ব্যাটিং তালিকায় শীর্ষ দশের কিছুটা বাইরে থাকলেও বোলারদের তালিকায় তিনি আছেন দ্বিতীয় স্থানে। প্লে-অফে এখনো ম্যাচ বাকি সাকিবের। সংখ্যাগুলোকে নিশ্চিতভাবেই বাড়ানোর সুযোগ পাচ্ছেন তিনি। 

তামিম ইকবাল 

বিপিএলে রানের প্রায় সব রেকর্ডই নিজের করে নিয়েছেন তামিম ইকবাল। বিপিএলের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি রানের মালিক চট্টগ্রামের এই লোকাল হিরো। ১২ ম্যাচে ৩৯১ রান নিয়ে এবারের বিপিউএলেও আছেন ওপরের দিকেই। স্ট্রাইক রেট ১২৬ এর কিছু বেশি। গড় ৩২.৫৮। বরিশালের প্লে-অফ দৌড়ে তামিম রেখেছেন বড় ভূমিকা। 

এখন পর্যন্ত দুই ফিফটির দেখা পাওয়া তামিম এবারের বিপিএলে ৪০ চারের পাশাপাশি হাঁকিয়েছেন ১৫ ছয়। প্লে-অফ পর্বের পর তামিম নিজেকে কোথায় নিয়ে যান, সেটাই দেখার বিষয়। 

দুই জুনিয়র টাইগার হৃদয় ও তানজিদ তামিম 

তাওহিদ হৃদয় 

১২ ম্যাচে ৩৮৩ রান। করেছেন ১ সেঞ্চুরি। আছে এক ফিফটিও। প্রায় ১৫০ এর কাছাকাছি স্ট্রাইকরেটে ব্যাট চালিয়েছেন দেশের ক্রিকেটের নতুন এই সেনসেশন। সিলেটের জার্সিতে গত মৌসুমে ছিলেন দুর্দান্ত। সেই ফর্মটা টেনে এনেছেন কুমিল্লার জার্সিতেও। ৩৮ এর বেশি গড় তাকে রেখেছে বিপিএলের সেরাদের দৌড়ে। 

কুমিল্লা গ্রুপপর্ব শেষ করেছে টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সেরা দল হিসেবে। সেই সাফল্যের বড় কারিগর ছিলেন হৃদয়। হৃদয় বিশ্বকাপে ছিলেন ব্যর্থ। রানে ফেরার পর বিপিএলের সেরা খেলোয়াড় হওয়ার দিকেও নজর থাকবে তার। 

তানজিদ হাসান তামিম 

ক্রিকেট বিশ্বকাপেন তানজিদ তামিম ছিলেন তামিম ইকবালের বিকল্প পছন্দ। শেষ পর্যন্ত তাকে খেলতে হয়েছে পুরো আসর। বৈশ্বিক ওই আসরে নিজেকে সেভাবে মেলে ধরা হয়নি তার। এবারের বিপিএলে অবশ্য রানের ধারায় আছেন তিনি। দেশি কোচ তুষার ইমরানের অধীন নিজেকে রেখেছেন আলোচনায়। 

বিপিএলে দেশীয়দের মধ্যে তৃতীয় সর্বোচ্চ এবং এবারের বিপিএলের সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলেছেন চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের এই ওপেনার। ১১ ম্যাচে ৩৮২ রান নিয়ে আছেন সেরা ব্যাটারের তালিকার তিনে। ২ ফিফটি আর ১ সেঞ্চুরি আছে তার নামের পাশে। প্লে-অফে চট্টগ্রামের পারফরম্যান্সও অনেকটা নির্ভর করবে তার ওপর। 

জেএ