সরফরাজ খানের নামের পাশে বিদ্রোহী শব্দটা বসাতে কোনো ভুল করেনি ভারতের গণমাধ্যম। অবশ্য একেবারেই ভুল তারা করেনি। জাতীয় দলে সুযোগ না পেয়ে একসময় তো বিদ্রোহীই হয়ে উঠেছিলেন মুম্বাইয়ের এই তরুণ। গতকাল (বৃহস্পতিবার) অভিষেকের সময় তার বাবার জ্যাকেটের পেছনেও ছিল বিদ্রোহেরই বাণী। ‘ক্রিকেট সবার খেলা’ এমন এক বার্তা গায়ে চড়িয়ে এসেছিলেন সরফরাজের বাবা। 

এত প্রতীক্ষার পর যে অভিষেক, সেটাও বেশ ভালোই ছিল তার জন্য। যে ভাবে খেলছিলেন, তাতে মনে করা হচ্ছিল অভিষেকেই শতরান করে ফেলবেন। ইংলিশ বোলারদের বলতে গেলে পাত্তাই দেননি সরফরাজ। খেলেছেন ওয়ানডে মেজাজে। কে জানে, রবীন্দ্র জাদেজা নিজের সেঞ্চুরির জন্য তাড়া না দিলে হয়ত সরফরাজকে রানআউট হতে হতো না।  

সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়েও সরফরাজ খানকে ফিরতে হল মাত্র ৬২ রানেই। রান আউট হয়ে যান তিনি। ম্যাচের পর সেই প্রসঙ্গে মুখ খুললেন সরফরাজ। পাশাপাশি একটু অভিমানও ঝরে পড়ল গলায়। বুঝিয়ে দিলেন, লম্বা সময়ের অপেক্ষারে পরেই জাতীয় দলের দরজা খুলেছে তার জন্য।

রান আউট নিয়ে অবশ্য কথা বলেননি সরফরাজ। বরং জাদেজার কাছে কৃতজ্ঞতাই জানিয়েছেন নিজের ইনিংসের জন্য, ‘এটা খেলারই অংশ। বোঝাপড়ার ভুল হতেই পারে ক্রিকেটে। কখনও রান আউট হয়, আবার কখনও রান হতে পারে। মধ্যাহ্নভোজের সময় আমি জাদেজার সঙ্গে কথা বলেছিলাম। অনুরোধ করেছিলাম যাতে খেলার সময় আমার সঙ্গে নিয়মিত কথা বলে। খেলার সময় কথা বলতে ভাল লাগে। তার উপর প্রথম বার নেমেছিলাম। তাই জন্য জাদেজাকে বলেছিলাম কথা বলে যাওয়ার জন্য। ও সেটাই করেছে এবং আমার ব্যাটিংয়ের সময় অনেক সাহায্য করেছে।’ 

শুরুর দিকে সরফরাজকে একটু চিন্তায় লাগছিল। অভিষেকের নার্ভাস ভাব ছিল চোখেমুখে। সেই প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘চার ঘণ্টা সাজঘরে প্যাড পরে বসেছিলাম। ভাবছিলাম, সারা জীবনে এত ধৈর্য রেখেছি। তাই আর একটু ধৈর্য রাখলে খারাপ কিছু হবে না। ব্যাট করতে যাওয়ার সময়েও প্রথম কয়েকটা বলে নার্ভাস ছিলাম। কিন্তু অনেক অনুশীলন এবং পরিশ্রম করেছি। তাই সব ঠিকঠাক গিয়েছে।’ 

অভিষেকের মুহূর্ত নিয়েও আবেগপ্রবণ ছিলেন সরফরাজ, ‘প্রথম বার মাঠে আসা এবং বাবার সামনে জাতীয় দলের টুপি নেওয়া, এই অনুভূতি বলে বোঝানো যাবে না। ছ’বছর বয়সে ক্রিকেট খেলা শুরু করার পর থেকে ভারতের হয়ে খেলার ইচ্ছা ছিল। আজ তা পূর্ণ হয়েছে।’ 

জেএ