ছেলে সরফরাজ খানের টেস্ট অভিষেক হচ্ছে। বাবা হিসেবে এমন একটা মুহূর্তের স্বপ্ন বহুদিন নিশ্চয়ই দেখেছেন নওশাদ। শুরুতে খানিক হাসিমুখে থাকলেও শেষ পর্যন্ত নিজেকে ধরে রাখতে পারেননি তিনি। গায়ে চাপানো জ্যাকেটে চোখের পানি লুকোতে চাইলেন। কিন্তু ক্যামেরার চোখ ফাঁকি দেবেন, সেই সাধ্য হয়ত নেই। রাজকোটে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তৃতীয় টেস্টের আগে দেখা গেল বাবা-ছেলের এমন অসাধারণ মুহূর্ত। 

সরফরাজ খান তার মর্যাদার টেস্ট ক্যাপ পেয়েছেন কিংবদন্তি অনিল কুম্বলের কাছ থেকে। ক্যাপ পেয়ে প্রথমেই বাবার কাছে যান সরফরাজ। তাকে ক্যাপ দেখানোর পর আবেগতাড়িত হয়ে পড়েছিলেন। বোঝাই যাচ্ছিল, এত বছরের অপেক্ষার অবসানের পরে আর নিজেকে ধরে রাখতে পারছিলেন না বাবা-ছেলের কেউই। চোখের পানি নিয়ে ছেলের টেস্ট ক্যাপেও চুমু খান তিনি। বাবার পরে পাশে থাকা স্ত্রীকেও জড়িয়ে ধরেন সরফরাজ।

সরফরাজ জাতীয় দলের জন্য নিজেকে যোগ্য করেছেন অনেক আগেই।  ২০১৯ সাল থেকে ভারতের ঘরোয়া ক্রিকেটে অবিশ্বাস্য পারফর্মও করছেন সরফরাজ। ২০১৯-২০ ও ২০২১-২০২২ টানা দুই মৌসুমে রঞ্জি ট্রফিতে তিনি করেছেন ৯০০–এর বেশি রান। ঘরোয়া ক্রিকেটে ৬৬ ইনিংসে তার গড় ৬৯.৮৫, যা ক্রিকেট ইতিহাসে চতুর্থ সর্বোচ্চ। সর্বোচ্চ গড় ৯৫.১৪ স্যার ডন ব্রাডম্যানের।

এর আগে ২০০৯ সালে মাত্র ১২ বছর বয়সে ভারতের হ্যারিস শিল্ড আন্তঃস্কুল টুর্নামেন্টে ৪৩৯ রানের ইনিংস খেলে আলোয় আসেন সরফরাজ। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এত ধারাবাহিক হওয়া সত্ত্বেও কিছুতেই তার জন্য জাতীয় দলের সুযোগ আসছিল না। যা নিয়ে সমালোচনাও হচ্ছিল নির্বাচকদের। নিজেদের ওপর থেকে ভারতীয় বোর্ডের সেই চাপ কমানোর সুযোগ পেয়েছেন এবারে। 

এদিকে সরফরাজ দলে আসার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স–এ (সাবেক টুইটার) একটি ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্ট করেছেন হার্শা। তিনি লিখেছেন, ‘সরফরাজ খান কেবল দরজায় কড়া নাড়েনি, দরজা ভেঙে দিয়েছে। পিচ যদি হায়দরাবাদের মতন হয়, আমি আশা করব দুজন ব্যাটারই (পাতিদার ও সরফরাজ) খেলবে। তৃতীয় স্পিনার আসবে পেসারের জায়গায়।’

বার বার জাতীয় দলে সুযোগ না পেয়ে শেষদিকে কিছুটা বিদ্রোহী হয়ে উঠেছিলেন সরফরাজ়। প্রকাশ্যে মুখ খুলতেন তিনি। যদিও প্রথম বার ভারতীয় দলে সুযোগ পেয়ে খুশি চাপতে পারেননি সরফরাজ। দলে সুযোগ পাওয়ার খবর পেয়ে সমাজমাধ্যমে বাবার সঙ্গে খুশির মুহূর্তের একটি ছবি দিয়েছিলেন। সঙ্গে ‘চাক দে ইন্ডিয়া’ সিনেমার একটি জনপ্রিয় গান জুড়ে দিয়েছিলেন। 

জেএ