২০১৩ সালের পর সেভাবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সঙ্গে ছিলেন না গাজী আশরাফ হোসেন লিপু। প্রায় এক দশক পর প্রধান নির্বাচক হয়ে আবারও তিনি বিসিবিতে এসেছেন। এর আগে জাতীয় দলের ম্যানেজারসহ বেশ কয়েকটি দায়িত্ব সামলানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। নতুন করে দায়িত্ব নেওয়ার পর আজ নিজের অনুভূতি ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে কথা বলেছেন লিপু।

মঙ্গলবার মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন গাজী আশরাফ। সেখানে প্রাসঙ্গিক নানা প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি। জানান, স্বাধীনভাবে কাজ করার প্রতিশ্রুতি পেয়েই দায়িত্ব নিয়েছেন। স্বাধীনতা না পেলে দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ার ইঙ্গিত দেন তিনি।

চলতি বছর ক্রিকেট বিশ্বের অন্যান্য দলের মতো বাংলাদেশও ব্যস্ত সময় কাটাবে। আছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। দল নির্বাচন কেমন হতে পারে তার কিছুটা ধারণাও দেন নতুন প্রধান নির্বাচক।

লিপু বলেন, ‘আপনারা জানেন ২০১৩ সালের পর থেকে আমি বোর্ডের সঙ্গে নেই। করোনাকালীন সময়ের আগেও একাধিকবার বোর্ড থেকে আমার কাছে বিভিন্ন ভূমিকায় কাজের প্রস্তাব এসেছে। আমার মা অসুস্থ ছিলেন তখন, চিন্তা করার সুযোগ হয়নি। নির্বাচনের আগেও প্রস্তাব এসেছে। এবার যখন আসল (প্রস্তাব), কথা বললাম। আমার দিক থেকে যেটা ছিল, আমি বোর্ড পরিচালক ছিলাম।’

তিনি বলেন, ‘হয়তো অনেকে জানেন না ২০০৭-২০০৮ সালের দিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে আমি পাঁচ-ছয়টা আইসিসি সভায় প্রতিনিধিত্ব করেছি। এতগুলো ভূমিকা পালন করার পর আমাকে এখন এই পদে আসা, যেখানে একটা নিয়ম ও বেতন কাঠামোর মধ্যে কাজ করতে হবে। সেটার জন্য ওপেনিং স্পেস চেয়েছিলাম। গঠনতন্ত্রের বাইরে একটা সমমানের সম্মান যাতে এই পদকে দেওয়া হয়। সেই জায়গায় তারা আমাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়েছেন।’

সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে বিসিবি থেকে স্বাধীনতা পাবেন বলেও জানান গাজী আশরাফ, ‘স্বাধীনতা থাকবে, এই ব্যাপারে আমার সঙ্গে তাদের কথা হয়েছে। মুক্তভাবে কাজ করার প্রতিশ্রুতি পেয়েই এসেছি। আমি বিশ্বাস করি স্বাধীনভাবে না হলে কাজ করে কোনো আনন্দ নেই। রাস্তা সব সময় খোলা আছে। আসার রাস্তা খোলা, যাওয়ার রাস্তাও খোলা।’

দল নির্বাচনের বিষয়ে নতুন প্রধান নির্বাচক বলেন, ‘আমি আনুষ্ঠানিকভাবে আরও কয়েকদিন পর দায়িত্ব নেব। সবকিছুর উত্তর আমি এখনই দিতে চাই না। ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধানের সঙ্গে কথা বলে কিছু ব্যাপার আরও পরিষ্কার করে নিতে হবে। আমরা যখন বসব, তখন একটা পরিকল্পনা আমাদের থাকবে যে, পরিকল্পনার আলোকে সেরা ১১ বা ১২ জন বাছাই করে পরে বাকি ২-৩ জন নির্বাচন করা, যাতে খুব পরিষ্কার একটা ধারণা তৈরি হয়ে যায় কোচ ও অধিনায়কের সঙ্গে আমাদের যে, আমাদের ব্যাটিং অর্ডার কেমন।’

ব্যাটিং অর্ডারে বারবার ওঠা-নামা নিয়ে কথা বলেন লিপু, ‘আমরা দেখেছি, বিভিন্ন জায়গায় ওঠা-নামা অনেক বেশি হয়েছে (ব্যাটিং অর্ডার)। সেসব জায়গায় কেউ যদি পারফর্ম করতে না পারে, তাহলে বিকল্প যেন তৈরি থাকে এবং সুযোগ যেন পেতে পারে। একই সঙ্গে দেখব, ঘরোয়া ক্রিকেটেও যেন তারা সেই সুযোগ পায়, সেরকম একটা আবহ ঘরোয়া আসরে তৈরি করা যায় কি না।’

উল্লেখ্য, গত ডিসেম্বরে বিসিবির আগের নির্বাচক প্যানেলের চুক্তি শেষ হয়। যেখানে এতদিন ধরে জাতীয় দলের নির্বাচক প্যানেলে কাজ করে আসছিলেন মিনহাজুল আবেদীন নান্নু, হাবিবুল বাশার সুমন ও আব্দুর রাজ্জাক। মেয়াদ শেষ হওয়ায় মাস দুয়েক ধরে নান্নুদের দায়িত্বে থাকা নিয়ে বেশ জল্পনা ছিল। সেটি গতকাল বিসিবির বোর্ড মিটিং শেষে থামিয়ে দিয়েছেন বিসিবি সভাপতি ও ক্রীড়ামন্ত্রী নাজমুল হাসান পাপন। নান্নু ও বাশারকে সরিয়ে তিনি নতুন প্যানেল ঘোষণা দেন। তবে নতুন প্যানেলেও ঠাঁই হয়েছে আব্দুর রাজ্জাকের। প্যানেল প্রধান হিসেবে গাজী আশরাফ লিপু ও বাশারের স্থলাভিষিক্ত হন বয়সভিত্তিক দলের নির্বাচক হান্নান সরকার।

এসএইচ/এএইচএস