অনেকদিন ধরেই ভারতের টেনিস তারকা সানিয়া মির্জার সঙ্গে বিচ্ছেদের গুঞ্জন ছিল পাকিস্তানের তারকা ক্রিকেটার শোয়েব মালিকের। যা নিয়ে দু’জন সরাসরি কোনো মন্তব্য না করলেও, সাম্প্রতিক সময়ে তাদের আচরণে জল কতদূর গড়িয়েছে— টের পাওয়া যায়। এবার হাটে হাড়ি ভাঙলেন শোয়েব মালিক। দ্বিতীয় স্ত্রী সানা’র সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি বিয়ের দুটি ছবি শেয়ার করেছেন। এখন ক্রিকেট ভক্তদের প্রশ্ন— কে এই সানা জাভেদ?

সানা পাকিস্তানের একজন জনপ্রিয় অভিনেত্রী, যার শুরুটা হয়েছিল উর্দু টেলিভিশনে কাজের মাধ্যমে। ২০১২ সালে ‘শেহর-ই-জাত’— অভিনয়ের মাধ্যমে তারা অভিষেক হয়। এরপর আরও অনেকগুলো টিভি সিরিয়ালে দেখা যায় সানাকে। তবে রোমান্টিক ঘরানার নাটক ‘খানি’তে অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি বড় করে খবরের শিরোনামে আসেন। গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয়ের জন্য এরপর ‘লাক্স স্টাইল অ্যাওয়ার্ড’ জেতেন সানা। সামাজিক ঘটনা নির্ভর নাটক ‘রুশাই’ এবং ‘ডাঙ্ক’— এ অভিনয় করেও প্রশংসিত হন এই অভিনেত্রী।

জানা গেছে, শোয়েব মালিকের সঙ্গে এটি সানার প্রথম বিয়ে নয়। এর আগে ২০২০ সালের অক্টোবরে সঙ্গীত শিল্পী উমায়ের জসওয়ালের সঙ্গে এই অভিনেত্রী বিয়ে-বন্ধনে আবদ্ধ হন। করাচিতে অনুষ্ঠিত তাদের সেই অনুষ্ঠানের পর পাকিস্তানে আলোচনার জায়গা দখল করেন এই দম্পতি। দ্রুত সময়ে তাই সানা-জসওয়াল দম্পতি মানুষের জনপ্রিয়তা অর্জন করে নেয়। যদিও অল্প সময় পরই মোহভঙ্গ হয় পাকিস্তানি মানুষদের। একপর্যায়ে দুজন আলাদা বসবাস, ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে পরস্পরকে মুছে দিয়ে বিচ্ছেদের পথে হাঁটেন। যদিও তাদের বিচ্ছেদের সঠিক সময় জানা যায়নি।

শোয়েবের জীবনে সানা

অনেকদিন ধরেই শোনা যাচ্ছিল— সানিয়া মির্জার সঙ্গে শোয়েবের বিচ্ছেদের গুঞ্জনে ভূমিকা রয়েছে পাকিস্তানের কোনো মডেলের। যেখানে কয়েকজন অভিনেত্রীর নামও শোনা যায়। তার মধ্যে নাম ছিল সানা জাভেদেরও। সেই জল্পনা বেড়ে যায়, যখন শোয়েব সানার জন্মদিনে নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাকাউন্ট থেকে একটি ছবির সঙ্গে ‘হ্যাপি বার্থডে বাডি’ লিখে শুভেচ্ছা জানান।

সানা জাভেদের প্রথম স্বামী উমায়ের জসওয়াল

সর্বশেষ সেই গুঞ্জন থামলো আজ শোয়েবের এক পোস্টে। দুজনের বিয়ের ছবি প্রকাশ করে শোয়েব মালিক কুরআনের একটি আয়াত ক্যাপশনে জুড়ে দিয়েছেন। যেখানে লেখা, ‘নিশ্চয় তোমাদের জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি করা হয়েছে।’ একই পোস্ট দিয়েছেন সানা নিজেও। বিয়ের পরপরই তিনি নিজের ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্টেও পরিবর্তন এনেছেন। যেখানে এখন তার নাম সানা শোয়েব মালিক। 

দুজনের এই ঘোষণায় কি তাহলে সানিয়ার সঙ্গে শোয়েবের বিচ্ছেদে চূড়ান্ত সিলমোহর পড়ে গেল? যদিও তাদের বিচ্ছেদ আরও আগেই হয়েছে বলে কথিত রয়েছে। ২০১০ সালে ভারতের হায়দরাবাদে মুসলমানদের রীতি মেনে বিয়ে হয়েছিলেন শোয়েব-সানিয়ার। পরবর্তীতে পাকিস্তানের সিয়ালকোটে তাদের ওয়ালিমা অনুষ্ঠানও হয়। পরবর্তীতে শোয়েব-সানিয়ার সংসারে একমাত্র সন্তান ইজহান মালিক মির্জার আগমন ঘটে ২০১৮ সালে।

শোয়েবের প্রথম স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকী

সানা জাভেদ শোয়েবের তৃতীয় স্ত্রী। সে হিসেবে পাকিস্তানি এই ক্রিকেটারের প্রথম স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকী অনেকটা আড়ালেই রয়েছেন। সানিয়া মির্জাকে বিয়ের আগমুহূর্তে প্রথম আলোচনায় এসেছিলেন আয়েশা। ফলে ওই সময় বিষয়টি নিয়ে বেশ বিতর্ক তৈরি হয়। আয়েশা ‘মাহা সিদ্দিকী নামে পরিচিত ছিলেন, পেশায় শিক্ষক এই নারীও হায়দরাবাদের সন্তান। পরে আয়েশার সঙ্গে বিচ্ছেদ ছাড়াই সানিয়ার সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোর অভিযোগ ওঠে শোয়েবের বিরুদ্ধে।

প্রথম দুই স্ত্রী আয়েশা ও সানিয়ার সঙ্গে শোয়েব মালিক

সংবাদমাধ্যম ডিএনএ ইন্ডিয়া বলছে, যার ধারাবাহিকতায় এই ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে আয়েশা প্রতারণার অভিযোগও দিয়েছিলেন। যেখানে ২০০২ সালে দুজনের বিয়ে হয় বলে একটি ভিডিও প্রমাণ হিসেবে দেখানো হয়। পরবর্তীতে শোয়েব তাকে ১৫ কোটি পাকিস্তানি রুপি ভরণপোষণ খরচ দেওয়ার পর, ২০১০ সালের এপ্রিলে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচ্ছেদের ঘোষণা দেন। এর পরদিনই বিবাহিত দম্পতিতে পরিণত হন শোয়েব-সানিয়া।

এএইচএস