এশিয়া কাপের ফাইনালে আশিকুর রহমান শিবলী যখন সেঞ্চুরির রান নিয়েছিলেন, তখন অন্য পাশে আরিফুল ইসলামের উচ্ছ্বাসটা নজর কেড়েছিল সবার। সেমিফাইনালে ভারতের বিপক্ষে দল যখন বিপর্যয়ে, তখন প্রায় একাই দলকে টেনে নিয়ে যান এই আরিফুল। দক্ষিণ আফ্রিকায় অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়া দলের অভিজ্ঞ এক সদস্য মিডল অর্ডারের এই ব্যাটার। এরআগেও খেলেছেন একটি যুব বিশ্বকাপ। 

মিডলঅর্ডারে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এই ভরসা তিনি। বিশ্বকাপের আগে কথা বলেছেন ঢাকাপোস্টের ক্রীড়া প্রতিবেদক সাকিব শাওনের সঙ্গে। তার সেই সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে অনেক কিছুই। পাঠকের জন্য সাক্ষাৎকার তুলে ধরা হলো। 

ঢাকাপোস্ট: খুব কাছে চলে এসেছে বিশ্বকাপ, দলের প্রস্তুতি কেমন? 

আরিফুল: আলহামদুলিল্লাহ দলের প্রস্তুতি ভালো আছে। শেষ কয়েকদিন সবাই চেষ্টা করেছে। এখন বাকিটা মাঠের পারফর্মম্যান্সের উপর নির্ভর করবে। 

ঢাকাপোস্ট: আপনি নিজে কতটা প্রস্তুত? 

আরিফুল: এই বিশ্বকাপ ঘিরে শেষ দেড় বছর ক্যাম্প করেছি ভালো করার জন্যই। আর সত্যি বলতে গেল বছর যখন এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন হলাম তারপর মানসিকভাবে শক্ত আছি অনেক। এখন চিন্তা কেবল বিশ্বকাপ নিয়ে কিভাবে ভালো করা যায়। 

ঢাকাপোস্ট: গেল বিশ্বকাপে সেঞ্চুরি করেছিলেন দুইটা, এবার কি সেটা মেন্টালি কাজে দিবে? 

আরিফুল: বুস্ট আপ বলতে, গতবার যা হয়েছে সেটা ভুলে গেছি ভাই। ওটা নিয়ে বেশি চিন্তা করছি না, নতুন করে খেলতে হবে। ক্রিকেট তো আর এক থাকে না, প্রতিদিন আপপেট হচ্ছে, এবার কি হবে জানিনা তবে চেষ্টা থাকবে। 

ঢাকাপোস্ট: আফ্রিকার কঠিন কন্ডিশনে খেলতে হবে একটু চ্যালেঞ্জ কী না? 

আরিফুল: চ্যালেঞ্জিং বলতে সেখানে কখনো খেলা হয়নি একটু অজানা। না চেনা জানা জায়গা। তবে প্রাকটিস রয়েছে যেহেতু সমস্যা কেটে যাবে আশা করি। সবমিলিয়ে বলব খারাপ হবে না ভালো হবে। 

ঢাকাপোস্ট: মিডল অর্ডারের বড় দায়িত্ব পালন করতে হবে, আপনি প্রস্তুত নিশ্চয়? 

আরিফুল: যেখানেই খেলি না কেন দলের জন্যই খেলব। আমি যেখানে ব্যাট করি অবশ্যই আমার রোলটা বড়। আমার চেষ্টা থাকবে দলের যে পরিস্থিতি থাকবে সেটা থেকে ভালো করা। স্কোরবোর্ডে যা ডিমান্ড থাকবে সেই অনুযায়ী খেলতে পারা।

ঢাকাপোস্ট: আপনি স্পিন বোলিংও করেন কেমন প্রস্তুতি নিয়েছেন? 

আরিফুল: আসলে আলাদা কিছু করিনি। কারণ আমি তো পার্ট টাইমার স্পিনার। আমি শুধু এনজয় করার চেষ্টা করি, যখন বোলিং দুই তিন ওভার করি দলের স্বার্থেই করি। আমি এনজয় করেই বোলিং করার চেষ্টা থাকবে যদি সুযোগ আসে। বাড়তি চাপ নিই না আর কি। নেটে এমনি করেছি, মনোযোগ দিয়েই বল করছি। এখন কন্ডিশন জানা নেই, বেশি কঠিন হবে না আশা করি। ওখানে রান হয়। বোলাররা চাইলে ভালো বোলিং করতে পারে। সবার জন্যই সহজ হবে। 

ঢাকাপোস্ট: প্রথম ম্যাচ ভারতের বিপক্ষে কেমন মনে হচ্ছে পরিকল্পনা কী?

আরিফুল: পরিকল্পনা বলতে ওতো চিন্তা করলেই সমস্যা। শুধু মাঠের খেলাটা খেলব, টিম মিটিং অনেক কথায় হবে এ নিয়ে। তাদের দুর্বলতার দিক খুঁজে বের করে সে অনুযায়ী খেলা। আফ্রিকার সাথে সিরিজ দেখেছি, কেমন করছে ভারত। এখন মাঠে ভালো করার চিন্তা শুধু।

ঢাকাপোস্ট: তামিম ইকবালের দেওয়া ব্যাট হাতে পেয়েছেন কি মেসেজ দিয়েছিলেন সেদিন তিনি?

আরিফুলের: বড় ভাই ব্যাট দিছে, ভালো লাগা কাজ করেছিল। উনি তার জীবনের টার্নিং পয়েন্টের একটা কথা বলেছিল। যে সময় এ টিমের সাথে ট্যুর করতে পারেনি, তখন উনি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখত। তার ঠিক ছয় মাস পরে জাতীয় দলে ডাক পেয়েছিল। উনি বলেছে, জীবন পরিবর্তন হতে ৬ মাস লাগে না আল্লাহ চাইলে। এতটুকুই। বিশ্বকাপের জন্য শুভকামনা জানাল, ভালো করে খেলতে। ওনার বিশ্বাস আমরা ভালো কিছু করব। 

ঢাকাপোস্ট: মাহমুদউল্লাহ আপনার পছন্দ। বিশ্বকাপ নিয়ে কিছু বলেছে কি?

আরিফুল: রিয়াদ ভাইয়ের কথা হয়েছিল। ভাই বললো যে ভালো করে খেলতে, উইকেট ভালো আছে চাইলে রান করতে পারবি। এত কঠিন কিছু না, মারলে বল যাবে। ওই জায়গায় এতো জোরে মারতে হবে না শুধু টাইমিংয়ের উপর মারলে বল পার হয়ে যাবে। শুভকামনা জানিয়েছিল সবশেষ। 

ঢাকাপোস্ট: শিরোপা জিততে নিশ্চয় পরিকল্পনা করছেন?

আরিফুল: সবার প্রত্যাশা থাকে শিরোপা জয়ের। ট্রফি নিয়ে আসব দেশে, আমাদের টার্গেটও সেটাই আছে। ওভার কনফিডেন্ট না প্রত্যেকের ভিতরে নিজেদের সেরাটা দিতে চাই। সেই যারা ভালো খেলবে তারাই জিতবে। 

এসএইচ/জেএ