ছেলে জোরাভার ১০ বছরে পা দিয়েছে, কিন্তু এমন দিনেও সরাসরি কিংবা অনলাইনে তার দেখা পাননি বাবা শিখর ধাওয়ান। বিচ্ছেদ হওয়া স্ত্রী আয়েশা মুখার্জির সঙ্গে তার সম্পর্কের তিক্ততা কতদূর পৌঁছেছে, সেটি ভারতীয় এই ক্রিকেটারের এক পোস্টে নতুন করে আঁচ পাওয়া যায়। ছেলের জন্মদিনে তাকে দেখার আকুতি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ধাওয়ান একটি পোস্ট দিয়েছেন। আবেগঘন সেই লেখাকে ‘চিঠি’ও বলা যেতে পারে। কেননা ইন্টারনেটের বিশ্বায়নের যুগেও তাকে এমন ‘কাগুজে বার্তা’র আশ্রয় নিতে হয়েছে!

চলতি বছরের অক্টোবরে আইনিভাবে প্রায় ১১ বছরের দাম্পত্য জীবনের ইতি টানেন ধাওয়ান-আয়েশা। স্ত্রীর বিরুদ্ধে মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ এনে বিচ্ছেদের মামলা করেছিলেন ধাওয়ান, যার বিপক্ষে আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য অস্ট্রেলিয়ায় থাকা আয়েশা লড়াইও করেননি। এরপর দুজনের বিচ্ছেদের রায় হলেও, ছেলে জোরাভারের সঙ্গে ধাওয়ানের দেখা করার যাবতীয় সুযোগ রেখেছিলেন আদালত। কিন্তু সেই সুযোগ না পাওয়ায় বাঁ-হাতি এই ব্যাটসম্যান দ্বারস্থ হয়েছেন ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টের।

নিজের অফিসিয়াল অ্যাকাউন্টে ছেলের সঙ্গে আরও আগের ভিডিও কলে কথা বলার একটি ছবি দিয়েছেন ধাওয়ান। ক্যাপশনে ছেলেকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘আমি তোমাকে সরাসরি দেখেছি এক বছর হয়ে গেছে। এবং এখন প্রায় তিন মাস ধরে আমাকে ব্লক করা হয়েছে সব জায়গা থেকে, তাই একই ছবি (পুরোনো) পোস্ট করছি। আমার ছেলে, তোমাকে জন্মদিনের অনেক শুভেচ্ছা।’

তিনি আরও লিখেন, ‘যদিও আমি সরাসরি তোমার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি, তবে আমি টেলিপ্যাথির (মনস্তাত্ত্বিক যোগাযোগ) মাধ্যমে তোমার সঙ্গে যোগাযোগ করে থাকি। আমি তোমার জন্য খুব গর্বিত এবং আমি জানি তুমি খুব ভালো আছো এবং সুন্দরভাবে বেড়ে উঠছো। বাবা সব সময়ে তোমাকে মিস করে এবং তোমাকে খুব ভালবাসে। আমি সব সময়ে হাসিমুখে সেই সময়ের জন্য অপেক্ষা করছি, যখন আমরা ঈশ্বরের কৃপায় আবার দেখা করব।’

এরপরই বাবার ভূমিকায় স্নেহমাখা আদেশ দেন ধাওয়ান, ‘দুষ্টুমি করো, কিন্তু ধ্বংসাত্মক হয়ো না। একজন দাতা হয়ে ওঠো। নম্র, সহানুভূতিশীল, ধৈর্যশীল এবং শক্তিশালী একজন হয়ে ওঠো। তোমার সঙ্গে দে খানা হলেও তোমাকে রোজ মেসেজ করি। তুমি ভালো আছ কি না সেই খোঁজ-খবর নিই। আমি কী করছি, সেই কথাও জানাই। কিন্তু তুমি সেসব দেখতে পাও না। তোমার বাবা তোমাকে খুব ভালবাসে।’

স্ত্রী ও ছেলের সঙ্গে ধাওয়ান

উল্লেখ্য, ফেসবুকে পরিচয়ের পর অস্ট্রেলিয়ান প্রবাসী আয়েশার সঙ্গে ২০১২ সালে বিয়ে হয় ভারতীয় ক্রিকেটার ধাওয়ানের। প্রথম দিকে সুখের সংসার ছিল তাদের। পরবর্তীতে ২০১৪ সালে শিখর-আয়েশার ঘরে ছেলে জোরাভারের আগমন ঘটে। কিন্তু এই দম্পতির সম্পর্কে ক্রমেই তিক্ততা আসে। একপর্যায়ে বিচ্ছেদ চেয়ে ধাওয়ান আদালতে অভিযোগ করেন, স্ত্রী তাকে মানসিক নির্যাতন করেন। একমাত্র সন্তানকেও দীর্ঘদিন তার সঙ্গে থাকতে দেন না। যার পক্ষে চলতি বছরের অক্টোবর রায় আসে, তবে ধাওয়ান যেন অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে কিংবা অনলাইনেও ছেলেকে দেখার সুযোগ পান সেই অধিকারও দেওয়া হয়। 

অপেশাদার বক্সার আয়েশা অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে থাকেন। শিখরের জীবনে আসার আগে সেখানে অস্ট্রেলিয়ান এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল তার। ওই ঘরে তার দুটি কন্যাসন্তানও আছে। সেখানে বিচ্ছেদের পর শিখরের সঙ্গে জীবনের জুটি বেঁধেছিলেন আয়েশা।

এএইচএস