আইপিএলের মিনি নিলামে সর্বোচ্চ দামের রেকর্ড গড়েছেন অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটাররা। গত মঙ্গলবার দেড় ঘণ্টার ব্যবধানে দুই অজি তারকা মিচেল স্টার্ক এবং প্যাট কামিন্স পালটে দিলেন পুরো আইপিএল নিলামের ইতিহাস। সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ২০ কোটি ৫০ লাখ রুপিতে প্রথমে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্সকে তাদের দলে নেয়। যা আইপিএলের ইতিহাসে রেকর্ডমূল্যের অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে নজির গড়ে। এরপরই আবার সেই রেকর্ড ভাঙে মিচেল স্টার্কের সুবাদে।

শুরুতে তাকে পাওয়ার লড়াইয়ে ছিল দিল্লি ক্যাপিটালস এবং মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। মুম্বাই একপর্যায়ে ৯ কোটি পর্যন্ত নিয়ে যায় নিলাম। এরপরই দৃশ্যপটে হাজির গুজরাট টাইটান্স আর কলকাতা নাইট রাইডার্স। একপর্যায়ে দুজনের বিডিং ছাড়িয়ে যায় কামিন্সের ২০ কোটি ৫০ লাখ। শেষ পর্যন্ত ২৮ কোটি ৭৫ লাখে স্টার্ককে ভেড়ায় কলকাতা। 

এই ঘটনায় আশঙ্কা ও উদ্বেগের সুর শোনা গেল ভারতীয় ক্রিকেটার ও ধারাভাষ্যকার দীনেশ কার্তিকের কণ্ঠে। তার বক্তব্য নিলামের ফাঁকফোকরকে ব্যবহার করে ফায়দা লুটছে বিদেশি ক্রিকেটাররা। কীভাবে এটা বন্ধ করা যায়, তার বেশ কিছু উপায়ও তিনি বাতলে দিয়েছেন।

ভারতের ক্রিকেট বিষয়ক ওয়েবসাইট ক্রিকবাজের পোস্ট করা এক ভিডিওতে দীনেশ কার্তিককে বলতে শোনা গেছে, ‘ক্রিকেটাররা সরাসরি মিনি নিলামে অংশ নিক এই বিষয়টার আমি একেবারেই ফ্যান না। আমি মনে করি বিদেশি ক্রিকেটাররা এবং তাদের এজেন্টরা এই বিষয়টিকে বেশ চালাকির সঙ্গে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করছেন। আমি মনে করি, বিসিসিআই এই সমস্যার সমাধান করতে পারে। আমি এই বিষয়টির কয়েকটি সমাধান আমি ক্রিকবাজে আমার সাম্প্রতিকতম ভিডিওতে দিয়েছি।’

ভারতীয় ক্রিকেটার দীনেশ কার্তিক।

মিনি নিলামে কোটি কোটি টাকা দিয়ে বিদেশি ক্রিকেটারদের কেনা প্রসঙ্গে কার্তিক বলেছেন, মেগা নিলাম তিন বছরে একবার হয়। অনেক বিদেশি ক্রিকেটার রয়েছে, যারা মেগা নিলামে অংশ না নিয়ে মিনি নিলামে অংশ নেয়। কারণ তারা জানে, মিনি নিলামে দলগুলোর নির্দিষ্ট স্লট ফাঁকা থাকে। ওই স্লট পূরণ করতে দলগুলো অলআউট ঝাঁপাবে, সেটা তারা ভালোভাবেই জানে। আর সেখানেই তাদের অতিরিক্ত টাকা কামিয়ে নেওয়ার রাস্তা থাকে। এটার সুযোগ তারা নেয়। এই বিষয়টি নিয়ে বিসিসিআই দুটি পদক্ষেপ নিতে পারে।

কার্তিকের মতে প্রথম বিষয়টি হচ্ছে, মেগা নিলামে যদি ওই ক্রিকেটার অংশ নিয়ে থাকে এবং পরবর্তীতে সে মিনি নিলামেও অংশ নেয়, তাহলে সেখানে মেগা নিলামে তার যে সর্বোচ্চ দর উঠেছিল মিনি নিলামেও সেই দামটাই সর্বোচ্চ দেওয়া যেতে পারে। এ ছাড়া যদি ওই ক্রিকেটার মেগা নিলামে অংশ না নিয়ে মিনি নিলামে অংশ নেন, তাহলে যে দল তাকে নিচ্ছে সেই দলের সর্বোচ্চ দাম দিয়ে রিটেন করা ক্রিকেটারের দামটাই ওই ক্রিকেটারকে দেওয়া হবে। নিলামে বেশি দাম উঠলেও, ওই রিটেনড ক্রিকেটারের সর্বোচ্চ দামের সঙ্গে যে দামের পার্থক্য হবে সেই অর্থ বিসিসিআইকে জমা দিতে হবে। অর্থাৎ সর্বোচ্চ দামের একটা ক্যাপ দেওয়া। না হলে দেখুন মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স দল জসপ্রীত বুমরাহকে রিটেন করেছে ১১ কোটি টাকায়। অথচ এই মিনি নিলামে অনেক অনামী, অখ্যাত বোলারও তার থেকে বেশি অর্থ পেয়ে গেছে এই নিলামে। এতে অনেক সময় ওই রিটেনড হওয়া ক্রিকেটারের মধ্যে হতাশা আসতে পারে। বিসিসিআই এই দু'টি উপদেশ আশা করি গুরুত্ব দিয়ে দেখলে এই সমস্যার সমাধান হতে পারে।’

এফআই