বাফুফেতে সিদ্ধান্ত হয় হুটহাট। নির্বাহী কমিটি থাকে অজ্ঞাত! এমন কি সংশ্লিষ্ট কমিটির সদস্যরাও জানেন না। এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়েছে আবার। ফেডারেশনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্ট্যান্ডিং কমিটি পেশাদার লিগের চেয়ারম্যান পরিবর্তন হয়েছে আনুষ্ঠানিক কোনো সভা ছাড়াই।

আজ দুপুরে আকস্মিকভাবে বাফুফে সভাপতি ইমরুল হাসানকে লিগ কমিটিতে তার স্থলাষিভিক্ত করেন। এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের ব্যাপারে জানেন না বাফুফের অন্যতম সহ-সভাপতি ও দেশের শীর্ষ ক্লাব আবাহনীর ডিরেক্টর ইনচার্জ কাজী নাবিল আহমেদ, 'এই ব্যাপারে আমি অবগত নই।’

ফুটবল ফেডারেশনের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদ সিনিয়র সহ-সভাপতি। সাবেক তারকা ফুটবলার আব্দুস সালাম মুর্শেদী নির্বাচনী কাজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। এই প্রতিবেদকের কাছে লিগ কমিটির রদবদলের খবর প্রথম শুনতে পান তিনি। তাই খানিকটা চমকে বলেন, 'আমি নির্বাচনী কাজে গোপালগঞ্জ যাচ্ছি এটা এখনই প্রথম শুনলাম আমাকে কেউ কিছু বলেনি।’

বর্তমান কমিটির আরেক সহ-সভাপতি  আতাউর রহমান ভূইয়া মানিক কাজী সালাউদ্দিনের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠজন হিসেবে স্বীকৃত। তিনিও নির্বাচন নিয়ে দৌড়ঝাপের মধ্যে রয়েছেন। সভাপতির ঘনিষ্ঠ হওয়ায় তিনি এই সংক্রান্ত কোনো মন্তব্য থেকে বিরত থেকেছেন। আরেক সহ-সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ মহী ব্রাদার্স ইউনিয়ন ক্লাবের ডিরেক্টর ইনচার্জ। তারও জানা নেই এই সম্পর্কে। 

ফুটবল ফেডারেশনে সহ-সভাপতিরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সহ-সভাপতিদের যখন অবগত নন তখন সাধারণ সদস্যদের অবস্থাও সহজে অনুমেয়। লিগ কমিটির চেয়ারম্যান পরিবর্তনের বিষয়টি বাফুফের নির্বাহী সভায় বা লিগ কমিটির সভায় না উঠিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার কারণ সম্পর্কে বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন বলেন, 'বোর্ড থেকে আমার উপর দায়িত্ব দেয়া আছে এই ব্যাপারে। কমিটির চেয়ারম্যান আমি করতে পারি। বোর্ড সেটা অনুমোদন দেয়।’ এতে নির্বাহী কমিটি আর সংশ্লিষ্ট কমিটি থাকার যৌক্তিকতা কতটুকু সেই প্রশ্নেরও জন্ম হয়েছে। 

আকস্মিকভাবে এই সিদ্ধান্তে বাফুফে কমিটির অনেকের মধ্যেই তৈরি হয়েছে ক্ষোভ। তারা আড়ালে-আবডালে সভাপতির সাংগঠনিক পরিপক্বতা নিয়ে প্রশ্ন বা ক্ষোভ প্রকাশ করলেও নির্বাহী কমিটির সভায় এবং সভাপতির সামনে নিশ্চুপই থাকেন প্রায় সময়। তাদের এই নিশ্চুপ ও নিষ্ক্রিয়তাই ফুটবল ফেডারেশনের অগঠনতান্ত্রিক কর্মকান্ডের পরোক্ষা বৈধতা দেয়। 

মানুষ ভুল থেকে শিক্ষা নেয়, বাফুফে অবশ্য নেয় না। নারী ফুটবল দলের মিয়ানমার সফর বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বাফুফে সভাপতি, নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান মিলেই। সাফ চ্যাম্পিয়ন নারী দলকে আর্থিক কারণে মিয়ানামারে পাঠায়নি বাফুফে। এতে পুরো দেশ আলোড়িত হয়েছিল। এত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল নির্বাহী কমিটি তো বটেই এমনকি মহিলা উইংয়েরও সভা ছাড়াই। এত বড় ধাক্কার পর কয়েক মাস সাধারণ বিষয়েও জরুরি সভা করেছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় আবার সেই আগের মতোই চলছে ফুটবল ফেডারেশন। এই সিদ্ধান্ত এই ইঙ্গিতই বহন করে। 

এজেড/এইচজেএস