নিজ দেশের ক্রিকেটারদের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের অপেক্ষায় ছিল পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। বিশ্বকাপ ভরাডুবির পর ওয়াহাব রিয়াজ, মোহাম্মদ হাফিজদের নিয়ে দল ঠিক করার পরিকল্পনা ছিল তাদের। কিন্তু তা আর হচ্ছে কই! বরং দলে যুক্ত হওয়ার পর থেকেই ওয়াহাব রিয়াজের সঙ্গে ঝামেলা বেড়েছে ক্রিকেটারদের। ফ্র্যাঞ্চাইজ লিগে খেলার ইস্যুতে কড়া অবস্থানের জেরে বিভক্তি দেখা দিয়েছে তাদের মধ্যে। 

ভারতীয় সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম দ্য ডন জানিয়েছে, বিদেশি লিগে খেলার ব্যাপারে অনাপত্তিপত্র দিতে দেরি করছেন ওয়াহাব। তার এমন সিদ্ধান্ত মানতে পারছেন না ক্রিকেটাররা। এ নিয়ে অনেক ক্রিকেটার নাকি নিজেদের অসন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন। তবে নিজের অবস্থানে অনঢ় ওয়াহাব। ঘরোয়া ক্রিকেট শেষ করেই কেবল অন্য দেশে খেলতে যাবে ক্রিকেটাররা-এমনটাই ভাবনা তার। 

এসবের জের ধরেই প্রতিনিয়ত দূরত্ব বাড়ছে নির্বাচক এবং ক্রিকেটারদের। ইমাদ ওয়াসিম ওয়াহাব রিয়াজের শর্ত মানতে না পেরেই অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এমনটাই খবর প্রকাশ করেছে তারা। আবার হারিস রউফের সঙ্গে তো দায়িত্বে আসার পরপরই ঝামেলায় জড়িয়েছেন ওয়াহাব। 

সংবাদমাধ্যমে খবর অনুযায়ী প্রধান নির্বাচকের বক্তব্য স্পষ্ট। তার ভাষ্য অনুযায়ী, ‘বর্তমানে কেন্দ্রীয় চুক্তিতে থাকা সব খেলোয়াড়কে ওয়াহাব সতর্কতা দিয়ে জানিয়েছেন, সবার আগে পাকিস্তানকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। পাশাপাশি কেউ যদি জাতীয় দলের জন্য বিবেচিত হতে চায়, তবে তাকে অবশ্যই ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলতে হবে।’

ওয়াহাব নিজের সিদ্ধান্তে ঠিক কতটা কঠোর সেটা বোঝা যায় পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের বর্তমান অবস্থা দেখলে।  ইমাদ ওয়াসিমসহ অন্য খেলোয়াড়েরা এখনো আবুধাবিতে টি–টেন লিগে খেলার জন্য অনাপত্তিপত্র পাননি। আবার অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠেয় বিগ ব্যাশে খেলার জন্য অনাপত্তিপত্র দেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়নি। গুঞ্জন আছে হারিস রউফসহ বাকিরা বিগব্যাশের অনাপত্তিপত্র পাবেন চলমান টি-টোয়েন্টি কাপের পরেই।  

আবার সম্প্রতি পিসিবিপ্রধান জাকা আশরাফ সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, পাকিস্তান সুপার লিগের বাইরে কেবল একটি বিদেশি লিগে খেলার অনুমতি পাবেন কেন্দ্রীয় চুক্তির আওতায় থাকা ক্রিকেটাররা। বিশ্বকাপে দলের ভরাডুবির জন্যও এশিয়া কাপের আগে সাবেক পিসিবিপ্রধান নাজাম শেঠির অনাপত্তিপত্র দেওয়াকে দায়ী করেছেন বর্তমান বোর্ডপ্রধান। 

এমনকি এই গুঞ্জনও আছে, ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট খেলা বা না খেলা নিয়ে এমন দ্বন্দ্বের জেরে অনেক ক্রিকেটারই এখন জাতীয় দল থেকে সরে দাঁড়াতে আগ্রহী। এসব ক্ষেত্রে অর্থের দিকটাই যে মুখ্য হয়ে উঠছে, সেটা বলাই বাহুল্য। ইমাদ ওয়াসিম তার অবসরের ঘোষণাতেও ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে নিজেকে যুক্ত রাখার কথা জানিয়েছিলেন। হারিস রউফসহ বাকিরা কোন পথে হাঁটবেন, সেটাই এখন দেখার বিষয়। 

জেএ