অবশেষে জল্পনা-কল্পনার অবসর ঘটিয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। তিন ফরম্যাটেই টাইগারদের অধিনায়ক থাকা সাকিব আগামী ৭ই জানুয়ারির নির্বাচনে লড়বেন মাগুরা-১ আসন থেকে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের হয়ে রাজনীতির মাঠে অভিষেক হচ্ছে সাকিবের। 

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে এদিন মনোনয়ন পেয়েছেন বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। তিনিও মনোনইয়ন পেয়েছেন আওয়ামী লীগ থেকেই। নড়াইল-২ আসনে অবশ্য এর আগেই একবার জনপ্রতিনিধি ছিলেন নড়াইল এক্সপ্রেসখ্যাত এই পেসার। তবে এদিন কপাল পুড়েছে বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক নাইমুর রহমান দুর্জয়ের। মানিকগঞ্জ থেকে এর আগে সংসদ সদস্যপদ পেলেও এবার আর নৌকার টিকিট পাচ্ছেন না তিনি। 

মাশরাফি বিন মর্তুজা এবং সাকিব আল হাসান 

বাংলাদেশে ক্রিকেট থেকে রাজনীতিতে আসার সংস্কৃতি অবশ্য খুব বেশিদিন আগের না। তবে উপমহাদেশের প্রেক্ষাপটে এমন ঘটনা মোটেই বিরল নয়। ভারত আর পাকিস্তানে বহু ক্রিকেটারই বাইশ গজের ক্রিকেট থেকে রাজনীতিতে এসেছেন। তাদের কেউ কেউ আবার মন্ত্রীত্ব বা দেশের প্রধানমন্ত্রীও হয়েছেন। পাকিস্তানের ইমরান খান নিজের রাজনৈতিক দল খুলেছিলেন। রাজনীতির মারপ্যাচে জেলেও গিয়েছেন। 

ক্রিকেট থেকে রাজনীতির এই তালিকায় অবশ্য সবচেয়ে বেশি আসবে ভারতীয় ক্রিকেটারদের নাম। মনোজ তিওয়ারি থেকে শুরু করে বিনোদ কাম্বলি কিংবা গৌতম গম্ভীররা বেশ আগ থেকেই রাজনীতিতে সক্রিয়। এদের মধ্যে মনোজ তিওয়ারি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের ক্রীড়ামন্ত্রীর পদে রয়েছেন। গৌতম গম্ভীর ভারতের লোকসভার সদস্য হয়েছে ২০১৯ সালে। আবার ২০১৯ সালে পাঞ্জাব প্রদেশে পর্যটন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হয়েছিলেন নভোজিৎ সিং সিধু। 

মন্ত্রী বনে যাওয়া মনোজ তিওয়ারি এবং গৌতম গম্ভীর

কীর্তি আজাদ, চেতন চৌহান, মোহাম্মদ আজহারউদ্দীনরা রাজনীতিতেও বেশ সফল ছিলেন। প্রত্যেকেই নিজের ক্রিকেট ইমেজের সুবাদে লোকসভার সদস্য হয়েছিলেন। এদিক থেকে মনসুর আলী খান পাতৌদি অবশ্য নিজেকে দুর্ভাগা ভাবতেই পারেন। দুবার লোকসভার নির্বাচনে দাঁড়িয়েও সফল হতে পারেননি টাইগার খ্যাত সাবেক এই ভারতীয় অধিনায়ক। 

পাকিস্তানেও ক্রিকেট থেকে রাজনীতিতে আসার ঘটনা বেশ সমৃদ্ধ। ইমরান খান নিঃসন্দেহে পাকিস্তানের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় তারকা। ১৯৯২ বিশ্বকাপে তার নেতৃত্বেই বিশ্বকাপের শিরোপা ঘরে তোলে পাকিস্তান। সেই ইমরান খান ক্রিকেট শেষে সক্রিয় হয়েছিলেন রাজনীতিতে। তাতে বেশ সফলও তিনি। প্রধানমন্ত্রীত্ব পেয়েছিলেন। যদিও এখন তার দিন কাটছে কারাগারে। 

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান 

আরেক পাকিস্তানি ক্রিকেটার ওয়াহাব রিয়াজ বর্তমানে পাঞ্জাব প্রদেশের ক্রীড়ামন্ত্রীর দায়িত্বে আছেন। একইসঙ্গে সম্প্রতি তিনি ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নির্বাচক হিসেবেও ডাক পেয়েছেন। 

শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটের দুই দিকপাল সনাৎ জয়সুরিয়া এবং অর্জুনা রানাতুঙ্গা  দুজনেই ১৯৯৬ সালের বিশ্বকাপ জেতা দলের সদস্য ছিলেন। জয়সুরিয়া ২০১০ সালেই রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। তখনও ক্রিকেটার হিসেবেই দিন পার করছিলেন তিনি। বিধ্বংসী এই ওপেনার পরবর্তীতে মন্ত্রীত্বও পেয়েছিলেন। 

ইমরান খানের মতোই বিশ্বকাপ জেতা অধিনায়ক ছিলেন রানাতুঙ্গা। অবসরের পরপরই ২০০১ সালে রাজনীতিতে নাম লেখান তিনি। ২০০৪ সালে লঙ্কান সরকারের শিল্প, পর্যটন এবং বিনিয়োগ মন্ত্রীর পদ পেয়েছিলেন রানাতুঙ্গা।

জেএ