ভারতের মাটিতে সপ্তাহখানেক আগেই শেষ হয়েছে ত্রয়োদশ ওয়ানডে বিশ্বকাপ। টুর্নামেন্ট চলাকালেই ওয়ানডে ফরম্যাটের ভবিষ্যৎ নিয়ে বেশ আলোচনা শোনা যাচ্ছিল। বলা হয়েছিল— এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে আইসিসির পরবর্তী সভায়। যদিও সভা শেষে ওয়ানডের ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে কিছু সামনে আনেনি বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। ফরম্যাটটিকে বাঁচিয়ে রাখতে এবার নতুন তত্ত্ব নিয়ে এসেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার কিংবদন্তি তারকা এবি ডি ভিলিয়ার্স। তিনি দুটি টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে, অর্থাৎ ৪০ ওভারে ওয়ানডে ম্যাচ নামিয়ে আনার পরামর্শ দিয়েছেন।  

মূলত টি-টোয়েন্টির জনপ্রিয়তা এবং সারাবিশ্বে ২০ ওভারের ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টের ছড়াছড়ি শুরু হতেই ওয়ানডে ক্রিকেটে চালিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে প্রশ্ন তৈরি হয়। এরপর থেকে ফরম্যাটটি টিকিয়ে রাখার পক্ষে-বিপক্ষে নানা যুক্তি ও আলোচনা চলে আসছে। যার ধারাবাহিকতায় ফরম্যাটটি বাদ দিয়ে নয়, বরং কিছুটা পরিবর্তন আনার মাধ্যমে সময়োপযোগী করার ব্যাখ্যা দিলেন সাবেক প্রোটিয়া অধিনায়ক ভিলিয়ার্স।

গতকাল (শনিবার) নিজের ইউটিউব চ্যানেলে এ প্রসঙ্গে মিস্টার থ্রি-সিক্সটি ডিগ্রী খ্যাত তারকা বলেন, ‘আমি (এবারের) বিশ্বকাপে অনুভব করেছি— খেলাটা আমার কাছে ধীরগতির লেগেছে। ৫০ ওভারের খেলাটাকে ৪০ ওভারের খেলায় রূপান্তর করা যেতে পারে। শুধু খেলাটা একটু ছোট করা আরকি। হয়তো দুটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ হতে পারে, যেখানে প্রথম টি-টোয়েন্টির পর বিরতি থাকবে। প্রথম ম্যাচ শেষে রানগুলো যোগ হবে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে।’

একইসঙ্গে বিরতির পর একাদশ পরিবর্তনের সুযোগ রাখারও পরামর্শ ভিলিয়ার্সের, ‘দ্বিতীয় ম্যাচে দলগুলো সুযোগ পাবে দলে বদল আনার। তো আপনি ১৫ জনের স্কোয়াড বাছাই করবেন। সেখান থেকে দ্বিতীয় ম্যাচে ধরুন, বাড়তি স্পিনার নামালেন। প্রথম ম্যাচ শেষে ৩০ রান পিছিয়ে থাকলে আপনি হয়তো অতিরিক্ত ব্যাটার নামিয়ে আগ্রাসী হলেন। আমার মনে হয়, এটা চমৎকার দৃশ্য হতে পারে।’

মোটকথা ওয়ানডে ফরম্যাটে অবশ্যই পরিবর্তন দরকার বলে মত সাবেক প্রোটিয়া অধিনায়কের, ‘এমনকি দ্বিতীয় ম্যাচের জন্য আরেকটা টসও হতে পারে। অথবা এভাবে হতে পারে যে, যারা প্রথমে ব্যাট করেছে, তাদের দ্বিতীয় ম্যাচে পরে ব্যাট করতেই হবে। আমার মনে হয়, এটার মধ্যে ভালো রোমাঞ্চ আছে। আমি অনুভব করি, আইসিসির কিছু না কিছু বদল আনা দরকার ৫০ ওভারের ক্রিকেটে। আমি মনে করি, ফরম্যাটটা বড় চাপের মধ্যে আছে।’

‘২০ ওভারের খেলা বিনোদনদায়ক। সবাই টি-টোয়েন্টি ভালোবাসে। ৫০ ওভারের বদলে দুইটা টি-টোয়েন্টির জায়গা আছে তাই। ৫০ ওভারের ফরম্যাট থাকবে, ওয়ানডে বিশ্বকাপও থাকবে, কিন্তু এভাবে কিছু বিনোদন আনা গেল। আমি মনে করি, এটা দর্শকদের জন্য খুবই বিনোদনদায়ক হবে। দুই টি-টোয়েন্টির মাধ্যমে সময় কিছুটা কমিয়েও আনা যাবে। সৃজনশীল হোন, ক্রিকেটবিশ্বে এখন সৃজনশীল হওয়ার সময়’, আরও যোগ করেন ভিলিয়ার্স।

এর আগে ওয়ানডে ফরম্যাটকে দু’ভাগে ভাগ করার পরামর্শ দিয়েছিলেন ভারতীয় কিংবদন্তি শচীন টেন্ডুলকারও। যদিও তার যুক্তিটা তুলনামূলক ভিন্ন– শুধু ২৫ ওভারের আলাদা দুটি ইনিংসে ৫০ ওভারের ম্যাচ আয়োজনের কথা বলেছিলেন শচীন। টেস্ট ক্রিকেটের মতোই দুই ইনিংস মিলিয়ে ৫০ ওভার ব্যাট করবে একটা দল। এরপর ফলাফল আসবে ২৫ ওভারের দুই ইনিংস মিলিয়ে, তবে এখানে থাকবে ১০ উইকেট, ২০ উইকেট নয়।

এএইচএস