রোহিত শর্মার ব্যাটে ঝোড়ো শুরু করেছিল ভারত। তবে শ্রেয়াস আইয়ার-সূর্যকুমাররা ব্যর্থ হওয়ায় বড় সংগ্রহ গড়তে পারেনি স্বাগতিকরা। বিরাট কোহলি-লোকেশ রাহুলের ফিফটিতে ভর করে ২৪০ রান তুলেছে তারা। ২৪১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে সদ্রুত ৩ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়েছিল অস্ট্রেলিয়া। তবে হেডের সেঞ্চুরিতে ঘুরে দাঁড়িয়ে সহজ জয় তুলে নিয়েছে অজিরা। তাতে রেকর্ড ষষ্ঠবার শিরোপা ঘরে তুললো অজিরা।

ভারত- ২৪০/১০ (ওভার : ৫০.০)

অস্ট্রেলিয়া- ২৪১/৩ (ওভার : ৪৩.০)

 

হেডের সেঞ্চুরি

একা হাতেই যেন দলকে টানছেন ট্রাভিস হেড। ফাইনালের বড় মঞ্চে এসে নিজেকে আরো একবার প্রমাণ করলেন। দলকে শিরোপার পথে রাখার পাশাপাশি তুলে নিয়েছেন ব্যক্তিগত সেঞ্চুরিও। ৯৫ বলে তিন অঙ্ক ছুঁয়েছেন তিনি।

হেড-ল্যাবুশেনে এগোচ্ছে অজিরা, উইকেটের খোঁজে ভারত

দ্রুত ৩ উইকেট হারানোর পর দলকে টেনে তুলেছেন হেড-ল্যাবুশেন। চতুর্থ উইকেটে এই দুইজনের অবিচ্ছিন্ন একশোর্ধ্ব জুটিতে জয়ের পথেই এগোচ্ছে অস্ট্রেলিয়া। অন্যদিকে ম্যাচে ফিরতে উইকেটের খোঁজে ভারত।

হেডের ফিফটি

দলের বাজে সময়ে ব্যাট হাতে হাল ধরেছেন হেড। এক প্রান্তে তিন ব্যাটার সাজঘরে ফিরলেও আরেক প্রান্তে অবিচল আছেন এই ওপেনার। ইতোমধ্যেই তুলে নিয়েছেন ফিফটি। ৫৮ বলে এই মাইলফলক ছুঁয়েছেন তিনি।

জুটি গড়ার চেষ্টায় হেড-ল্যাবুশেন

দলীয় ৫০ রানের আগেই ৩ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছিল অজিরা। সেখান থেকে দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করছেন ট্রাভিস হেড। তাকে যোগ্য সঙ্গ দিচ্ছেন মার্নাস ল্যাবুশেন।

ব্যাটিং বিপর্যয়ে অস্ট্রেলিয়া

দ্রুত দুই উইকেট হারানোর পর দায়িত্ব বাড়ে স্টিভেন স্মিথের ঘাড়ে। সেই চাপ নিতে পারলেন না এই অভিজ্ঞ ব্যাটার। উল্টো দ্রুত আউট হয়ে দলের বিপদ বাড়ালেন। সপ্তম ওভারের শেষ বলটি অফ স্টাম্পের সামান্য বাইরে করেছিলেন বুমরাহ, ইনসুইং করে ভেতরের দিকে ঢোকা বলে লাইন মিস করে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েছেন স্মিথ। যদিও পরে দেখা গেছে, বলের ইম্প্যাক্ট ছিল অফ স্টাম্পের বাইরে। রিভিউ নিলে বেঁচে যেতেন স্মিথ।

ওয়ার্নার-মার্শকে হারিয়ে চাপে অস্ট্রেলিয়া

ওয়ার্নারের পর ব্যর্থ হলেন মিচেল মার্শও। চতুর্থ ওভারে শামিকে ছক্কা হাঁকিয়ে ভালো শুরুর আভাস দিয়েছিলেন মার্শ। তবে পরের ওভারেই বুমরাহর সুইংয়ের সামনে অসহায় আত্মসমর্পণ করলেন এই টপ অর্ডার ব্যাটার। অফ স্টাম্পের বাইরের বলে ব্যাট চালিয়ে রাহুলের হাতে ধরা পড়লেন তিনি। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ১৫ বলে ১৫ রান।

ওয়ার্নারকে দাঁড়াতেই দিলেন না শামি

প্রথম ওভারে উড়ন্ত শুরু করেছিল অস্ট্রেলিয়া। তবে দ্বিতীয় ওভারেই ঘুরে দাঁড়াল ভারত। অফ স্টাম্পের বেশ বাইরের বলে ব্যাট চালিয়ে স্লিপে ক্যাচ দিয়েছেন ওয়ার্নার, প্রথম স্লিপে ভুল করেননি কোহলি। উইকেট লাগবে বলে শামিকে আনা হয়েছে দ্বিতীয় ওভারেই, সফলও হলেন স্বপ্নের মতো বিশ্বকাপ কাটানো এ পেসার।

আড়াইশ করতে পারল না ভারত

পুরো বিশ্বকাপে ব্যাট হাতে দুর্দান্ত ছন্দে ছিলেন ভারতের টপ অর্ডার। তাদের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের সুবাদে খুব একটা পরীক্ষা দিতেই হয়নি ভারতের মিডল অর্ডারকে। কিন্তু ফাইনালে এসেই যেন হোঁচট খেতে হলো টিম ইন্ডিয়াকে। প্রায় দেড় লাখ দর্শককে চুপ করিয়ে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন প্যাট কামিন্স। সেটায় কিছুটা হলেও সফল হয়েছেন অজি বোলাররা। দুর্দান্ত বোলিংয়ে স্বাগতিকদের তারা আটকে দিয়েছে ২৪০ রানেই। 

অলআউটের শঙ্কায় ভারত

মোহাম্মদ শামি-জাসপ্রিত বুমরাহরা দ্রুত ফেরায় ঘোর অন্ধকারে ভারত! এক প্রান্তে সূর্যকুমার যাদব এখনো অবিচল আছেন। তবে তার সঙ্গীর যে বডড অভাব! ইনিংসের এখনো ৫ ওভারের মতো বাকি। এখন ৫০ ওভার শেষ করে আসাই ভারতের জন্য দায়!

৫ উইকেট হারিয়ে চাপে ভারত

মিডল অর্ডার ব্যর্থতার দিনে ব্যাটিংয়ে প্রমোশন দেওয়া হয় রবীন্দ্র জাদেজাকে। তবে টিম ম্যানেজমেন্টের আস্থার প্রতিদান দিতে পারেননি জাদেজা। দেখে-শুনে খেলেও বেশিক্ষণ উইকেটে থাকতে পারেননি। ৩৬তম ওভারের পঞ্চম বলে হ্যাজলউডের খাটো লেন্থের ডেলিভারীতে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ২২ বলে ৯ রান।

৮৫ বলে রাহুলের ফিফটি

রাহুল যখন উইকেটে আসেন কিছুটা চাপেই ছিল ভারত। তবে চতুর্থ উইকেটে কোহলির সঙ্গে তার ৬৭ রানের জুটিতে আবার ঘুরে দাড়ায় স্বাগতিকরা। কিন্তু রাহুল এখনো খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসতে পারেননি। ধীরগতির ইনিংস খেলেও ফিফটি পেয়েছেন। ৮৫ বলে ছুঁয়েছেন এই মাইলফলক।

কোহলিকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙলেন কামিন্স

রাহুলকে সঙ্গে নিয়ে বড় জুটি গড়ার চেষ্টায় ছিলেন কোহলি। তবে ব্যক্তিগত ফিফটি করে আর বেশি দূর এগোতে পারলেন না। ২৯তম ওভারের তৃতীয় বলটি খানিকটা খাটো লেন্থে করেছিলেন কামিন্স, সেখানে লাইন মিস করে বোল্ড হয়েছেন কোহলি। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ৬৩ বলে ৫৪ রান।

কোহলির টানা পঞ্চম ফিফটি

ঘরের মাঠের বিশ্বকাপটা রানের বন্যায় ভাসিয়েছেন বিরাট কোহলি। আসর জুড়ে দুর্দান্ত ব্যাটিং করা এই টপ অর্ডার ব্যাটার ফাইনালে এসেও ফিফটির দেখা পেলেন। ৫৬ বলে এই মাইলফলক ছুঁয়েছেন। এটি তার টানা পঞ্চম পঞ্চাশোর্ধ্ব ইনিংস। সবমিলিয়ে আসরে ১০ ম্যাচের ৮টিতেই পঞ্চাশোর্ধ্ব ইনিংস খেলেছেন তিনি।

শেষ ১৫ ওভারে কোনো বাউন্ডারি মারতে পারেনি ভারত

কোহলি-রাহুল জুটি গড়ার চেষ্টা করছেন। তাদের ধীরগতির ব্যাটিংয়ের প্রভাব পড়েছে রান রেটেও। পাওয়ার প্লেতে ওভার প্রতি ৮ করে রান তুলেছিল ভারত। ২৫ ওভার শেষে সেটা ৬ এর নিচে নেমে এসেছে। শেষ ১৫ ওভারে কোনো বাউন্ডারি হাঁকাতে পারেনি স্বাগতিকরা।

একশো পেরিয়ে ভারত

উড়ন্ত শুরুর পর পরপর দুই ওভারে দুই উইকেট হারিয়ে কিছুটা বিপাকে পড়েছিল ভারত। লোকেশ রাহুল-কোহলি মিলে সেই বিপর্যয় সামল দেওয়ার চেষ্টা করছেন। এই দুইজনের সাবধানী ব্যাটিংয়ে ১৫ ওভার ৪ বলে ১০০ পেরিয়েছে ভারত।

শুরুতেই তিন উইকেট হারিয়ে বিপদে ভারত

রোহিতের পর উইকেটে এসে আক্রমণাত্মক শুরুর চেষ্টা করেছিলেন শ্রেয়াস আইয়ার। তার খেলা দ্বিতীয় বলে ম্যাক্সওয়েলকে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে রানের খাতা খুলেন। তবে বেশিক্ষণ টিকতে পারলেন না। পরের ওভারেই এই ব্যাটারকে সাজঘরে ফিরিয়েছেন প্যাট কামিন্স। এই পেসারের খানিকটা নিচু হওয়া বলে শট অফার করে বিপদে পড়েন আইয়ার, ব্যাটের বাইরের দিকের কানায় লেগে বল চলে যায় উইকেটকিপারের গ্লাভসে। তাতে ৩ বল খেলে ৪ রানেই থামতে হয় আইয়ারকে।

ঝোড়ো ব্যাটিংয়ের পর ফিরলেন রোহিত

শুরু থেকেই আগ্রাসী ছিলেন রোহিত। শুভমান গিল দ্রুত ফিরলেও কোহলির সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ইনিংসের সপ্তম ওভারেই দলীয় সংগ্রহ পঞ্চাশ ছাড়ায় ভারতের। ব্রেকথ্রুর আশায় অষ্টম ওভারে প্রথমবারের স্পিন আক্রমণে আনেন প্যাট কামিন্স। গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকেও পাত্তা দিচ্ছিলেন না রোহিত। ওভারের দ্বিতীয় বলেই লং অনের ওপর দিয়ে মেরেছেন ছক্কা। পরের বলে চার।

তবে মোমেন্টাম ধরে রাখতে পারলেন না আর। ক্যাচ উঠেছিল কাভারে। পেছন দিকে ছুটে ট্রাভিস হেড নিয়েছেন দুর্দান্ত ক্যাচ। ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট হয়ে যায় কি না। রোহিত থামলেন ৩১ বলে ৪৭ রান করে।

নীল সমুদ্রে পরিণত আহমেদাবাদ

বল মাঠে গড়ানোর আগে দৃষ্টিনন্দন ‘অ্যারোবেটিক শো’ দেখায় ভারতীয় বিমান বাহিনী

ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ, তার ওপর দারুণ ফর্মে আছেন রোহিত শর্মারা। দীর্ঘদিন পর আরেকটি শিরোপা জয় দেখার আশায় ভারতের প্রায় ১৭০ কোটি জনতা। যার একটি অংশ আজ আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে হাজির হয়েছেন। বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ এই ভেন্যুর ‍হিসাবে দেখা হলে— হতে পারে এক লাখ ৩০ হাজার দর্শক। নগণ্য অস্ট্রেলিয়ান ভক্তদের চারদিকে পরিণত হয়েছে ‘নীল সমুদ্র।’

গিলকে ফেরালেন স্টার্ক

ফাইনালে স্নায়ুচাপ ধরে রাখতে পারলেন না শুভমান গিল। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে মিচেল স্টার্কের অফ স্ট্যাম্পের বাইরে শর্ট বলে যেভাবে চেয়েছিলেন, সেভাবে খেলতে পারেননি। পুল করতে গিয়ে মিড অনে অ্যাডাম জাম্পার হাতে ধরা পড়েছেন। ৭ বলে স্রেফ ৪ রান করেছেন ভারতীয় এই ওপেনার। তিনে ব্যাট করতে নেমেছেন বিরাট কোহলি। 

টস জিতে ফিল্ডিংয়ে অস্ট্রেলিয়া

ক্রিকেটের মহারণী ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অজি অধিনায়ক কামিন্স। দুই দলই আজ অপরিবর্তিত একাদশ নিয়ে নেমেছে।

ভারতের একাদশ : রোহিত শর্মা (অধিনায়ক), শুভমান গিল, বিরাট কোহলি, বিরাট কোহলি, শ্রেয়াস আইয়ার, লোকেশ রাহুল (উইকেটরক্ষক), সূর্যকুমার যাদব, রবীন্দ্র জাদেজা, কুলদীপ যাদব, জাসপ্রিত বুমরাহ, মোহাম্মদ শামি ও মোহাম্মদ সিরাজ।

অস্ট্রেলিয়ার একাদশ : প্যাট কামিন্স (অধিনায়ক), ডেভিড ওয়ার্নার, ট্রাভিস হেড, মিচেল মার্শ, স্টিভেন স্মিথ, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, মারনাস লাবুশেন, জশ ইংলিস (উইকেটরক্ষক), অ্যাডাম জ্যাম্পা, মিচেল স্টার্ক ও জশ হ্যাজলউড।

এএইচএস/এফআই