বিশ্বকাপে ব্যর্থতার দায়ভার নিয়ে পাকিস্তানের অধিনায়কত্ব ছাড়তে হয়েছে তারকা ব্যাটসম্যান বাবর আজমকে। ইতোমধ্যে দুটি ফরম্যাটে নতুন অধিনায়কও বেছে নিয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। তবে এখনও কাউকে ওয়ানডের দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। নেতৃত্বভার হাতছাড়া হতেই এবার বাবরকে টি-টোয়েন্টি দল থেকেও ছাটাইয়ের দাবি উঠেছে। জাতীয় দলের সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে তার জায়গা দেখছেন না পেসার মোহাম্মদ আমির ও স্পিন অলরাউন্ডার ইমাদ ওয়াসিম।

দেশটির টেলিভিশন জিও নিউজের ‘হার না মানা হ্যায়’ অনুষ্ঠানে তারা এমন মন্তব্য করেছেন। একইসঙ্গে পাকিস্তান জাতীয় দলের স্কোয়াড গঠনের প্রক্রিয়াকে কাঠগড়ায় তুললেন দুই তারকা ক্রিকেটার। সেজন্য প্রচলিত সিস্টেম বদলে ফেলারও দাবি তুলেছেন ইমাদ-আমির। এই দুই ক্রিকেটারকে বিশ্বকাপ দলে জায়গা না পাওয়া নিয়ে বাবরের ওপর দায় দেওয়া হয়। এবার তাদের কথায়ও যেন তেমনই সুর বেজে উঠেছে!

অনুষ্ঠানের সঞ্চালক তাবিশ হাশমি আমিরের কাছে জানতে চান, বাবরের তিন সংস্করণের দলেই জায়গা আছে কি না? জবাবে আমির বলেন, ‘টি-টোয়েন্টিতে বাবরের জায়গা নেই।’ এরপর হাশমি প্রশ্ন করেন ইমাদের প্রতি। তার কাছে জানতে চান, আমিরের মতের সঙ্গে তিনি একমত কি না? ইমাদ এর জবাবে জানান, ‘কঠিন সিদ্ধান্ত। তবে আমার মনে হয়, টি-টোয়েন্টিতে নেই।’

এছাড়া আমির বলেছিলেন, ‘আমরা বলছি, সিস্টেম ঠিক করতে হবে, সিস্টেমকে বদলাতে হবে, অধিনায়ক বদলালে হবে না। উদাহরণ দেওয়া যাক—১৯৯২ সালে ইমরান খানের নেতৃত্বে আমরা বিশ্বকাপ জিতেছি, এই সিস্টেমই কিন্তু ছিল। ১৯৯৯ সালে আমরা ফাইনালে খেলেছি, তখনও একই সিস্টেম ছিল। এরপর আমরা ২০০৯ সালে একই সিস্টেম নিয়ে বিশ্বকাপ জিতলাম। একইভাবে ২০১৭ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিও জিতেছি। এতে কী প্রমাণিত হয়? একই সিস্টেম অনেকদিন ধরে চলে আসছে। তাই অধিনায়কই হচ্ছে আসল ব্যাপার। অধিনায়ককে সিস্টেম থেকে আলাদা করবেন না। এই অধিনায়কই চার বছর ধরে নেতৃত্ব দিচ্ছে। সে–ই নিজের মনমতো এই দল তৈরি করেছে।’

এবারের বিশ্বকাপ জয়ের প্রতিশ্রুতি নিয়ে বাবররা ভারতে পা রাখলেও, তাদের বিদায় হয়েছে সেমিফাইনালের আগেই। ৯ ম্যাচের ৪ জয়ে পয়েন্ট টেবিলের পাঁচে থেকে তাদের বিদায় নিশ্চিত হয়। এমনকি তারা হেরেছে আফগানিস্তানের বিপক্ষেও। বাবরের নেতৃত্বাধীন এই দলের সমালোচনা হয়েছে পুরো বিশ্বকাপেই। ইমাদ এবং আমিরও পুরো বিশ্বকাপেই সরব ছিলেন, পাকিস্তান দলের নিয়মিত সমালোচনা করেছেন, বিশেষ করে বাবরের। বিশ্বকাপ ব্যর্থতার পর যখন অনেকেই পাকিস্তানের পুরো সিস্টেমকে দায় দিচ্ছিলেন, তখনও বাবরকে কাঠগড়ায় তুলেছেন আমির।

টি-টোয়েন্টি অনেকদিন ধরেই বাবরের স্ট্রাইকরেট নিয়ে সমালোচনা হয়ে আসছে। তবে তার ব্যাটিং পরিসংখ্যানে নজর রাখলে, তাতে সায় দেওয়ার সুযোগ হয়তো তেমন পাওয়া যাবে না। এখন পর্যন্ত তিনি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ৯৮টি ইনিংস খেলেছেন। যেখানে তার গড় ৪১.৪৮ গড়, রয়েছে ৩টি শতক ও ৩০টি অর্ধশতকও। যে স্ট্রাইক রেট নিয়ে তার সমালোচনা করা হয় সেটি– ১২৮.৪০। 

এএইচএস