বুমরাহর বলে কেইন উইলিয়ামসনের ক্যাচ ফসকানোর পর হতাশ শামি।

রাজসিক প্রত্যাবর্তন যাকে বলে। বিশ্বকাপে ভারতের প্রথম চার ম্যাচে জাসপ্রিত বুমরাহ, মোহাম্মদ সিরাজ কিংবা হার্দিক পান্ডিয়াদের ভিড়ে মাঠেই নামা হয়নি মোহাম্মদ শামির। লিগপর্বে ধর্মশালায় নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ফিরেই বাজিমাত। ৫৪ রানে ৫ উইকেট নিয়ে হন ম্যাচসেরা। সর্বশেষ গতকাল সেমিফাইনালে সেই কিউইদের স্বপ্ন ভেঙ্গে এক যুগ পর ভারতকে ফাইনালে তোলার মহানায়কও শামি। 

মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে কোহলির এভারেস্ট ছোঁয়ার দিনে সব আলো কেড়ে নিলেন যেন একজন মোহাম্মদ শামি। ঘরের মাটিতে ৩৯৭ রানের বড় সংগ্রহ দাঁড় করিয়েও যেন নিশ্চিন্ত হতে পারছিলেন না ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা। এরপর বল হাতে অবিশ্বাস্য কিছুই করলেন শামি। দিনশেষে তার বোলিং ফিগার দাঁড়ায় ৯.৫ ওভারে ৫৭ রান খরচায় ৭ উইকেট। মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে সেমিফাইনাল যেন বদলে গেল ‘শামি-ফাইনালে।’এখন পর্যন্ত ৬ ম্যাচ খেলে তিনটিতেই ম্যান অফ দ্য ম্যাচ হলেন ভারতীয় এই পেসার। 

ভারতের প্রথম বোলার হিসাবে বিশ্বকাপের ম্যাচে ৭ উইকেট নিয়ে খুশি হলেও একটি ব্যাপারে আক্ষেপ যাচ্ছে না তার। ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার নেওয়ার পর শামির গলায় আফসোস। তিনি বললেন, ‘কেন উইলিয়ামসনের ক্যাচটা আমার অবশ্যই ধরা উচিত ছিল। সহজ ক্যাচ ফেলা আমার উচিত হয়নি। ভীষণ খারাপ লাগছিল। তারপর আমার লক্ষ্য ছিল, কম গতিতে বল করা। কারণ ওদের মেরে খেলতেই হত। তাই জানতাম সুযোগ আসবেই। সেটাই চেষ্টা করেছি।’

এখন পর্যন্ত চলতি বিশ্বকাপে ২৩ উইকেট নিয়ে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি শামি। কীভাবে এমন সাফল্য? শামি বলেন, ‘সুযোগের অপেক্ষা করছিলাম। খুব বেশি সাদা বলের ক্রিকেট খেলার সুযোগ পাইনি। তবে সুযোগ পেলে কাজে লাগানোর চেষ্টা করি। লিগ পর্বে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম সুযোগ পেয়েছিলাম। অনেকে বোলিংয়ে বৈচিত্র্যের কথা বলেন। কিন্তু আমার লক্ষ্য থাকে শুধু সঠিক জায়গায় বল ফেলা। আমি বিশ্বাস করি ঠিক জায়গায় বল রাখতে পারলে নতুন বলে উইকেট আসবেই। ম্যাচের যে কোনো সময়ই উইকেট আসতে পারে।’

ওয়াংখেড়ের উইকেট থেকে কতটা সাহায্য পেলেন? শামির বক্তব্য, ‘উইকেট বেশ ভালো ছিল। দুপুরে ব্যাটাররা প্রচুর রান করেছে। উইকেটে কোনো ঘাস রাখা হয়নি। শিশির পড়তে পারে, এমন একটা আশঙ্কা ছিল। তেমন হলে উইকেটে বল পিছলে ব্যাটারের কাছে যেত। তাতে রান তোলা আরও কিছুটা সহজ হত। খুব বেশি শিশির না পড়ায় সুবিধা হয়েছে। তবে সেমিফাইনালে এমন পারফরম্যান্স করতে পেরে সত্যিই দারুণ লাগছে।’

এরপর ফাইনাল। কী লক্ষ্য থাকবে আপনার? শামি বলেন, ‘গত দু’টা বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠতে পারিনি আমরা। সেমিফাইনালে হারতে হয়েছে। তাই আমরা এবার সুযোগ কাজে লাগাতে বদ্ধপরিকর ছিলাম। দলের কেউ চাইনি এবারের সুযোগ নষ্ট করতে। যা যা সুযোগ আসবে, সব কাজে লাগাতে চাই আমরা।’

এফআই