ঘরোয়া ক্রিকেটে আরও একবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে আম্পায়ারিং বিতর্ক। পুরো দেশের নজর যখন জাতীয় দলের ভরাডুবির দিকে, তখন অনেকটা সবার চোখের আড়ালেই ঘরোয়া ক্রিকেটে চলছে বিতর্কিত এবং নিম্নমানের আম্পায়ারিং। চলমান জাতীয় ক্রিকেট লিগে বিশেষ একটি দলকে সুবিধা দিতে যেন মরিয়া দেশীয় আম্পায়াররা। 

সম্প্রতি প্রকাশিত এক ফুটেজে উঠে এসেছে নিম্নমানের আম্পায়ারিংয়ের এমন চিত্র। ঘরোয়া ক্রিকেটে একাধিক ম্যাচের বিতর্কিত সিদ্ধান্তের ভিডিও ফুটেজ নিয়ে চলছে আলোচনা। জাতীয় দলের একসময়ের নিয়মিত মুখ সৈয়দ রাসেল তার ফেসবুক প্রোফাইলে তুলে ধরেছেন এর নমুনা। প্রশ্ন তুলেছেন এসব আম্পায়ারিং এর মান নিয়ে। 

এই ক্যাচের পরেই আউটের সিদ্ধান্ত আসেনি

লক্ষ্যণীয়, জাতীয় দলের তারকা খেলোয়াড়ে সমৃদ্ধ চট্টগ্রাম বিভাগের দলকে যেন বিশেষ সুবিধা দিতে মরিয়া দায়িত্বপ্রাপ্ত আম্পায়াররা। মাঠে তাদের বিতর্কিত সিদ্ধান্তের কারণে ক্ষুব্ধ ক্রিকেটাররা। তবে কোড অব কন্ডাক্টের কারণে নিরুপায় তারাও।।

চট্টগ্রাম এবং খুলনা বিভাগের ম্যাচের চিত্র। আল-আমিন হোসেনের বলে স্লিপে ক্যাচ তুলে দিয়েছেন চৌধুরী ইয়াসির আলী রাব্বি। সংগ্রহীত ভিডিও ফুটেজেই স্পষ্ট মাটিতে পড়ার আগেই নিয়ম অনুযায়ী বৈধ ক্যাচ নিয়েছেন ফিল্ডার। খুলনা বিভাগ উইকেট পাওয়ার উল্লাসে মত্ত। তবে স্ট্রাইকে থাকা ইয়াসির রাব্বি নিজের অবস্থানে অনড়। আম্পায়ারও কোন সংকেত দিলেন না আউটের। 

একইম্যাচের আরেকচিত্র। নাহিদুল ইসলামের বলে শর্টে ক্যাচ। খুলনার খেলোয়াড়রা যখন উল্লাসে মত্ত, তখন চট্টগ্রামের নাইম নিজের হাত দিয়ে ইশারা করছেন বল ক্রিজে ড্রপ খেয়ে ফিল্ডারের কাছে গিয়েছে। এবারেও আম্পায়ার সায় দিলেন চট্টগ্রামের পক্ষে। আরও একবার ক্ষুব্ধ খুলনার ক্রিকেটাররা। 

এমন লেগবিফোরের আবেদনেও সাড়া মেলেনি

২য় ফুটেজে চলছে চট্টগ্রাম এবং বরিশাল বিভাগের খেলা। স্ট্রাইকে সেই নাইম। বোলার সালমানের সোজা বল সরাসরি আঘাত করে নাইমের প্যাডে। নিশ্চিত এলবিডব্লিউ এর উল্লাস বরিশালের খেলোয়াড়দের মধ্যে। তবে আম্পায়ার অনড়। অনড় ব্যাটার নাইমও। বরিশালের খেলোয়াড়রা ক্ষুব্ধ হলেও ক্রিকেটের শেখানো বুলি ‘আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত’ মেনেই চলতে হচ্ছে তাদের। 

এর আগে মোহামেডানের জার্সিতে স্ট্যাম্পে লাথি মেরে কিংবা স্ট্যাম্প উপড়ে ঘরোয়া ক্রিকেটের আম্পায়ারিংয়ের প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন দেশের ক্রিকেটের বড় তারকা সাকিব আল হাসান। তাকে সেসময় বড় অঙ্কের টাকা জরিমানা করা হয়েছিল। সেবার বেশ বড় রকমের ঝড় সইতে হয়েছিল দেশের আম্পায়ারদের। যদিও তাতে সামগ্রিক কোন পরিবর্তন আসেনি। 

তবে এমন প্রতিবাদ সম্ভব ছিল শুধুমাত্র জাতীয় দলের ক্রিকেটার বলেই। স্থানীয় পর্যায়ের বেশিরভাগ ক্রিকেটারই এমন সিদ্ধান্ত মেনে নিচ্ছেন কেবল নিজের বৃহত্তর ক্রিকেটিং ক্যারিয়ারের কথা ভেবে। তবে এমন আম্পায়ারিং দেশের ক্রিকেটকেই যে পিছিয়ে দিচ্ছে, তাতে যেন নজর নেই কারোরই। 

জেএ