বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল খেলতে কঠিন এক সমুদ্র পাড়ি দিতে হতো পাকিস্তানের! নেট রানরেটে তারা এতটাই পিছিয়ে ছিল যে— শেষ ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তাদের ৪০ বলে ৩৩৮ রান করতে হতো। কিন্তু সেটি করবে কী! উল্টো ম্যাচই হেরে গেছে ৯৩ রানের বড় ব্যবধানে। বিশ্বকাপে ব্যর্থতার জন্য ব্যাট হাতে অধারাবাহিক অধিনায়ক বাবর আজমকেই আগে থেকেই দুষছেন দেশটির সাবেক ক্রিকেটাররা। বিশ্বকাপ শেষে তিনি নেতৃত্ব ছাড়তে পারেন কিংবা তাকে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে বলেও গুঞ্জন চলছিল। এবার বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন পাকিস্তানের টিম ডিরেক্টর মিকি আর্থার।

নিজের কঠিন সময়ে বাবর পাশে পাচ্ছেন এই দক্ষিণ আফ্রিকানকে। আর্থার বলছেন, ‘বাবরের পাশে আছি। বাবর তরুণ একজন ব্যাটসম্যান, অধিনায়ক হিসেবেও সে প্রতিদিন শিখছে। সে প্রতিনিয়ত বেড়ে উঠছে, তাকে বেড়ে ওঠার সুযোগ দিতে হবে। সামনে এগোতে গেলে ভুল হবে। ভুল থেকে শিক্ষা নিলে, ভুল করা অপরাধ নয়। দল হিসেবে আমরা অনেক ভুল করেছি, যদি দল এখান থেকে শিখতে পারে, তাহলে খুব ভালো। ভালো দল হওয়ার সব উপাদানই এদের মধ্যে আছে।’

পাকিস্তান আক্রমণাত্মক খেলার সঙ্গে অভ্যস্ত নয় বলে বিশ্বকাপের আগে থেকে অভিযোগ ওঠে আসছে। অনেকে তো বলতেও ছাড়েননি যে– নব্বই দশকের ক্রিকেট খেলছে পাকিস্তান। তাদের খেলার কৌশল নিয়ে আর্থারের ভাষ্য, ‘ব্যাটিংয়ের কথা যদি বলি, আমাদের ৩৩০ থেকে ৩৫০ করার মতো দল হয়ে উঠতে হবে। যে দলগুলো এমনটা ধারাবাহিকভাবে করছে, তারাই সেমিফাইনালে। আমার মনে হয় না, আমরা ধারাবাহিকভাবে এমনটা করতে পেরেছি। যখন ফখর জামান দারুণ শুরু করে, তখনই আমরা পারি, কিন্তু একজনের ওপর তো আর প্রতিদিন ভরসা করতে পারি না।’

এছাড়া বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বড় হতাশার কারণ ছিলেন বোলাররা। বিশেষত পেসারদের ওপর যে আস্থা ছিল সেটার যোগ্য প্রতিদান দিতে পারেননি শাহিন আফ্রিদি ও হারিস রউফরা। বিশ্বকাপের আগে নাসিম শাহ ইনজুরির কারণে ছিটকে গিয়েছিলেন। সেটিকেই এমন পারফরম্যান্সের জন্য বড় কারণ হিসেবে দেখাতে চাইলেন আর্থার, ‘অজুহাত দিচ্ছি না। নাসিম শাহ ধারাবাহিকভাবে ভালো বোলিং করতে পারত, যে কারণে শুরুর দিকে আক্রমণাত্মক বোলিং করতে পারত শাহিন আফ্রিদি। এরপর লেগ স্পিনার ও হারিস রউফকে দিয়ে আক্রমণ করাতে পারতেন। নাসিম না থাকায় আমাদের বোলিং আক্রমণে ভারসাম্য ছিল না। সমস্যা হয়েছে, কিন্তু এটা অজুহাত নয়। কারণ, সত্যি বলতে আমরা ভালো ক্রিকেট খেলিনি।’

এর আগে পাকিস্তান টানা দুই জয় দিয়ে বিশ্বকাপটা দারুণভাবে শুরু করেছিল। নেদারল্যান্ডস ও শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করা বাবরের দল এরপর হারে টানা চার ম্যাচে। পরে বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জিতলেও মূলত ওই টানা চার হারেই তারা বিশ্বকাপ থেকে অনেকাংশে ছিটকে যায়।

যেখানে বাবরের নেতৃত্বে ঘাটতি দেখছেন অনেকে। এছাড়া ব্যাট হাতেও বাবর ছিলেন গড়পড়তা। চারটি অর্ধশতকে ৪০ গড় আর ৮২.৯০ স্ট্রাইক রেটে রান করেছেন ৩২০, যা মোটেই বাবরসুলভ নয়। আর ব্যাট হাতে বাবর যে প্রত্যাশামতো পারফর্ম করতে পারেননি, সেটা তিনি নিজেই ইংল্যান্ড ম্যাচের আগে স্বীকার করেছেন। 

এএইচএস