স্বাগতিক ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়ার পর চতুর্থ দল হিসেবে নিউজিল্যান্ডের সেমিফাইনালে খেলা এখন সময়ের অপেক্ষা কেবল। নিজেদের শেষ ম্যাচে লঙ্কানদের বড় ব্যবধানে হারিয়ে কাজটা এগিয়েই রেখেছিল কেন উইলিয়ামসনের দল। কাগজে-কলমে পাকিস্তানের বিদায় এখনও নিশ্চিত না হলেও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে টস হারে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে বাবর আজমের দলের।

কিউইদের টপকে শেষ চারে জায়গা নিশ্চিত করতে হলে ইংল্যান্ডকে শুধু হারালেই হবে না, সেই সঙ্গে মেলাতে হবে ‘অবাস্তব’ সমীকরণ। কার্যত ম্যান ইন গ্রিনদের বিদায়ঘণ্টা বেজে গেছে।

আরেকটি ব্যর্থ বিশ্বকাপ। একবিংশ শতাব্দীতে অনুষ্ঠিত হওয়া ৬ বিশ্বকাপের পাঁচটিতেই শেষ চারে খেলতে ব্যর্থ হলো ৯২’ বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। পাকিস্তানের এমন কঠিন পরিস্থিতির জন্য অনেকেই অধিনায়ক বাবর আজমকে দুষছেন। সাবেকদের কেউ কেউ তাকে নেতৃত্ব ছাড়তেও চাপ দিচ্ছেন। এর মধ্যেই পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ দাবি করেছে, বিশ্বকাপের পর দেশে ফিরেই নেতৃত্ব ছাড়তে চলেছেন বাবর। 

ভারত বিশ্বকাপে টানা দুই জয়ে আসর শুরুর পর টানা চার ম্যাচে হেরে শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই থেকে অনেকটা ছিটকে যায় পাকিস্তান। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা ছাড়াও হারতে হয়েছে আফগানিস্তানের বিপক্ষেও। এমন ভরাডুবিতে শুরু থেকেই দলের সমালোচনায় মুখর দেশটির সাবেক ক্রিকেটাররা। কাঠগড়ায় তুলছেন অধিনায়ক বাবর আজমকেও। 

চলতি বিশ্বকাপে ব্যাট হাতে খুব একটা খারাপ করেননি বাবর। চার অর্ধশতকে করেছেন ২৮২ রান। তবে এই পারফরম্যান্স ঠিক বাবরসুলভ নয়। চারটি অর্ধশতক পেলেও একটাকেও শতক বানাতে পারেননি। দলকে বিপদে ফেলে আউট হয়েছেন বেশ কয়েকবারই। যা নিয়েই মূলত সমালোচনা হচ্ছে। এ ছাড়া বাবরের ঘনিষ্ঠ হিসেবে অনেকে মনে করছেন, অধিনায়কত্বের চাপের কারণে স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে পারছেন না বাবর। দলের ও নিজের কঠিন এই সময়ে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডকেও (পিসিবি) পাশে পাননি। উল্টো ব্যক্তিগত হোয়াটসঅ্যাপ বার্তা ফাঁস করাসহ বিব্রতকর মুহূর্ত তৈরি হয়।

জিও নিউজ জানিয়েছে, ভারতে থাকতেই প্রথমে অধিনায়কত্বের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে চেয়েছিলেন বাবর। তবে এখন তিনি সিদ্ধান্ত নেবেন বিশ্বকাপের পর দেশে ফিরে। ইংল্যান্ড ম্যাচের ভেন্যু ইডেন গার্ডেনে এই বিষয়ে রমিজ রাজার সঙ্গেও তিনি কথা বলেছেন। তবে অধিনায়কত্ব প্রসঙ্গে বাবর তাঁর বাবার পরামর্শই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেবেন বলে মনে করেন অনেকে। এরই মধ্যে নাকি বাবর যাঁদের পরামর্শ নিয়েছেন, তাদের বেশির ভাগেরই মত বাবরের অধিনায়কত্ব ছাড়ার পক্ষে।

অবশ্য ইংল্যান্ড ম্যাচের আগে বাবর সংবাদসম্মেলনে জানিয়েছেন ভিন্ন কথা, ‘আমি তিন বছর ধরে পাকিস্তানের অধিনায়ক। আমি কখনোই অধিনায়কত্বের চাপ অনুভব করিনি। নেতৃত্বের কোনো চাপ আমার ওপর নেই। লোকে আমার অধিনায়কত্ব নিয়ে কথা বলে। কিন্তু আমি বিশ্বকাপে গড়পড়তা মানের নিচে পারফরম্যান্স করিনি। বিশ্বকাপ শেষ করে পাকিস্তান যাওয়ার পর পিসিবি আমার অধিনায়কত্ব নিয়ে আলোচনা করবে।’

এফআই