সপ্তাহখানেক ধরে আলোচনার কেন্দ্রে আছে শ্রীলঙ্কার অলরাউন্ডার অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের ‘টাইমড আউট’ হওয়ার ঘটনা। এ নিয়ে বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকেও সমালোচনার তিরে বিদ্ধ করতে ছাড়েননি ম্যাথিউস ও সাবেক-বর্তমান ক্রিকেটাররা। এবার বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছে ক্রিকেটের আইন প্রণয়নকারী সংস্থা ম্যারিলবোন ক্রিকেট ক্লাব (এমসিসি)। যেখানে তারা ম্যাথিউসের দাবিকে ‘ভুল’ উল্লেখ করে বাংলাদেশ দল ও আম্পায়ারদের সিদ্ধান্ত সঠিক বলে জানিয়েছে।  

গত ৬ নভেম্বর বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা লড়াইয়ে প্রথমবারের মতো কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচে টাইমড আউট হয়েছিলেন ম্যাথিউস। টাইগার অধিনায়ক সাকিবের আবেদনের ভিত্তিতে ওই আউট দেওয়ার বিষয়টিকে সাবেক ক্রিকেটারদের অনেকে ‘ক্রিকেটীয় স্পিরিট’ নষ্ট হয়েছে বলে দাবি করেন। এজন্য সাকিবের ওপর তোপ দাগতেও ভুল করেননি তারা। এমনকি ওই ঘটনার জন্য বাংলাদেশ দল ও সাকিবের প্রতি আর কোনো সম্মান অবশিষ্ট নেই বলে মন্তব্য করেন ম্যাথিউস।

অথচ এমসিসির আইনের ৪০.১.১ নম্বর ধারা অনুযায়ী, ‘একজন ব্যাটারের আউট হয়ে যাওয়া বা রিটায়ার্ড হার্টের পর যে ব্যাটসম্যান আসবেন, তাকে অথবা অন্য ব্যাটসম্যানকে ৩ মিনিটের মধ্যে বলের মুখোমুখি হওয়ার জন্য প্রস্তুত হতে হবে। অন্যথায় যে ব্যাটসম্যান নামছেন, আউট বলে বিবেচিত হবেন তিনি।’ অবশ্য বিশ্বকাপের প্লেয়িং কন্ডিশন অনুসারে সেই সময়টা আরও কমিয়ে আনে আইসিসি। সেখানে বলা আছে, বিশ্বকাপে ২ মিনিটের মধ্যে পরবর্তী ব্যাটার বল মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। ম্যাথিউস এদিন অতিক্রম করে গেছেন দুটিই। যার ফলে, বাংলাদেশের আবেদনের প্রেক্ষিতে তাকে আউট দেন আম্পায়াররা। 

বিষয়টি নিয়ে আজ (শনিবার) এক বিবৃতিতে এমসিসি বলছে, ‘আম্পায়ারদের যদি দুই মিনিট সময়ের মধ্যে ন্যায়সঙ্গত কারণ দেখিয়ে বিলম্বের বিষয়টি জানানো হতো, তবে তারা (আম্পায়ার) এটিকে একটি নতুন ধরনের বিলম্ব হিসেবে বিবেচনা করতে পারতেন (উদাহরণস্বরূপ– ব্যাট ভেঙে গেলে, আরেকটি ব্যাটের জন্য আবেদন করা)। সেক্ষেত্রে ব্যাটারের টাইম-আউট হওয়ার ঝুঁকি থাকত না এবং বিষয়টির সঠিক সমাধানও মিলত। যাইহোক, এটা মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে— উভয় আম্পায়ারই দুই মিনিট অতিবাহিত হওয়ার পরে বিলম্বের বিষয়টি নির্ধারণ করেছিলেন এবং সেই সময়ের আগে নতুন হেলমেটের জন্য আবেদন করা হয়নি।’

অতিরিক্ত হেলমেট চাওয়ার আগে দুই মিনিটেরও কম সময় নিয়েছিলেন বলে দাবি করেছিলেন ম্যাথিউস। এমনকি ক্ষুব্ধ ম্যাথিউস পরে সামাজিক মাধ্যমে একটি ‘ভিডিও প্রমাণ’ও দেন। যেখানে তিনি প্রমাণ করার চেষ্টা করেন যে, তার স্ট্রাইক নিতে ‘আরও ৫ সেকেন্ড’ সময় বাকি ছিল। সাদিরা সামারাবিক্রমার আউট হওয়ার সঠিক সময় এবং ক্রিজে তার আগমনের একটি স্ক্রিনশট শেয়ার করে ম্যাথিউস অভিযোগ করেন— ‘হিসাব দেওয়ার ক্ষেত্রে চতুর্থ আম্পায়ার ভুল ছিলেন।’

তবে এমসিসির মতে, ‘আম্পায়াররা যথাযথভাবেই ম্যাথিউসকে আউট দিয়েছেন’। তারা মিনিটের বিশদ বিবরণ তুলে ধরে এর ব্যাখ্যা দিয়েছে, যার মধ্যে ৩৬ বছর বয়সী তারকার ক্রিজে আসা থেকে তাঁর হেলমেট ত্রুটির মুহূর্তও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এমসিসি দাবি করেছে, ‘৩০ গজ বৃত্তে পৌঁছাতে ৯০ সেকেন্ডের বেশি সময় নেওয়ার পরও, ম্যাথিউস লক্ষ্য করেছিলেন যে তিনি সময় কম নিয়েছেন। এরপর শেষ কয়েক গজ উইকেটে জগিংও করেছেন লঙ্কান ব্যাটার। আগের উইকেট পড়ে যাওয়ার ১ মিনিট ৫৪ সেকেন্ড পরে তার হেলমেটে ত্রুটি দেখা যায়। ওই সময়ও তিনি স্ট্রাইক নেওয়ার মতো অবস্থায় ছিলেন না।’

এএইচএস