বিশ্বকাপের মাঝেই চলছে অন্য এক লড়াই। দু’বছর পর পাকিস্তানের মাটিতে বসছে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আসর। আসন্ন টুর্নামেন্টটিতে যোগ্যতা অর্জন করতে হলে চলতি বিশ্বকাপে লিগ পর্বে প্রথম আট দলের মধ্যে থাকতে হবে। ২০২৫ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ৫০ ওভারের ক্রিকেটেই হওয়ার কথা। কিন্তু বেঁকে বসেছে সম্প্রচারকারী সংস্থা ডিজনি স্টার।

তাদের প্রস্তাব, ওয়ানডের বদলে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটেই হোক মর্যাদার এই টুর্নামেন্ট। এক প্রতিবেদনে এমনটাই দাবি ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের।

২০২১ সালে নির্ধারণ করা হয়েছিল, ভারত বিশ্বকাপই হবে ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির যোগ্যতা অর্জনের মাপকাঠি। যদিও দলগুলো বিষয়টি জানতে পারে চলতি বিশ্বকাপের মাঝপথে। আর তাই প্রথমদিকে পিছিয়ে পড়া দলগুলো চাপে পড়ে গেছে অনেকটাই। যেমন বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড এবারের বিশ্বকাপে লিগ তালিকায় তলানিতে ছিল। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে যোগ্যতা অর্জন করতে হলে সেরা আটের মধ্যে থাকতে হবে। তাই ইংল্যান্ড এখনও অনিশ্চিত। এছাড়া সেমিফাইনালের দৌড় থেকে ছিটকে গেলেও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্য লড়ছে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও নেদারল্যান্ডসের মতো দলগুলো। 

ইংল্যান্ডের সংবাদমাধ্যম ‘দ্য গার্ডিয়ান’ দাবি করেছে, ভারতের সম্প্রচারকারী সংস্থা ডিজনি স্টার আসন্ন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে চাইছে। সেটার বড় কারণ হিসেবে তারা সামনে এনেছে আগামী বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। সেই প্রতিযোগিতাটি হওয়ার কথা রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র এবং ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে। জুন মাসের সেই টুর্নামেন্টের খেলা যে সময় হবে, তা উপমহাদেশের দর্শক টানার পক্ষে সুখকর নয়।

কারণ আমেরিকা এবং ভারতীয় উপমহাদেশের সময়ের ব্যবধান অনেকটাই। তাই ওখানে সকালে খেলা হলেও ভারত ও আশেপাশের দেশে সেই ম্যাচ শেষ হতে অনেক রাত হয়ে যাবে। আর তাতে ক্ষতি হবে সম্প্রচারকারী সংস্থার। তাই তারা চাইছে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে হোক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট। যে প্রতিযোগিতা হওয়ার কথা পাকিস্তানে।

অবশ্য সম্প্রচারকারী সংস্থার চাওয়াতে ফরম্যাট বদলেও সমস্যা হতে পারে। কারণ একদিনের বিশ্বকাপ হচ্ছে ৫০ ওভারে। সেখান থেকে যোগ্যতা অর্জন করে দলগুলোকে টি-টোয়েন্টি খেলতে বললে সমস্যা তৈরি হতে পারে। সুযোগ না পাওয়া দলগুলো প্রতিবাদ করতে পারে। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ওয়ানডে ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নিয়েও।

এবারের বিশ্বকাপের শুরুর দিকে মাঠে দর্শকখরা ছিল চোখে পড়ার মতো। যা আয়োজক বিসিসিআইয়ের চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছিল। ভারতের ম্যাচেও ফাঁকা আসন দেখা গিয়েছিল। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি হওয়ার কথা ২০২৫ এবং ২০২৯ সালে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হবে দু’বছর অন্তর। এ ছাড়া ২০২৮ সালে অলিম্পিকেও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট হবে। এমন অবস্থায় একদিনের ক্রিকেট নিয়ে কতটা আগ্রহ থাকবে তা সত্যিই চিন্তার।

২০২৭ এবং ২০৩১ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপের সম্প্রচারস্বত্ব ইতোমধ্যে বিক্রি হয়ে গেছে। সেই প্রতিযোগিতা নিয়েও আগামী দিনে প্রশ্ন তুলতে পারে সম্প্রচারকারী সংস্থাগুলো। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট নিয়েই আগ্রহ তুঙ্গে। তাই সেই ধরনের ক্রিকেটই বেশি আয়োজন হোক চাইছে সংস্থাগুলো।

এফআই