আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রায় হারতে বসা ম্যাচে অপরাজিত ২০১ রানের ইনিংসে দলকে অবিস্মরণীয় এক জয় উপহার দেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। অপ্রত্যাশিত সেই তিন উইকেটের জয়ে বিশ্বকাপের তৃতীয় দল হিসেবে সেমিফাইনালও নিশ্চিত করে অস্ট্রেলিয়া। অজি এই অলরাউন্ডারের ইনিংসটি ইতোমধ্যে ওয়ানডে ইতিহাসে সর্বকালের অন্যতম সেরা ইনিংসের তকমা পেয়েছে। 

আফগানিস্তানের বিপক্ষে মহাকাব্যিক ইনিংসটির এক পর্যায়ে পেশীর টানে মাটিতে শুয়ে পড়েছিলেন ম্যাক্সওয়েল। কিন্তু দলের কথা বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিয়ে আবারও উঠে দাঁড়ান। আগামীকাল বাংলাদেশের বিপক্ষে কার্যত নিয়মরক্ষার ম্যাচেও ম্যাক্সওয়েল খেলবেন বলে আশা করছেন পেসার জস হ্যাজলউড।

শেষ চারে দক্ষিণ আফ্রিকার মোকাবিলা করবে পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নরা। ফলে পুনেতে বাংলাদেশের ম্যাচটি আনুষ্ঠানিকতার ম্যাচে পরিণত হয়েছে। তবে হ্যাজলউড মনে করেন ম্যাক্সওয়েল এখনো ওই ম্যাচে খেলার উপযুক্ত। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘হ্যাঁ, আমি অন্তত তাই মনে করি। আমার মনে হয় না এখন এবং আগামী কয়েকদিন তার বেশী কিছু করার প্রয়োজন আছে। সুতরাং আশা করছি অচিরেই ঠিক হয়ে যাবেন তিনি (ম্যাক্সওয়েল)।’

মঙ্গলবার ১২৮ বলে অপরাজিত ২০১ রান করা ম্যাক্সওয়েল ম্যাচ শেষে বলেন, ১৪৭ রানে যখন তিনি ক্রিজে ছিলেন তখন জয়ের জন্য আরও ৫৫ রান বাকি ছিল অস্ট্রেলিয়ার। ওই সময়টি ছিল অনেক কঠিন, ব্যথায় মাটিতে শুয়ে পড়েন ম্যাক্সওয়েল। দলীয় ফিজিও নিক জোনস ওই সময় ম্যাক্সওয়েলকে ফিরে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। 

তিনি ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার ওয়েবসাইটকে বলেন, ‘ক্রমেই তিনি নেতিয়ে পড়ছিলেন। মৃত মানুষের মতো শুয়ে ছিলেন। সেখানে গিয়ে আমি দেখলাম তার ডান পায়ের কাফের পেশীতে টান লাগছিল। পায়ের আঙ্গুল অসার হয়ে আসছিল। যে কারণে পাঁজর ও দুই পায়ের নীচের দিকে কোনো শক্তি পাচ্ছিলেন না। ওই সময় বাম হ্যামস্ট্রিংয়েও টান পড়ে। শুরু হয় পিঠের ব্যথা।’

মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়েতে আফগানদের দেওয়া ২৯২ রান তাড়া করতে নেমে ৯১ রানেই ৭ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল অস্ট্রেলিয়া। ৩৩ রানের মাথায় জীবন পান ম্যাক্সওয়েল। নুর আহমেদের বলে সুইপ খেলতে গিয়ে বল তুলে দেন আকাশে। ফাইন লেগে সহজ ক্যাচ হাতে জমাতে ব্যর্থ হন মুজিব। পরে আফগান বোলারদের ওপর চড়াও হয়ে তাণ্ডবলীলা চালান ম্যাক্সওয়েল।

প্যাট কামিন্সের সঙ্গে ৮ম উইকেটে অবিচ্ছিন্ন ২০২ রানের জুটি গড়ে দলকে এনে দেন অবিশ্বাস্য এক জয়। জয়ের জন্য অস্ট্রেলিয়ার দরকার যখন ২৩ বলে ২১ রান, দ্বিশতকের জন্য ম্যাক্সওয়েলেরও প্রয়োজন ছিল ২১। মুজিবের টানা চার বলে ছক্কা-ছক্কা-চারে দলকে কাঙ্ক্ষিত ঠিকানায় পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি অনেকগুলো মাইলফলক স্পর্শ করেন ৩৫ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান। 

এফআই