আগামী ১৬ নভেম্বর অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে বিশ্বকাপ ফুটবল বাছাই ম্যাচ বাংলাদেশের। সেই ম্যাচ দেখতে ফুটবলসংশ্লিষ্ট ২২ জন আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। সেই আগ্রহের প্রেক্ষিতে তাদের অনুকূলে অস্ট্রেলিয়ান ফুটবল ফেডারেশন থেকে একটি আমন্ত্রণপত্র এনেছে বাফুফে। এ নিয়ে গণমাধ্যম ও ক্রীড়াঙ্গনে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। 

গত তিন দিন ধরে এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চললেও বাফুফে আনুষ্ঠানিক কোনা বক্তব্য দেয়নি। আজ দুপুর তিনটার দিকে এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করার পরিকল্পনা ছিল ফুটবল ফেডারেশন সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের। পরবর্তীতে অবশ্য সংবাদ সম্মেলন বাতিল করে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে বাফুফে। 

সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষার স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বাফুফে উল্লেখ করেছে, ‘খেলোয়াড়, কোচিং স্টাফ, ম্যানেজারসহ দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত শুধু ৩৩ জনের ব্যয় ফুটবল ফেডারেশন বহন করছে। এর বাইরে অন্য কারো ব্যয় ফুটবল ফেডারেশন বহন করবে না। ফুটবলসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ,ফুটবল সমর্থক, ও সাংবাদিকবৃন্দের ভিসা প্রাপ্তিতে বাফুফে শুধু আমন্ত্রণপত্র প্রাপ্তিতে সহযোগিতা করে থাকে। এ সংক্রান্ত বিষয়ে বাফুফের কোনো দায়-দায়িত্ব বা আর্থিক সংশ্লিষ্টতা নেই। ভিসা প্রাপ্তির বিষয়টি সম্পূর্ণ সংশ্লিষ্ট দূতাবাসের এখতিয়ারভুক্ত, যা বাফুফের কোনো হস্তক্ষেপ নেই।’

সাবেক ফুটবলার ও ফেডারেশনের অনেক কর্মকর্তা দেশের মধ্যে খেলায় অনুপস্থিত থাকলেও পয়সা খরচ করে দেশের বাইরে দলের সঙ্গে যান অনেক ক্ষেত্রে। ২০১৫ সালে অস্ট্রেলিয়ার পার্থেই বিশ্বকাপ বাছাই দেখতে গিয়েছিলেন অনেকে। তাই আমন্ত্রণপত্র পাওয়া ফুটবলসংশ্লিষ্টদের অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার সক্ষমতা থাকলেও সঙ্গে একজনের ছেলে এবং ভাতিজার নাম রাখায় সমালোচনায় রয়েছে।

তবে সব ছাপিয়ে গেছে বাফুফে নির্বাহী সদস্য ও জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ইলিয়াস হোসেনের এক টেলিভিশন চ্যানেলে এই সফর নিয়ে করা মন্তব্যে। যা নিয়ে বিব্রত ও ক্ষুব্ধ খোদ ফেডারেশনের অনেকেই। ইলিয়াস বিশ্বকাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষগুলোর নাম বলতে তো পারেননি এবং তাদের সফরকেও প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন,‌‌ ' ২০২৪ সালে নির্বাচন আছে। সেই ক্ষেত্রে কোনো ডিএফএ'র প্রেসিডেন্ট যদি আগ্রহ প্রকাশ করে ফুটবল ফেডারেশন তাকে সহযোগিতা করার জন্য প্রস্তুত থাকবে। ' 

ইলিয়াসের এমন বেফাঁস মন্তব্যে ফেডারেশন বেশ বিপাকেই পড়েছে। নির্বাহী কমিটির আরো অনেকেই নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হয়ে বলেন, ‘তার মতো জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারপ্রাপ্ত ফুটবলার এবং এক দশক ফেডারেশনের কমিটিতে থেকে এমন মন্তব্য কোনোভাবেই কাম্য নয়। ফেডারেশনকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলেছেন তিনি।’

বাফুফের দুই সহ-সভাপতি ইমরুল হাসান, মহিউদ্দিন আহমেদ মহী, সদস্য মহিদুর রহমান মিরাজকে বাফুফের এই মেয়াদেই শোকজ করা হয়েছে পৃথক পৃথক ঘটনায়। এমন মন্তব্যের পর ইলিয়াসকে শোকজ কেন করা হচ্ছে না এ নিয়ে বিস্ময় ফেডারেশনের একাংশের। শুধু ফেডারেশন নয় সাবেক ফুটবলারদের সংগঠন সোনালী অতীত ক্লাবও ক্ষুব্ধ ইলিয়াসের এমন আচরণে। অনেক সাবেক ফুটবলারই ইলিয়াসের সফর নিয়ে করা মন্তব্যে অত্যন্ত লজ্জিত এবং সোনালী অতীত ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন বলে মনে করছেন। 

এজেড/এফআই