বিশ্বকাপজুড়ে একের পর এক ইনজুরিতে ‘হাসপাতালে’ পরিণত হয়েছিল শ্রীলঙ্কা। এর ভেতর মরার ওপর খাড়ার ঘা হিসেবে আসে ভারতের বিপক্ষে বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩০২ রানের ব্যবধানে হার। ম্যাচটিতে লঙ্কানরা মাত্র ৫৫ রানেই অলআউট হয়ে যায়। এরপর থেকে লঙ্কান ক্রিকেটার, কোচিং স্টাফ ও নির্বাচকদের নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়। এরই মাঝে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ডের (এসএলসি) সেক্রেটারি মোহন ডি সিলভা পদত্যাগ করেছেন।

আজ (শনিবার) নির্দিষ্ট কোনো কারণ উল্লেখ না করেই পদত্যাগের ঘোষণা দেন এসএলসি সেক্রেটারি। ধারণা করা হচ্ছে, দলের ব্যর্থতার কারণেই তিনি সরে দাঁড়িয়েছেন। এর আগে গতকাল (শুক্রবার) এক বিবৃতিতে দেশটির ক্রীড়ামন্ত্রী রোশান ফার্নান্দো ব্যর্থতার দায়ভার নিয়ে বোর্ডে দায়িত্বরতদের সরে যাওয়ার আহবান জানিয়েছিলেন।

কেবল তাই নয়, এর আগে দেশের শীর্ষ ক্রিকেট প্রশাসকদের ‘বিশ্বাসঘাতক ও দুর্নীতিপরায়ণ’ বলে অভিযুক্ত করেছিলেন ক্রীড়ামন্ত্রী। সর্বশেষ দেওয়া বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট অফিশিয়ালদের পদে থাকার কোনো নৈতিক অধিকার নেই। তাদের স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করা উচিৎ।’ 

গত শুক্রবার এসএলসি শ্রীলঙ্কার কোচিং স্টাফ-নির্বাচকদের শোকজ করে একটি নোটিশ পাঠায়। যেখানে কুশল মেন্ডিসের দলের লজ্জাজনক পারফরম্যান্সে উদ্বেগ ও হতাশা প্রকাশ করেছে ক্রিকেট বোর্ড। বিশেষ করে তারা ভারতের বিপক্ষে ঘটা শোচনীয় হারের জন্য কোচিং স্টাফ ও নির্বাচকদের কাছে যথাযথ ব্যাখ্যা চেয়েছে। এসএলসি’র পাঠানো প্রেস রিলিজ থেকে জানা যায়, দল গঠনে কখনো হস্তক্ষেপ করে না এসএলসি ম্যানেজমেন্ট। তারা স্বাধীনভাবে কোচিং স্টাফ ও নির্বাচকদের কাজ করার সুযোগ দিয়ে আসছে। তারপরও বিশ্বকাপের মতো একটি মর্যাদাপূর্ণ আসরে শ্রীলঙ্কা দলের এমন ভরাডুবির কারণ এবং তা থেকে উত্তোরণের ব্যাখ্যা দিতে হবে।

এদিকে, বছরখানেক ধরেই বোর্ডের সঙ্গে ক্রীড়ামন্ত্রীর দ্বন্দ্ব চরমে। এর কারণ গত বছরের অস্ট্রেলিয়ায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, লঙ্কা প্রিমিয়ার লিগ ও অন্যান্য ঘরোয়া টুর্নামেন্টের আর্থিক বিষয়াদি। ক্রীড়ামন্ত্রীর সমালোচনার জবাবে পাল্টা জবাব দিচ্ছিলেন শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ড অফিশিয়ালরাও। তবে এবার বিশ্বকাপ দলের বাজে পারফরম্যান্সের কারণে পরিস্থিতি বদলে যায়।

শ্রীলঙ্কার ক্রীড়া আইন অনুযায়ী, অন্য খেলার মতো ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অধীনেই থাকবে এসএলসি। কিন্তু আইসিসির নিয়ম বলছে— বোর্ডে কোনো হস্তক্ষেপ থাকতে পারবে না দেশের সরকার। সে কারণে চাইলেও খুব একটা প্রভাব দেখাতে পারে না মন্ত্রণালয়। ২০১৪ সালে নির্বাচিত বোর্ড ভেঙে অন্তর্বর্তীকালীন এক কমিটি গড়েছিল শ্রীলঙ্কা সরকার। তখন আইসিসি শ্রীলঙ্কার প্রাপ্য অর্থ প্রদান স্থগিত করেছিল। চলতি বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার অবস্থান ৭ নম্বরে। ৭ ম্যাচের মধ্যে তারা জিতেছে মাত্র দুটিতে, হেরেছে বাকি ৫ ম্যাচ।

এএইচএস