বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ছিলেন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পরিচালক (অর্থ) মো. সাইদুর রশিদ। হকি ফেডারেশনের নির্বাচনকালে তার আচার-আচরণ এবং কর্মকান্ড অনেক প্রশ্নের সৃষ্টি করে। সেই পরিচালক সাইদুর রশিদকে অবশেষে সাময়িক দায়িত্ব অব্যাহতি এবং শোকজ প্রদান করেছে।

পরিচালক সাইদুর রশিদের আচার-আচরণ নিয়ে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের আলোচনা-সমালোচনা ছিল অনেক। সম্প্রতি ২৭ সেপ্টেম্বর পরিষদের মাসিক সমন্বয় সভায় ডাক্তার নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি প্রশাসন শাখার কর্মচারীর বিরুদ্ধে উচ্চস্বরে অপেশাদারসুলভ এবং আপত্তিকর মন্তব্য করেন। তার এই আচরণ জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে কর্মচারী এবং কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করে। আচার-আচরণের পাশাপাশি কর্মস্থলে অনুপস্থিতিতেও অসঙ্গতি ধরা পড়েছে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিতে। অনুমতি ছাড়াই জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের চলমান প্রকল্প কাজ দেখার নাম করে অনুপস্থিত থাকেন তিনি। ২৬ অক্টোবরও অনুমতি ছাড়াই তিনি বিশ্বব্যাংকের একটি কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন। 

সরকারি চাকরি বিধির ধারা উল্লেখ করে এই দু’টি বিষয়ে কারণ দর্শানোর চিঠি দেওয়া হয়েছে পরিচালক (অর্থ) সাইদুর রশিদকে। ২৯ অক্টোবর জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব পরিমল সিংহ স্বাক্ষরিত শোকজ চিঠিতে সাত কর্ম দিবসের মধ্যে জবাব দিতে হবে। শোকজের জবাব পাওয়া এবং এই সংক্রান্ত বিষয়ে সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত সাইদুর রশিদকে পরিচালক পদ থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। শোকজ প্রদানের দিন থেকেই আলাদা এক সার্কুলার জারি করেছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। যেখানে আপদকালীন সময়ে পরিচালক পরিকল্পনা ও উন্নয়ন শামসুল আলম অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। ৩১ অক্টোবর শামসুল আলমকে পরিচালকের দায়িত্বও হস্তান্তর করেছেন সাইদুর রশিদ। ফলে এখন থেকে শামসুল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের চেকে স্বাক্ষর করতে পারবেন।

দেশের ক্রীড়াঙ্গনের অন্যতম নিয়ন্ত্রক সংস্থা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি)। সরকারি এই প্রতিষ্ঠান দেশের ফেডারেশন, জেলা-বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থাগুলোকে তদারকি করে। এনএসসির চেয়ারম্যান যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী, ভাইস চেয়ারম্যান ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সচিবের অধীনে কাজ করেন চার পরিচালক (পরিকল্পনা উন্নয়ন, অর্থ, প্রশাসন ও ক্রীড়া)। এই পরিচালকরা সাধারণত উপসচিব-যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার হন। পরিচালকদের মেয়াদ সাধারণত ৩ বছর। অনেক সময় এর কম-বেশি সময়ের ব্যবধানে তাদের বদলি এবং পদোন্নতি ঘটে। তবে কোনো পরিচালককে শোকজ করে সাময়িক অব্যাহতির ঘটনা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে বেশ বিরলই! 

এজেড/এএইচএস