ভারতের মাটিতে চলমান বিশ্বকাপ যেন ‘অপয়া’ হয়ে এসেছে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের জন্য। ফুটবল বিশ্বকাপে একটি বিষয় খুব পরিচিত, তা হলো— আগের আসরের চ্যাম্পিয়ন দলটি পরবর্তী  বিশ্বকাপের গ্রুপপর্ব কিংবা অল্প সময়ের ব্যবধানেই বিদায় নেওয়া। সেই পরিস্থিতি কি এবার ক্রিকেটেও ফিরিয়েছেন জস বাটলাররা? টানা তৃতীয় হারে তারা চলতি বিশ্বকাপ থেকে বিদায়ের শঙ্কায় পড়েছে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আজ সবশেষ ম্যাচে ইংলিশরা হেরেছে ৮ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে।

এদিন বেশ কয়েকটি লজ্জার রেকর্ড গড়েছে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। বেঙ্গালুরুর এম চিন্নস্বামী স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করতে নেমে বাটলার-স্টোকসরা মাত্র ১৫৬ রানেই গুটিয়ে যায়। যা এই ভেন্যুতে ওয়ানডে ফরম্যাটের সর্বনিম্ন দলীয় সংগ্রহ। এ নিয়ে পরপর দুই ম্যাচেই দুইশ রানও করতে পারেনি ইংল্যান্ড। আগের ম্যাচে মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়েতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তারা অলআউট হয়েছিল ১৭০ রানে।

এর আগে এই মাঠে সবচেয়ে কম রানের দলীয় ইনিংস ছিল ভারতের। ২০০৮ সালে এই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে ২২ ওভারে ৪ উইকেটে ১৬৬ রান তুলেছিল স্বাগতিক দলটি। বৃষ্টি আইনে অবশ্য সেই ম্যাচে জয় পেয়েছিল ভারত। এছাড়া সবচেয়ে কম রানে অলআউট হওয়ার নজিরও ভারতের দখলে ছিল। ১৯৯৯ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৬৮ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল তারা।

লঙ্কানরা আজ ইংলিশদের হারিয়ে বিশ্বকাপের দ্বিতীয় জয় পেল। বিপরীতে এ নিয়ে বিশ্বকাপের টানা পাঁচ আসরেই লঙ্কানদের কাছে হেরেছে ইংল্যান্ড। আগের আসরেও (২০১৯) ঘরের মাঠে বাটলাররা শ্রীলঙ্কার কাছে হেরেছিল ২০ রানে। এছাড়া ২০১৫ বিশ্বকাপে ৯ উইকেট, ২০১১ আসরে ১০ উইকেট এবং ২০০৭ সালেও তাদের লজ্জায় ডুবিয়ে ২ রানে জিতে নিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। অথচ এর আগে বিশ্বকাপে দু’দলের মুখোমুখি দেখায় ইংল্যান্ড ৬-১ ব্যবধানে এগিয়ে ছিল। শ্রীলঙ্কা বিশ্বকাপে তাদের বিপক্ষে প্রথম জয় পায় ১৯৯৬ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে।

নিজেদের বিশ্বকাপ ইতিহাসে আরেকটি লজ্জার নজির গড়েছে ইংল্যান্ড। ১৯৯৬ আসরের পর তারা কোনো বিশ্বকাপেই টানা তিন ম্যাচে হারেনি। এবার আফগানিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা ও শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে হ্যাটট্রিক করেছে তারা। চলতি আসরে ইংল্যান্ড এখন পর্যন্ত পাঁচ ম্যাচের মধ্যে মাত্র একটিতে জয়ের স্বাদ পেয়েছে। তাদের সেই জয়টি এসেছিল বাংলাদেশের বিপক্ষে। এর আগে বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে আগের আসরের রানার্স-আপ নিউজিল্যান্ডের কাছে শোচনীয় হার দিয়ে তারা যাত্রা শুরু করেছিল।

বেঙ্গালুরুতে আজ ইংল্যান্ডের দেওয়া ১৫৭ রানের জবাবে শুরুতে দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে গিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। অবশ্য এরপর ১৩৭ রানের জুটিতে বাকি পথ সামলেছেন পাথুম নিশাঙ্কা ও সাদিরা সামারাবিক্রমা। দুজনের জোড়া ফিফটিতে বিশ্বকাপে লঙ্কানরা পেয়ে গেছে তৃতীয় সর্বোচ্চ রানের জুটি। এটি তৃতীয় উইকেট জুটিতে বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার সর্বোচ্চ। প্রথম উইকেট জুটিতে সর্বোচ্চ ২৩১ রান করেছিলেন তিলেকারত্নে দিলশান ও উপুল থারাঙ্গা (২০১১)। ২০১৫ আসরে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে কুমার সাঙ্গাকারা ও লাহিরু থিরিমান্নে মিলে সর্বোচ্চ ২১২ রান করেছিলেন।

এএইচএস