উকেটে বোলারদের জন্য বাড়তি কিছুই ছিল না, রীতিমতো চোখ বন্ধ করে রান তুলেছেন প্রোটিয়া ব্যাটাররা! অথচ একই উইকেটে খেলতে নেমে বাংলাদেশি ব্যাটারদের রীতিমতো ছেড়ে দে মা, কেঁদে বাচি অবস্থা! শান্ত-সাকিবরা যেভাবে উইকেট বিলিয়েছেন, সেই দৃশ্যকে দৃষ্টিকটু বলা ছাড়া উপায় নেই! উইকেট বিলানোর প্রতিযোগিতায় একমাত্র ব্যতিক্রম ছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে একাই লড়ছেন এই মিডল অর্ডার ব্যাটার। তিনি সেঞ্চুরি হাঁকিয়েও দলকে হার থেকে রক্ষা করতে পারেননি।

বাংলাদেশ- ২৩৩/১০ (৪৬.৪ ওভার)

 

মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) ওয়াংখেড়েতে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ৩৮২ রান তুলে দক্ষিণ আফ্রিকা। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ১৭৪ রান করেছেন ডি কক। বাংলাদেশের হয়ে ২ উইকেট শিকার করে ইনিংসের সেরা বোলার হাসান মাহমুদ। জবাবে খেলতে নেমে ৪৬ ওভার ৪ বলে সবকটি উইকেট হারিয়ে ২৩৩ রানে থেমেছে বাংলাদেশ। সর্বোচ্চ ১১১ রান এসেছে মাহমুদউল্লাহর ব্যাট থেকে।

ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে মাহমুদউল্লাহর সেঞ্চুরি

বড় লক্ষ্য তাড়ায় তাসের ঘরের মতো ভেঙে গেছে বাংলাদেশি ব্যাটিং লাইনআপ। শান্ত-সাকিবদের আসা-যাওয়ার মধ্যেও এক প্রান্ত আগলে রেখেছেন মাহমুদউল্লাহ। রীতিমতো ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে একাই লড়ছেন এই মিডল অর্ডার ব্যাটার। ইতোমধ্যেই ব্যক্তিগত সেঞ্চুরির দেখাও পেয়েছেন তিনি। তিন অঙ্কে পৌঁছাতে তিনি খরচ করেছেন ১০৫ বল।

ফিরলেন নাসুমও

দুই বলে দুই চার মেরে ড্রেসিং রুমের পথ ধরলেন নাসুম আহমেদ। বাউন্সারে পুল করতে গিয়ে ব্যাটের ওপরের কানায় লেগে বোলারের হাতে ফিরতি ক্যাচ দেন নাসুম। ৩ চারে ১৯ বলে ১৯ রান করেছেন নাসুম। তার বিদায়ে ভেঙেছে মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে গড়া ৪১ রানের জুটি।

৫৮ রানে ৫ উইকেট নেই বাংলাদেশের

স্বস্তিতে ছিলেন না মোটেও। সেটি থেকে মুক্তিই পেলেন বলা যায়। কাগিসো রাবাদার সিমের বল ঘুরিয়ে খেলতে গিয়ে মিস করে যান। আম্পায়ার জোয়েল উইলসনের দেওয়া এলবিডব্লুর সিদ্ধান্ত রিভিউ করেও লাভ হয়নি। লিটন আউট ৪৪ বলে ২২ রান করে। বাংলাদেশ পঞ্চম উইকেটটি হারিয়েছে ৫৮ রানে।

বাংলাদেশকে খাদের কিনারায় রেখে ফিরলেন মুশফিক

অফ স্টাম্পের বাইরে শর্ট লেংথের বলে, মুশফিক ফ্ল্যাশ করেছিলেন। সরাসরি ক্যাচ গেছে ডিপ থার্ড ম্যানে। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ৮ রান।

ফিরলেন সাকিবও, ব্যাটিং বিপর্যয়ে বাংলাদেশ

চারে নেমে ব্যর্থ হলেন সাকিব আল হাসান। আগের ওভারে জোড়া উইকেট হারানোর পর এবার অধিনায়ককেও হারালো বাংলাদেশ। লিজার্ড উইলিয়ামসের লেন্থ বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে এই ব্যাটারও ক্যাচ দিয়েছেন উইকেটের পেছনে। ফলে ৩১ রান তুলতেই টপ অর্ডারের তিন ব্যাটারকে হারিয়ে ধুঁকছে টাইগাররা।

শুরুতেই তামিম-শান্তকে হারাল বাংলাদেশ

দেখে-শুনে খেলার পরও বাজে বলে আউট হলেন তামিম। সপ্তম ওভারের প্রথম বলটি লেগ স্টাম্পের বাইরে করেছিলেন জানসেন। খাটো লেন্থের সেই বলে বাউন্ডারি না পাওয়াটাই যেখানে অবাক করা ব্যাপার, সেখানে নিজের উইকেট বিলিয়ে দিলেন তামিম। হাফ পুল, হাফ হুকের মতো শট খেলতে গিয়ে তার গ্লাভসে লেগে বল জমা পড়ে উইকেটকিপারের গ্লাভসে।

এর পরের বলেই ফিরেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। আসর জুড়েই নিজেকে হারিয়ে খোঁজা এই ব্যাটার জানসেনের খাটো লেন্থের বলের সমাধান খোঁজে পাননি!

সাবধানী শুরু বাংলাদেশের

বড় লক্ষ্য তাড়ায় দেখে-শুনে শুরু করলেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার লিটন দাস ও তানজিদ তামিম। কেউই আক্রমণাত্মক কোনো শট খেলেননি। প্রথম ৫ ওভারে ব্যকরণ মেনেই খেলার চেষ্টা করেছেন। তাতে রানের গতি খুব একটা বাড়েনি। ফলে প্রয়োজনীয় রানরেট কেবলই বাড়ছে।

বাংলাদেশকে ৩৮৩ রানের লক্ষ্য দিল প্রোটিয়ারা

ওয়াংখেড়েতে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ৩৮২ রান তুলে দক্ষিণ আফ্রিকা। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ১৭৪ রান করেছেন ডি কক। বাংলাদেশের হয়ে ২ উইকেট শিকার করে ইনিংসের সেরা বোলার হাসান মাহমুদ।

সেঞ্চুরিয়ান ডি কককে থামালেন হাসান

অবশেষে থামলেন ডি কক। নিজের ১৫০তম ওয়ানডে ম্যাচ খেলতে নেমে দেড়শো ছাড়ানো ইনিংস খেললেন তিনি। ৪৬তম ওভারের প্রথম বলে হাসানকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে সীমানায় নাসুমের হাতে ধরা পড়েন। সাজঘরে ফেরারা আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ১৪০ বলে ১৭৪ রান।

এক ওভারে ২২ রান দিলেন সাকিব

সাকিবের ওপর চড়াও হলেন ডি কক। ইনিংসে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে খরুচে ওভারটি এল। ইনিংসের ৪৩তম ওভারে সাকিবকে ২২ রান নিল প্রোটিয়ারা।

ডি ককের সেঞ্চুরি

টানা দুই সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে এবারের আসর শুরু করেছিলেন ডি কক। এরপর ইংল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে রান পাননি। তবে পঞ্চম ম্যাচে এসে ঠিকই আবার রানে ফিরলেন এই ওপেনার। ৪৭ বলে করেছিলেন প্রথম ৫০ রান। পরের ৫০ রান করতে বল খরচ করেছেন ৫৪ বল। সবমিলিয়ে তিন অঙ্ক ছুঁয়েছেন ১০১ বলে। প্রথম প্রোটিয়া ব্যাটার হিসেবে এক আসরে তিন সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়লেন এই উইকেটকিপার ব্যাটার।

জুটি ভাঙলেন সাকিব

ফিফটি করেই রানের গতি বাড়ানোয় মনযোগ দেন মার্করাম। সেটিই কাল হলো তার। ৩১তম ওভারের চতুর্থ বলটি অফ স্টাম্পের বাইরে করেছিলেন সাকিব। সেটা ইনসাইড-আউট করে এক্সটা কভারের ওপর দিয়ে মারতে চেয়েছিলেন মার্করাম, ঠিকমতো টাইমিং না হওয়ায় লং অনে লিটন দাসের হাতে ধরা পড়েন তিনি। সাজঘরে ফেরার আগে প্রোটিয়া অধিনায়কের ব্যাট থেকে এসেছে ৬৯ বলে ৬০ রান।

মার্করামের ফিফটি

৩ রানের ব্যবধানে দুই উইকেট হারানোর পর উইকেটে এসেছিলেন মার্করাম। এমন পরিস্থিতিতে দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ডি ককের সঙ্গে বড় জুটি গড়ে দলকে টেনে তুলছেন এই মিডল অর্ডার ব্যাটার। তুলে নিয়েছেন ব্যক্তিগত ফিফটি। ৫৭ বলে ছুঁয়েছেন এই মাইলফলক।

২১ ওভারে তিন অঙ্কে পা দিল প্রোটিয়ারা

এই মাঠেই আগের ম‍্যাচে ঝড় তোলে ৩৯৯ রান করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে বাংলাদেশের বিপক্ষে শুরুটা হয়েছিল ধীরগতির। যদিও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে গতি বাড়াচ্ছেন তারা। ২১তম ওভারে শতরান স্পর্শ করেছে দক্ষিণ আফ্রিকার।

ডি ককের ফিফটি

দুই ব্যাটার দ্রুত ফিরলেও মার্করামকে সঙ্গে নিয়ে দলকে বড় সংগ্রহের পথেই রেখেছেন ডি কক। ইতোমধ্যেই দুজনে মিলে গড়েছেন অবিচ্ছিন্ন ৫৬ রানের জুটি। ডি কক তুলে নিয়েছেন ব্যক্তিগত হাফ সেঞ্চুরিও। ফিফটি ছুঁতে তিনি খরচ করেছেন ৪৭ বল।

৩ রানেই ২উইকেট নেই প্রোটিয়াদের

তিনে নেমে সুবিধা করতে পারেননি ফন ডার ডুসেন। মিরাজের স্টাম্পের ওপরে করা বল কিছুটা টার্ন করে ডুসেনের পায়ে আঘাত হানে। মিরাজের লেগ বিফোরের আবেদন ফিরিয়ে দেননি আম্পায়ার। ফলে ১ রান করেই বিদায় নিতে হয় ডুসেনকে।

প্রোটিয়া শিবিরে প্রথম আঘাত শরীফুলের 

একবার জীবন পেয়েও বেশি দূর এগোতে পারলেন না হেনড্রিকস। ইনিংসের সপ্তম ওভারের প্রথম বলে এই ওপেনারকে ফিরিয়ে প্রোটিয়া শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন শরিফুল। গুড লেন্থ থেকে খানিকটা ইন সুইং করা বল ব্যাট-প্যাডের ফাঁক গলে উইকেটে আঘাত হানে।

শুরুতেই ক্যাচ ছাড়ল বাংলাদেশ

নতুন বলে ভালোই শুরু করেছে বাংলাদেশ। মুস্তাফিজুর রহমান প্রথম ওভারে একটা বাউন্ডারি হজম করলেও বাকি বলগুলো ভালোই করেছিলেন। পরের ওভারেই স্পিন আক্রমণে যান সাকিব। বল তুলে দেন মেহেদি মিরাজের হাতে। নিজের প্রথম ওভারেই উইকেটের সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন এই ডানহাতি অফ স্পিনার। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের পঞ্চম বলে হেনড্রিকসের ব্যাটের বাইরের দিকের কানায় লেগে বল চলে যায় প্রথম স্লিপে। কিন্তু বল এতটাই দ্রুত যায় যে তানজিদ তামিম হাত তোলার আগেই বল তার কাঁধে আঘাত হানে।

ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ, ফিরলেন সাকিব

চোট কাটিয়ে দলে ফিরেছেন সাকিব আল হাসান। সাকিব ফেরায় একাদশে জায়গা হারিয়েছেন তাওহীদ হৃদয়। মূলত অফফর্মের কারণেই একাদশ থেকে ছিটকে গেলেন এই ব্যাটার। এর আগে টানা ৪ ম্যাচ খেলেও সুবিধা করতে পারেননি তিনি।

বাংলাদেশের নিয়মিত অধিনায়ক ফিরলেও টেম্বা বাভুমাকে ছাড়াই মাঠে নামতে হচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকাকে। নিয়মিত অধিনায়কের অনুপস্থিতিতে গত ম্যাচের মতোই প্রোটিয়াদের নেতৃত্ব দেবেন এইডেন মার্করাম। দক্ষিণ আফ্রিকার একাদশে এসেছে এক পরিবর্তন। লুঙ্গি এনগিদির জায়গা হারিয়েছেন। সুযোগ মিলেছে লিজার্ড উইলিয়ামসের।

বাংলাদেশ একাদশ- লিটন দাস, তানজিদ তামিম, নাজমুল হোসেন শান্ত, মেহেদি হাসান মিরাজ, সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, নাসুম আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম ও হাসান মাহমুদ।

দক্ষিণ আফ্রিকা একাদশ- কুইন্টন ডি কক, রেজা হেনড্রিকস, রাসি ফন ডার ডুসেন, এইডেন মার্করাম (অধিনায়ক), হেনরিখ ক্লাসেন, ডেভিড মিলার, মার্কো জানসেন, জেরাল্ড কোয়েটজে, কেশব মহারাজ, কাগিসো রাবাদা ও লিজার্ড উইলিয়ামস।

 

 এইচজেএস